আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
859 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
recategorized by
গর্ভবতী মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার সময় লিংগ নির্ধারন করা অথবা জানা কি জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রথমেই একটি আয়াত ও হাদীস জেনে নেই।
কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে—
 
إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُ ۥ عِلۡمُ ٱلسَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ ٱلۡغَيۡثَ وَيَعۡلَمُ مَا فِى ٱلۡأَرۡحَامِۖ وَمَا تَدۡرِى نَفۡسٌ۬ مَّاذَا تَڪۡسِبُ غَدً۬اۖ وَمَا تَدۡرِى نَفۡسُۢ بِأَىِّ أَرۡضٍ۬ تَمُوتُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرُۢ 
অর্থঃ "নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছেই কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং মাতৃগর্ভে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে, এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।"
 [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪]
 
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “গায়েবের কুঞ্জি হল পাঁচটি, যা আল্লাহ ব্যতিত কেউ জানে না। কেউ জানে না যে আগামীকাল কী ঘটবে। কেউ জানে না যে মায়ের গর্ভে কী আছে।  কেউ জানে না যে, আগামীকাল সে কী অর্জন করবে।  কেউ জানে না যে, সে কোথায় মারা যাবে। কেউ জানে না যে, কখন বৃষ্টি হবে।” 
(সহীহ বুখারী; খণ্ড ২, অধ্যায় ১৭, হাদিস নং : ১৪৯)
,
অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে ডাক্তাররা এখন জানতে পেরেছে যে, মাতৃগর্ভে কি আছে। বর্তমানে ডাক্তারগণ ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান হওয়া সম্পর্কে যে আগাম খবর প্রদান করে, তা যদি মিথ্যা হয় তাহলে কোনো কথা নেই। আর যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলেও আয়াতের সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

আয়াতটি গায়েবী বিষয় সংক্রান্ত। এখানে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা আল্লাহর জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। তম্মধ্যে মাতৃগর্ভে কি আছে তা একটি। শিশু মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায় গায়েবী বিষয়গুলো হলো সে কত দিন মায়ের পেটে থাকবে, কত দিন দুনিয়াতে বেঁচে থাকবে, কি রকম আমল করবে, সে কতটুকু রিযিক গ্রহণ করবে, সৌভাগ্যবান হবে না দুর্ভাগ্যবান হবে।
,
গঠন পূর্ণ হওয়ার পূর্বে ছেলে না মেয়ে হবে এ সম্পর্কে অবগত হওয়া। আর গঠন পূর্ণ হওয়ার পরে মাতৃগর্ভে ছেলে না মেয়ে এ সম্পর্কে অবগত হওয়া ইলমে গায়েবের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা গঠন পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বিষয়ের জ্ঞানের মতই হয়ে গেল। তবে শিশুটি তিনটি অন্ধকারের ভিতরে লুকায়িত অবস্থায় রয়েছে। যদি অন্ধকারের আবরণগুলো অপসারণ করা হয়, তাহলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। ইহা অসম্ভব নয় যে, আল্লাহর সৃষ্টিসমূহের মধ্যে এমন শক্তিশালী যন্ত্র রয়েছে, যা এ তিনটি অন্ধকার ভেদ করতে সক্ষম। যাতে করে শিশুটি ছেলে না মেয়ে, তা জানা যায়। আর আয়াতে মাতৃগর্ভে ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান হওয়ার জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছে- একথা বলা হয় নি। হাদীসেও এ মর্মে কোনো সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই।
,
 এই আয়াতের কিছু উলামা তাফসীর করেছেন যে, গঠন হওয়ার পূর্বে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না যে, ছেলে হবে না মেয়ে হবে। গঠন পূর্ণ হওয়ার পর আল্লাহ ব্যতীত অন্যরাও জানতে পারে। ইবন কাছীর সূরা লুকমানের আয়াতের তাফসীরে বলেন, মাতৃগর্ভে যা আছে তা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা কি সৃষ্টি করতে চান, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। কিন্তু যখন ছেলে বা মেয়ে হওয়ার কিংবা সৌভাগ্যবান বা দুর্ভাগ্যবান হওয়ার আদেশ দিয়ে দেন, তখন ফিরিশতাগণ এবং অন্যান্য সৃষ্টি জীবেরাও জানে। 
,

আয়াতের মাধ্যমে যদি গঠন প্রণালী পূর্ণ হওয়ার পর ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বাস্তব উপলব্ধির মাধ্যমে তা নির্ণয় করা সম্ভব। আয়াতের মাধ্যমে আমরা বুঝি যে, মাতৃগর্ভের ছোট-বড় যাবতীয় অবস্থা আল্লাহ তা‘আলা বিস্তারিতভাবে অবগত আছেন। মানুষ শুধুমাত্র গঠন পূর্ণ হওয়ার পর ছেলে না মেয়ে এ একটি মাত্র অবস্থা জানতে পারে। আরো অসংখ্য অবস্থা এখনও রহস্যময় রয়ে গেছে।
,
আয়াতের মাধমে যদি সন্তান সৃষ্টির পূর্বের অবস্থা উদ্দেশ্য হয়, তাহলে ডাক্তারদের কথা এবং কুরআনের আয়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ডাক্তাররা সন্তান সৃষ্টির হওয়ার পূর্বে বলতে পারে না যে, ছেলে হবে না মেয়ে হবে।
,
,
★জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের ফতোয়া বিভাগ থেকে প্রকাশিত 143711200002 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে এটি পছন্দনীয় আমল নয়।
,
যদি শুধু মাত্র এই কারনেই আলট্রাসনগ্রাফী করে,তাহলে এর জন্য ছতর খোলা,তারপর বাচ্চার কোন লিঙ্গের সেটি জিজ্ঞাসা করা,এটি  জায়েজ নেই।
,
,
★সুতরাং যদি বাচ্চা,বাচ্চার মা অসুস্থ বা সন্তান অসুস্থ,   মা সন্তানের শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি  সম্পর্কে জানার জন্য এককথায় শরীয়ত সম্মত কারনে গর্ভবতী মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়,তাহলে সেই ছুরতে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করে  বাচ্চা ছেলে না মেয়ে জানা জায়েজ আছে। 
তবে এটি পছন্দনীয় আমল নয়।
না জানাই উত্তম।
,
(কেহ যদি জেনেও নেয়,তাহলে এর উপর শতভাগ বিশ্বাসও করা যাবেনা।)
,
আর যদি বাচ্চা "ছেলে না মেয়ে" শুধু এটা জানার জন্যই গর্ভবতী মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়,তাহলে তাহা নাজায়েজ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...