আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)

১। নিচের হাদিসের ব্যাখ্যা জানতে চাচ্ছি

‘আলী (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি যে, শেষ যামানায় এমন একদল মানুষের আবির্ভাব হবে, যারা হবে কমবয়স্ক এবং যাদের বুদ্ধি হবে স্বল্প। ভাল ভাল কথা বলবে, কিন্তু তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়। তাদের ঈমান গলার নীচে পৌঁছবে না। সুতরাং তোমরা তাদেরকে যেখানে পাও, হত্যা কর। এদের হত্যাকারীর জন্য ক্বিয়ামাতে পুরস্কার রয়েছে। (বুখারী) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৮৮)
 

২। দুনিয়াতে যে যার হক নষ্ট করবে কিয়ামতের দিন তার আমলনামা থেকে নেকি দিয়ে তা আদায় করা হবে বলে এবং যদি নেকি না থাকে তাহলে যার হক নষ্ট করেছে তার গুনাহ যে হক নষ্ট করেছে তার ঘাড়ে দিয়ে দেয়া হবে বলে জানি (আল্লাহই ভালো জানেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যে বদনজর দেয় এবং যার উপর দেয় তার বিষয়টাও কি এরকম হবে? কারণ, যার উপর বদনজর দেয় তার তো এর উপর কোন হাত নেই। আর, বদনজরের কারণে যদি তার ইবাদতে (যার উপর বদনজর দেয়া হয়েছে) ব্যাঘাত ঘটে তাহলে তার কি গুনাহ হবে? (যেমন- বদনজরের ফলে গ্যাসের সমস্যার কারণে বার বার বায়ু বের হওয়ার ফলে ইচ্ছে থাকলেও জামাতে সময়মত নামাজ আদায় করতে না পারা)

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «سَيَخْرُجُ قَوْمٌ فِي آخِرِ الزَّمَانِ حُدَّاثُ الْأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الْأَحْلَامِ يَقُولُونَ مِنْ خَيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ لَا يُجَاوِزُ إِيمَانُهُمْ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ فَأَيْنَمَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاقْتُلُوهُمْ فَإِنَّ فِي قَتْلِهِمْ أَجْرًا لمن قَتلهمْ يَوْم الْقِيَامَة»

’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ শীঘ্রই শেষ যুগে এমন কিছু লোকের উদ্ভব ঘটবে যারা হবে তরুণ যুবক এবং নির্বোধ। তারা সমাজে সর্বোত্তম কথা বলবে কিন্তু তাদের ঈমান তাদের গলধঃকরণ হবে না। তারা দীন হতে এমনভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক ভেদ করে বেরিয়ে যায়। অতএব তোমরা তাদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর। কেননা তাদেরকে যারাই হত্যা করবে কিয়ামত দিবসে তারাই পুরস্কৃত হবে।
(বুখারী ৬৯৩০,ইসলামীক ফাউন্ডেশন ৪৬৮৮. মুসলিম ১০৬৬, নাসায়ী ৪১০২, আহমাদ ১০৮৬।)

হাদীসটির ব্যাখ্যা: (حُدَّاثُ الْأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الْأَحْلَامِ) অর্থাৎ বয়সে ছোট এবং দুর্বলবুদ্ধি সম্পন্ন, তথা খাটো বুদ্ধির অল্পবয়স্ক। নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে যে, অল্পবয়স্ক বলতে পরোক্ষভাবে যুবকদেরকে বুঝানো হয়েছে।

(مِنْ خَيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ) এর মমার্থ হলো কোনো বিষয়ের বাহ্যিক দিক। যেমন তাদের কথা (لَا حُكْمَ إِلَّا لِلّٰهِ) অর্থাৎ হুকুমাত একমাত্র আল্লাহর। এর উপমা তাদের ব্যবহৃত আল্লাহর কিতাবের প্রতি আহবান করার ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে। (শারহে মুসলিম ৭ম খন্ড, হাঃ ১০৬৬)

‘আওনুল মা‘বূদে বলা হয়েছে, (مِنْ خَيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ) অর্থাৎ সৃষ্টিজগত যে সব কল্যাণকর কথা বলে। আবার কেউ বলেন- এর অর্থ হলো কুরআন। আবার কোনো পাণ্ডুলিপিতে আছে এর অর্থ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এ হাদীসটিতে খারিজীদেরকে এবং অত্যাচারী বাড়াবাড়িকারীদেরকে হত্যা করার নির্দেশ স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়। এটা ‘আলিমদের ইজমা।

* কাযী বলেনঃ ‘আলিমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, খারিজীরাও এদের ন্যায় বিদ্‘আতী ও বাড়াবাড়িকারী যারা ইমামকে উপেক্ষা করে বের হয়ে যায়, দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ও জামা‘আতের বিরুদ্ধাচরণ করে। তাদেরকে ভীতিপ্রদর্শনের ও কৈফিয়ত তলবের পর হত্যা করা ওয়াজিব। (শারহে মুসলিম ৭ম খন্ড, হাঃ ১০৬৬)

حَنَاجِرَ শব্দটি حَنْجَرَةٌ এর বহুবচন, এর অর্থ হলো হুলকুম বা কণ্ঠনালী। মুযহির বলেনঃ দীন থেকে বের হওয়ার অর্থ হলো ইমামের আনুগত্য থেকে বের হওয়া যা ফরয। নিহায়াতে বলা হয়েছে, এর অর্থ দীনের মধ্যে দাখিল হওয়া ও তা থেকে বের হওয়া। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

(০২)
বদ নিজর দিলে বান্দার হক নষ্টের গুনাহ হবে।
তাই এক্ষেত্রে (যাকে বদনজর দেয়া হয়েছে,তার কাছ থেকে) ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...