আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১। একটি কম্পানিতে নাইট ডিউটি করার জন্য প্রতি ঘন্টায় টাকা দেয়া হয়, সেখানে রাতে থাকার জন্য ডর্মেটরি আছে। কেউ অভারটাইম এর জন্য থাকলে ৭ টা বা ১০টা পর্যন্ত থাকতে পারে অথবা নাইট। এখন কেউ নাইট ডিউটির জন্য থাকলো ১২ টা পর্যন্ত কাজ করে ডর্মেটরি তে যেয়ে ঘুমিয়ে পরলো আবার পরদিন অফিস শুরুর টাইমে কাজ শুরু করলো। এঅবস্থায় ঘুমের সময়টুকুতে ওভারটাইমের টাকা নেয়া তার জন্য জায়েজ হবে কিনা??
২। অনেক সময় ভোটের আগে নির্দিষ্ট পার্থিকে ভোট দেয়ার জন্য টাকা দেয়া হয়। কেউ যদি টাকা নেয় এবং তাকে ভোট দেয় সেক্ষেত্রে এর বিধান কি? যদি জায়েজ না হয় এই টাকা কি করা যাবে??

৩। ভোটে সাপোর্ট করার জন্য একজনকে টাকা দেয়া হয় সে যাতে এলাকার মানুষের মাঝে টাকা দেয় ভোট নেয়ার জন্য। এই টাকার বিধান সম্পর্কে জানতে চাই।

মুফতি সাহেব, দয়া করে প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ إِلَّا أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ ۚ وَلَا تَقْتُلُوا أَنفُسَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা, আয়াত ২৯)

 তিনি অন্যত্রে বলেন-

وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ

আল্লাহ তা’য়ালা যেসব বস্তু তোমাদেরকে দিয়েছেন, তন্মধ্য থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। (সূরা মায়েদা, আয়াত ৮৮)

কোনো প্রতিষ্ঠানের যদি শিক্ষক ক্লাশ মিস করে বা না জানিয়ে ছুটি কাটায়, ক্লাশে অনুপস্থিত থাকে, সেক্ষেত্রে সেই ক্লাশ গুলোর বেতন তিনি পাবেননা। সেই দিন গুলোর বেতন নিয়ে থাকলে তাহা ফেরত দিতে হবে,ফেরত দেয়া সম্ভব না হলে গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

আরো জানুনঃ https://www.ifatwa.info/23385/

উল্লেখ্য যে যদি উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়ম, শর্ত এমন হয় যে কেউ কর্মক্ষেত্রে  অনুপস্থিত থাকলে পূর্ণ বেতন পাবে, এখানে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত বেতন নেওয়া যাবে। সেই ক্ষেত্রে টাকা দান করে দিতে হবেনা। (কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১৪০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে  প্রতিষ্ঠানের নিয়ম ভঙ্গ করে কাজ না করে ঘুমিয়ে থেকে কাজের বিনিময় নেওয়া জায়েজ হবে না। তাই আপনার জন্য কর্তব্য হলো, যতটুকু সময় আপনি কাজ করেননি সেই পরিমাণ টাকা কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া। তবে যেহেতু আপনি তার জন্য কিছুটা মেহনত করেছেন এবং সময় ব্যয় করেছেন। তাই আপনার জন্য শ্রম অনুযায়ী পরিমিত টাকা বিনিময় হিসেবে নেওয়া জায়েয আছে।

২-৩ . ভোট একটি মতামত, একটি রায় ও সাক্ষ্য বিশেষ। এটা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার নিকট গচ্ছিত আমানত, যা টাকা পয়সা দিয়ে ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ হারাম। টাকার বিনিময়ে ভোট দেওয়া নিকৃষ্টতম ঘুষ। সামান্য অর্থের বিনিময়ে দেশা ও জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। কেননা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সেই ব্যক্তি যে অন্যের পার্থিব জীবন সাজাতে গিয়ে নিজের দ্বিনদারি ধ্বংস করে।

এজন্য ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, অযোগ্য কাউকে নির্বাচিত করলে তার মাধ্যমে সমাজে যত অরাজকতা সৃষ্টি হবে এর কারণে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতা করতে হবে ভোটার বা দলপ্রধান নির্বাচনকারীকে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে লোক সৎকাজের জন্য কোনো সাক্ষ্য দেবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, সে তার পাপের একটি অংশ পাবে।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ৮৫)

সুতরাং যেই প্রার্থীর নিকট থেকে কেউ টাকা নিয়েছে উক্ত প্রার্থীকে তার টাকা ফেরত দিতে হবে। যদি তাকে ফেরত দেওয়ার সুযোগ না থাকে তাহলে উক্ত টাকা সদকা করে দিতে হবে। নিজে ভক্ষন করা জায়েয নেই। কোন ব্যক্তির জন্য নির্বাচন প্রার্থীর পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট কালেকশনের উদ্দেশ্যে টাকা বিতরণ জায়েয নেই। এসম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/32528/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...