আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
আস্সালামুআলাইকুম, আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে প্রচুর মশা এবং এদের জ্বালায় আমরা অতিষ্ট। এরোসল ব্যবহার করার পরও  এদের থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। আর কয়েল ব্যবহার করতে পারি না শ্বাস কষ্টের জন্য।  এখন কি আমি ইলেকট্রিক মশার ব্যাট ব্যবহার করতে পারবো? আমার জানামতে কোনো প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে মারা যায় না কিন্তু  এক্ষেত্রে সরাসরি পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইলেক্ট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে ইলেক্ট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা জায়েজ নেই। কারণ, ইলেক্ট্রিক ব্যাট দ্বারা মশা মারলে মশায় আগুন ধরে পুড়ে যায় এবং এতে মশাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। আর ছোট-বড় কোনো প্রাণিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা জায়েজ নেই। কেননা, আগুন দ্বারা শাস্তি দেওয়া কেবল আল্লাহ তাআলাই করবেন৷ এটা আল্লাহ তাআলার জন্য কেবল সুনির্ধারিত। সুতরাং যেহেতু ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি পুড়ে যায়, তাই এই জাতীয় ব্যাট বা যন্ত্র ব্যবহার করে মশা-মাছি মারা জায়েজ হবে না। (বুখারি, হাদিস : ২/১০২৩; ফাতওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩৬১)

হাদীস শরীফে এসেছে-

أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: إِنَّ النَّارَ لاَ يُعَذِّبُ بِهَا إِلاَّ اللَّهُ.

"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আগুন দ্বারা আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কেউ শাস্তি দিতে পারে না৷" (সহীহ বুখারী: ৩০১৬)

وَرَأَى النبي صلى الله عليه وسلم قَرْيَةَ نَمْلٍ قَدْ حرقها بعض الصحابة بالنار فقال: إِنَّهُ لَا يَنْبَغِي أَنْ يُعَذِّبَ بِالنَّارِ إِلَّا رَبُّ النَّارِ.

"রাসূলুল্লাহ সা, দেখলেন জনৈক সাহাবী পিঁপড়ার বাসা আগুন দ্বারা জ্বালিয়ে দিয়েছেন৷ তখন রাসূল সা, বললেন, আগুনের প্রতিপালক ছাড়া আগুন দ্বারা অন্য কেউ শাস্তি দিতে পারে না৷" (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)

অন্যান্য ইসলামী স্কলারদের মতে এটি জায়েজ আছে। তারা বলেন যে ইলেকট্রিক ব্যাট ইত্যাদির মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মশা-মাছি মারা জায়েজ আছে ইনশাআল্লাহ।

হাদিসে এসেছে, আগুনের মাধ্যমে শাস্তি দিয়ে প্রাণী হত্যা করা হারাম। কিন্তু এ বৈদ্যুতিক মেশিন দ্বারা মশা মারা আর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা এক নয়। কারণ, বৈদ্যুতিক শককে আগুন বলা ঠিক নয়। প্রমাণ হল, এতে যদি একটুকরো কাপড় বা কাগজ রাখা হয় তাতে আগুন লাগবে না। বরং এই যন্ত্রটি মশা-মাছির জীবনীশক্তিকে শুষে নয়। সুতরাং এটা আগুন দিয়ে পোড়ানোর হুকুমের আওতায় আসবে না। অতএব এভাবে মারতে কোন বাধা নেই। (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং-৫১৭৬, উসায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ৫৯/১২)।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/895/

বি:দ্র: প্রথম মতটি অধিক নিরাপদ ও তাকওয়াসমৃদ্ধ। এ কারণে অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম একে অবৈধ বলেছেন।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

ইলেকট্রিক শকের মাধ্যমে মশাকে পুড়িয়ে মারা অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে জায়েয নেই। তবে নিজ হাতে পুড়িয়ে না মেরে স্প্রে, লিকুইড, বিভিন্ন ওষুধ, কয়েল, ইলেকট্রিক কয়েল, ইলেকট্রিক কিলার ল্যাম্প, ইলেকট্রিক মসকিউটো কিলার (কিলার পেস্ট) ইত্যাদি ব্যবহার করে মশা নিধন করা যেতে পারে। কেননা এক্ষেত্রে পুড়িয়ে মারা নয় বরং মরা পাওয়া যাচ্ছে। যা চেরাগ-বাতি ইত্যাদিতে মশা মাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ পড়ে মারা যাওয়ার মত। তবে আপনি যদি এমন জায়গায় অবস্থান করেন যেখানে উপরে উল্লেখিত কোন পদ্ধতিতে মশা নিধন করা সম্ভব না হয় তাহলে অপারগতার সময় ইস্তেগফারের সাথে সর্বশেষ উপায় হিসেবে আত্নরক্ষার জন্য ইলেক্ট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা যেতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 563 views
...