আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in সালাত(Prayer) by (100 points)
আমার হিসাবে ৪০টি কাযা রোজা এখনো আদায় বাকি, আর ১২ দিনের কাযা নামায + ১ মাসের কাযা নামায (ইস্তিহাযা চলছিল,তখন ইস্তিহাযার বিধান জানা ছিল না,হায়েজ ভেবে নামায পড়া হয়নি)

+ মাযূর ভেবে নামায পড়ে গেছি এক ওযুতে,একদিন হটাৎ বুঝলাম ওযু ভাঙা ছাড়াও নামায হয়ে যাচ্ছে,তার মানে হয়তো মাযূরের ওজর আর খাটবে না, এই ক্ষেত্রে কতদিনের নামায কাযা ধরব বুঝছি না,কারণ প্রায় ২ বছর ওভাবে মাযূর হিসেবে নামায পড়ছি।
প্রশ্ন:

১। মাযূর ভেবে যে নামায আদায় করে গেছি,সেগুলো যদি কাযা হিসেবে পুনরায় আদায় করা লাগে,আমি কতদিনের আনুমানিক কাযা তুলব?

২। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা জানতে চাচ্ছি- আমি এই ৪০ টি রোযা ও অন্তত প্রায় দেড় মাসের ৫ ওয়াক্ত নামাযের কাযা আদায় না করেই যদি মারা যাই? সেক্ষেত্রে কী হবে আমার? কাযা আদায় না করার শাস্তি থেকে বাঁচতে করণীয় কী আমার? টানা ৪০দিন রোযা রাখা বা টানা দেড় মাস ৫ ওয়াক্তের কাযা আদায় কোনোটাই বাস্তবিক আমার দ্বারা সম্ভব না,আর এতদিনের হায়াত পাব কিনা তাও জানি না।

1 Answer

0 votes
by (677,960 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে আপনি যদি শরয়ী মা'যুর হিসেবে সাব্যস্ত না হোন,সেক্ষেত্রে এই দুই বছর অযু করার পর ফরজ নামাজের আগে ও নামাজের মধ্যে অযু ভঙ্গের কারন পাওয়া না গেলে সেই নামাজ গুলি আপনার আদায় হয়ে গিয়েছে। 

পুনরায় আদায় করতে হবেনা। 

আর যদি অযু করার পর ফরজ নামাজ ও বিতর নামাজের আগে ও নামাজের মধ্যে অযু ভঙ্গের কারন পাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে যেকয়টি নামাজের ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছে,সে কয়টি নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।
এক্ষেত্রে নামাজের সংখ্যা প্রবল ধারণার ভিত্তিতে নির্ণয় করবেন।

(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ ؕ فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَ عَلَی الَّذِیۡنَ یُطِیۡقُوۡنَہٗ فِدۡیَۃٌ طَعَامُ مِسۡکِیۡنٍ ؕ فَمَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا فَہُوَ خَیۡرٌ لَّہٗ ؕ وَ اَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۴﴾

অনুবাদঃ- 
এগুলো গোনা কয়েক দিন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদইয়া- একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণের যদি তোমরা জানতে।
(সুরা বাকারা ১৮৪

শরীয়তের বিধান হলো যদি মৃত ব্যক্তি তার সম্পদ থেকে তার নামাযের কাফফারা আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যায়, আর তার নিজের মালও ছিল। তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করতে হবে।আর যদি তার কোন সম্পদ না থাকে, বা সে মাল রেখে গেছে কিন্তু কোন কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যায়নি। তাহলে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করা আত্মীয়দের উপর জরুরী নয়। তবে স্বজনদের কাফফারা আদায় করে দেয়াই উত্তম।সন্তানদের সামর্থ্য থাকলে নিজেদের সম্পত্তি থেকে স্বতঃস্ফূর্ততার  সাথে মরহুম পিতার নাজাতের জন্য কাফ্ফারা আদায় করে দিতে পারেন,তাহলে মাইয়্যিতের জন্য যথেষ্ট হবে, ইনশাআল্লাহ।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
ولو مات وعلیہ صلوات فائتۃ وأوصی بالکفارۃ یعطی لکل صلوۃ نصف صاع من برّ کالفطرۃ، وکــذا حکم الوتر والصوم، وإنما یعطی من ثلث مالہ، وفي الشامي: فیلزمہ ذلک من الثلث إن أوصی وإلا فلا یلزم الولي ذلک؛ لأنہا عبادۃ فلابد فیہا من الاختیار، فإذا لم یوص فات الشرط، فیسقط في حق أحکام الدنیا للتعذر، وأما إذا لم یوص فتطوع بہا الوارث فقد قال محمد في الزیادات: إنہ یجزیہ إنشاء اللّٰہ تعالٰی۔ (شامي ۲؍۳۳-۵۳۲ زکریا، کذا في البحر الرئق ۲؍۱۶۰ رشیدیۃ، الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۱۲۵ رشیدیۃ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি মারা যায়,আর তার যিম্মায় যদি কাজা নামাজ থাকে,এবং তিনি যদি কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যায়,তাহলে প্রত্যেক নামাজের জন্য সদকায়ে ফিতর এর ন্যায় অর্ধ সা' গম সদকাহ করতে হবে।
বিতির আর রোযার ক্ষেত্রেও এই ভাবেই ফিদইয়া আদায় করতে হবে।
এটি তার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ সম্পদ থেকে দিবে।
তবে যদি ওসিয়ত করে না যায়,আর ওয়ারিশগন যদি 
নিজেদের সম্পত্তি থেকে স্বতঃস্ফূর্ততার  সাথে কাফ্ফারা আদায় করে দেয়,তাহলে মুহাম্মদ রহঃ বলেছেন যে এটি  মাইয়্যিতের জন্য যথেষ্ট হবে, 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
أخرج ابن أبي شیبۃ عن عمر بن عبد العزیز في صدقۃ الفطر: نصف صاع عن کل إنسان أو قیمتہ نصف درہم۔ (مصنف ابن أبي شیبۃ ۶؍۵۰۸ رقم: ۱۰۴۷۰)
সারমর্মঃ
ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহঃ সদকায়ে ফিতর এর ক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষ থকে অর্ধ সা' (গম) অথবা তার মূল্য নিতেন।   

وإن لم یوص وتبرع بہ بعض الورثۃ جاز۔ (حلبی کبیر ۵۳۵)
সারমর্মঃ
যদি ওসিয়ত করে না যায়,তাহলে কতিপয় ওয়ারিশগন যদি তাহা দিয়ে দেয়,তাহলে জায়েজ আছে।   

★বিতরসহ প্রতি ওয়াক্ত নামায হিসেব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দান করে দিতে হবে। অথবা প্রতি ওয়াক্তের বদলে একজন গরীবকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়াতে হবে। যা সদকায়ে ফিতির এর টাকা পরিমাণ হয়। (ফতাওয়া শামী-২/৭২)

সহজ কথায়, প্রতিটি নামাযের জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবকে দান করে দিতে হবে।

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি যদি এই ৪০ টি রোযা ও দেড় মাসের ৫ ওয়াক্ত নামায (বিতর সহ) কাযা আদায় না করেই মারা যান,তাহলে এক্ষেত্রে মারা যাওয়ার আগে আপনি নামাজ রোযার ফিদইয়াহ আদায়ের অসিয়ত করে মারা যাবেন,আপনার ওয়ারিশগন আপনার মৃত্যুর পর উক্ত নামাজ ও রোযার পরিবর্তে অসিয়ত মোতাবেক ফিদইয়াহ আদায় করবে।

বিতির সহ প্রতিটি নামাযের জন্য ও প্রতিটি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

ফিদইয়াহ আদায় না করা হলে আর আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা না করলে এর জন্য কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।

★সুতরাং এখন থেকে কাজা আদায়ের পাশাপাশি অবশিষ্ট নামাজ রোযার ফিদইয়াহ এর জন্য অসিয়ত নামা লেখার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (100 points)
আমি অবিবাহিত। অছিয়তনামা সম্পর্কে আরেকটু জানালে ভালো হয়।

by (677,960 points)
কোনো একটি কাগজে/ডাইরিতে "অসিয়ত নামা" শিরোনাম দিয়ে আপনার কতগুলি কাজা নামাজের ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে,সেটি লিখবেন।

বিষয়টি আপনার ওয়ারিশদের জানাবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 336 views
...