আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আমার স্বামীর সাথে বিয়ের আগে যখন আমরা একসাথে পড়াশুনা করতাম তখন আমাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তখন মাঝে মাঝে আমাদের বন্ধু বান্ধবীরা আমাদেরকে জামাই বউ বা অমুকের বউ অমুকের জামাই এসব বলে সবার সামনে সম্বোধন করত তখন আমরা এগুলো শুনে খুশি হয়ে জবাব দিতাম। মাঝে মাঝে উনি এসে আমাকে বলতেন আমাদের ছেলে বন্ধুরা সবার সামনে তাকে আমার জামাই বলে ডেকেছে বা আমাদের গ্ৰামের নাম ধরে ওই গ্ৰামের জামাই বলে ডাকত। এগুলো পরে এসে আমাকে বলতেন আমি শুনে হাসতাম এবং ভালোই তো এভাবে বলে জবাব দিতাম। আমাকে ও অনেকে এইরকম সবার সামনে তার বউ বলে ডাকত আমিও পরে তাকে বলতাম আর সে এগুলো শুনে আমার বউ ই তো এগুলো জবাব দিত। কিন্তু সে কখনো আমাকে সবার সামনে নিজ মুখে বউ বলে ডেকেছে কিনা স্পষ্ট মনে পড়ছেনা। জানিনা এগুলো হাসি ঠাট্টার ছলে বিয়ে হয়েছে কি না। আমরা মাঝে মাঝে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক থাকাকালীন আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে দেখা করার জন্য আসত রাতে। তখন আমরা কিছু সময়ের জন্য দেখা করতে গিয়ে সব রকম যিনা করে ফেলেছিলাম। ওই সময় জড়িয়ে ধরা, আমরা একজন আরেকজনের গোপনাঙ্গ স্পর্শ করেছিলাম, সে আমার বুক স্পর্শ এবং মুখ লাগানো সবই করেছিল সহবাস ছাড়া সবরকম যিনা করেছিলাম। কিন্তু আমরা স্বামী স্ত্রীর মতো একসাথে রাত কাটাইনি বিছানায় শুয়েছি তা সামান্য কয়েক মিনিটের জন্য। আমরা কখনো একেবারে সম্পূর্ণ উলঙ্গ ও হইনি সামনা সামনি একজন আরেকজনের নীম্নদেশ ও দেখিনি। যা কিছু হয়েছে সব বসে বসে এবং দাড়িয়ে। আর তা ছিল সবার চোখ ফাকি দিয়ে দেখা করতে গিয়ে শুধু কয়েক ঘন্টার জন্য। আমাদের মধ্যে কোনো সহবাস ও হয়নি। আমাদের মধ্যে ওইরকমই নির্জনবাস হলেও সহবাস হয়নি সুযোগ ছিল আবার সুযোগ ছিলনা কারন যেকোনো সময় কেউ চলে আসতে পারে এইরকম ধরা পড়ার ভয় ছিল। আমরা একে অন্যের বাড়িতে আলাদা থাকতাম। কলেজে একসাথে যাওয়া আসা করতাম বা বেড়াতে যেতাম। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতে আসতে গাড়িতে সামান্য রাত হয়ে যেত। কিন্তু পারিবারিকভাবে প্রবাসে থেকে আমার স্বামীর পক্ষ থেকে উকিল নিয়োগ করে বিয়ের পর আমাদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত নির্জনবাস বা সহবাস দেখা সাক্ষাৎ কিছুই হয়নি শুধু ভিডিও কলে গোফন ছবি আদান প্রদান এই পর্যন্তই ছিল। তার আগেই একদিন ঝগড়া করে আমার স্বামী ভিন্ন ভিন্ন শব্দে তালাক দিয়েছিল। তখন দেখলাম বিয়ের পর সহবাসের আগে ভিন্ন ভিন্ন শব্দে তালাক দিলে একটি তালাক হয় তাই আমরা আবার বিয়ে করলাম। বর্তমানে কিছুদিন আগে স্বামীর কাছে চলে এসেছি। কিন্তু দিন দিন এইসব বিষয়ে জানার পর থেকে ভয়ে মাথা ছিড়ে যাচ্ছে চিৎকার করে কাদতেছি। আমরা কি আর সংসার করতে পারব। নাকি আলাদা হয়ে যাব। আমাদের সাহায্য করুন
by (5 points)
edited by
এইখানে আরেকটা বিষয় লিখতে ভুলে গিয়েছি। আমার পরিবার জানত আমরা রিলেশনে আছি। তাই সে আমাদের বাড়িতে দেখা করতে আসত। তখন কিছু কিছু বন্ধুরা তাকে রাস্তায় পেলে বলত শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিস নাকি তখন সে বলত হ্যা। দেখা করতে এসে আমাদের মধ্যে এগুলো হয়েছে। 
আমরা কখনো সামনাসামনি একজন আরেকজনের নীম্নদেশ দেখিনি তবে কাপড়ের নিচে স্পর্শ করেছি। 
এবং তিনি আমার উপরের অংশ দেখেছেন। সরাসরি স্পর্শ এবং মুখ ও লাগিয়েছেন। কিন্তু সবগুলো হয়েছে দেখা করতে এসে সবার চোখ ফাকি দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে। ভয় থাকত হয়ত হঠাৎ পরিবারের কেউ চলে আসতে পারে। বা কখনো কাউকে না জানিয়ে লুকিয়ে আসত আর তখন এইসব হতো। সহবাস করতে গেলেও যেকোনো সময় কেউ চলে আসতে পারে সেই ভয় থাকত। শেষ পর্যন্ত সহবাস করার ইচ্ছা করলেও আমরা আর করিনি। সে আর পরে এইভাবে আসেনি। সুযোগ থাকলেও ধরা পড়ার ভয় থাকত কারন দরজায় ভিতর থেকে লক সিস্টেম ছিলোনা যখন লুকিয়ে আসত এবং আমরা অন্যসব যিনার কাজ করেছিলাম তখন এমনিতে দরজা কোনো কিছু দিয়ে আটকালেও যেকোনো সময় কেউ এখানে চলে আসতে পারে বা ধরা পড়ে যেতে পারি সেই ভয় ও ছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা কখনোই আর সহবাস করিনি। সে বিদেশে চলে যায়। 

পোষ্ট এর এবং কমেন্টের সমস্ত ঘটনাবলি বিবেচনা করে পূর্বে কোনো বিয়ে হয়েছে কি না এবং আমরা একসাথে থাকাটা বৈধ আছে কিনা তাড়াতাড়ি জানিয়ে সাহায্য করুন শায়েখ। এই ভয় নিয়ে বাঁচতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। 
আমরা আমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে দিন রাত তওবা করে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতেছি।
যা যা বাদ পড়েছিল একেবারে সবকিছুই পোস্ট এবং কমেন্টে লিখে দিয়েছি শায়েখ। 

1 Answer

0 votes
by (680,400 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


সাবিত আল বুনানী (রহ.) হতে বর্ণিত।

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَرْحُومُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مِهْرَانَ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ أَنَسٍ وَعِنْدَه“ ابْنَةٌ لَه“ قَالَ أَنَسٌ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْرِضُ عَلَيْهِ نَفْسَهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَكَ بِي حَاجَةٌ فَقَالَتْ بِنْتُ أَنَسٍ مَا أَقَلَّ حَيَاءَهَا وَا سَوْأَتَاهْ وَا سَوْأَتَاهْ قَالَ هِيَ خَيْرٌ مِنْكِ رَغِبَتْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا.

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ)-এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছিঃ লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারণেই সে নিজেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পেশ করেছে। ( সহীহ বুখারী-৫১২০)

قال في "كشاف القناع" (5/ 37) : "ولا ينعقد النكاح إلا بالإيجاب والقبول ، والإيجاب هو اللفظ الصادر من قِبَل الولي أو من يقوم مقامه كوكيل.

সারমর্মঃ
ইজাব কবুল ব্যাতিত বিবাহ হবেনা।
ইজাব হলো যে শব্দটি অভিভাবক অথবা তার স্থলাভিষিক্ত এর থেকে বের হয়,যেমন উকিল।    

এমন সব শব্দে বিবাহ সংঘটিত হবে। যেমন বলা, (زوجت أو نكحت) আমি বিবাহ করলাম বা বিয়ে দিলাম। অথবা বলা, (قبلت هذا النكاح) আমি এ বিয়ে কবুল করলাম। অথবা (تزوجتها) আমি তাকে বিয়ে করলাম, বা (تزوجت) আমি বিয়ে করলাম, অথবা (رضيت) এ বিয়ে আমি রাজি আছি।

প্রস্তাব (الإيجاب): অলী তথা অভিভাবক অথবা যিনি তার স্থলাভিষিক্ত হবেন তার পক্ষ থেকে বিয়ে করার বা বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া। 

★ কবুল (القبول): স্বামী বা তার স্থলাভিষিক্ত থেকে বিয়ে কবুল করার শব্দ। যেমন বলা, (قبلت) আমি বিয়ে কবুল করলাম বা (رضيت هذا النكاح) এ বিয়ে আমি রাজি আছি বা শুধু কবুল করেছি বলা।

আরো জানুনঃ 

★কোনো মহিলাকে সাক্ষীদের সামনে শুধু বউ বলে ডাকলেই বিবাহ হয়ে যায়না।

বাহরুর রায়েক গ্রন্থে আছেঃ-

وَتَمَامُهُ فِي الْفَصْلِ السَّابِعَ عَشَرَ فِي النِّكَاحِ بِالْكِتَابَةِ مِنْ الْخُلَاصَةِ، وَقَيَّدَ بِالْإِيجَابِ وَالْقَبُولِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَنْعَقِدُ بِالْإِقْرَارِ فَلَوْ قَالَ بِحَضْرَةِ الشُّهُودِ: هِيَ امْرَأَتِي، وَأَنَا زَوْجُهَا، وَقَالَتْ: هُوَ زَوْجِي، وَأَنَا امْرَأَتُهُ لَمْ يَنْعَقِدْ النِّكَاحُ؛ لِأَنَّ الْإِقْرَارَ إظْهَارٌ لِمَا هُوَ ثَابِتٌ، وَلَيْسَ بِإِنْشَاءٍ 
সারমর্মঃ
ইজাব কবুলের সাথে বিবাহকে মুকায়্যাদ করা হয়েছে।কেননা ইজাব কবুল ব্যাতিত বিবাহ শুদ্ধ হয়না।
সুতরাং কেহ যদি সাক্ষীদের সামনে বলে যে সে আমার স্ত্রী আর আমি তার স্বামী,আর মহিলাটিও বলে যে সে আমার স্বামী আর আমি তার স্ত্রী,তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।
কেননা স্বীকারোক্তি বলা হয় যাহা আগে থেকে প্রমানিত, সেটি প্রকাশ করা,নতুন ভাবে কোনো কিছু হওয়া নয়।
(বাহরুর রায়েক-৩/৯০)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো যদি সহবাসের পূর্বেই স্ত্রীকে এক বাক্যে তিন তালাক দেয়,তাহলে তিন তালাক হয়ে যাবে।
তার সাথে আর কোনো ভাবেই ঘর সংসার করা জায়েজ হবেনা।

আর যদি আলাদা আলাদা ভাবে এক তালাক করে দেয়,তাহলে শুধু ১ম তালাক দ্বারাই বায়েন তালাক হয়ে যাবে,পরবর্তী তালাক গুলো হবেনা। 
    
 إذا طلق الرجل امرأته ثلاثا قبل الدخول بها وقعن عليها فإن فرق الطلاق بانت بالأولى ولم تقع الثانية والثالثة

যদি কেউ তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে তিন তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তিন তালাকই তার উপর পতিত হবে।আর যদি বিচ্ছিন্ন ভাবে এক এক করে তিন তালাক দেয়,তাহলে প্রথম তালাক দ্বারাই স্ত্রী বায়েন হয়ে যাবে।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক তার উপর পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৩)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে বন্ধু বান্ধবীরা আপনাদেরকে যে জামাই বউ বা অমুকের বউ অমুকের জামাই এসব বলে সবার সামনে সম্বোধন করতো,এবং এর পরবর্তীতে সেই ছেলেটির আর যাহা কিছু হয়েছে,এর কোনোটি দ্বারাই আপনাদের মাঝে বিয়ে সংগঠিত হয়নি। 

আপনার স্বামীর সাথে বিবাহই এখন পর্যন্ত বলবৎ আছে।
এক্ষেত্রে তিনি যেহেতু খালওয়াতে সহীহাহ হওয়ার আগেই পৃথক পৃথক বাক্যে একাধিকবার তালাক দিয়েছেন,সুতরাং এক্ষেত্রে এক তালাকই পতিত হয়েছে।

এখন পুনরায় বিবাহের দ্বারা আপনাদেএ ঘর সংসার বৈধ হয়ে গিয়েছে।

বিষয়টি আর চিন্তিত হবেননা।
নাজায়েজ কাজ হতে বেঁচে থাকবেন।
এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থাও নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
reshown by
শায়েখ আমরা হানাফি। পোষ্ট এবং কমেন্টের আমার সমস্ত ঘটনার পর আমাদের বর্তমান সংসারটা হালাল আছে তো শায়েখ। শুধু এইটুকু কমেন্ট একটি উত্তর দিয়ে দিন আমি একদম পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারব শায়েখ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...