আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

১। আমার এক মামাতো বোন - তার বাবারা ২ ভাই। তার চাচা তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দিতে চাচ্ছেন। কেননা উনারা ঐ বাড়ির অংশীদার, যেখানে তারা ( আমার মামাতো বোন) থাকে। উল্লেখ্য যে, তার ওই চাচা ওই গ্রামে থাকেন না। ঢাকা থাকেন। আমার মামাতো বোনেরা ৩ বোন। ২ জনের বিয়ে হয়েছে। তার এখনও বিয়ে হয়নি। মামী অসুস্থ এবং সে নিজেও শারীরিকভাবে সুস্থ নয়; অপারেশনের প্রয়োজন। মামা কোনো কাজবাজ করেন না। আমার সেই মামাতো বোন টিউশনি করে সংসার চালান। ওষুধের যোগান দেন। পড়াশোনা এবং অন্যান্য খরচ চালান।
তাদের একটা ডিপোজিট ছিল। ১৫ বছর যাবত। সেখানে কিছু টাকা জমা হয় (সুদ বাদে -৬৫২৫০ টাকা)  এবং সুদ ও আসে (৩৪৭৫০ টাকা) । মোট ১০০০০০ টাকা।

প্রশ্ন: তারা এখন এই টাকা দিয়ে বাড়ি করতে পারবে কি না ?
অপারেশনের খরচ বহন করা এবং ওষুধ পাতি কেনা বাবদ খরচ করতে পারবেন কি না? এই টাকার ক্ষেত্রে তার কী করণীয়?
সে অন্য আত্মীয়দের থেকে সাহায্যের আশা রাখে না। ধার নেওয়া বা শোধ দেওয়াটাও তার জন্য কঠিন।
২। আমার গ্রামে একটি পুকুর আছে। সেখানে অল্প কিছু মাছের চাষ হয়। বেশির ভাগ সময় আমার বাবাই মাছের যাবতীয় খরচ বহন করেন। কিন্তু পুকুরটা দাদার নামে। আমার বাবারা ৪ ভাই তিন বোন। মাছ ভাগ করার সময় বা বিক্রির পরে ভাইদের চার ভাগ করা হয়। বোনদের জন্য কোনো অংশ রাখা হয় না। মাঝে মধ্যে আমার বাবার ভাগের অংশ তাদেরকে দেওয়া হয়। এখন তাদের কে ভাগ দেওয়ার ব্যাপারে বিধান কী। কিভাবে তাদের অংশ বুঝিয়ে দিতে পারব? স্পষ্টত কী অনুপাতে তারা অংশ পাবে? এতদিন যে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছিল না এই হক কিভাবে আদায় করব ?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

اَلَّذِیۡنَ یَاۡکُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَقُوۡمُ الَّذِیۡ یَتَخَبَّطُہُ الشَّیۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَیۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللّٰہُ الۡبَیۡعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنۡ جَآءَہٗ مَوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ فَانۡتَہٰی فَلَہٗ مَا سَلَفَ ؕ وَ اَمۡرُہٗۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ وَ مَنۡ عَادَ فَاُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷۵﴾

যারা সুদ খায় তারা তার ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এ জন্য যে তারা বলে, ‘ক্রয়-বিক্রয় তো সুদেরই মত। অথচ আল্লাহ্ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন। অতএব যার নিকট তার রব-এর পক্ষ হতে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, তাহলে অতীতে যা হয়েছে তা তারই; এবং তার ব্যাপার আল্লাহর ইখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
(সুরা বাকারা ২৭৫)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ৬৫২৫০ টাকা দিয়েই তারা বাড়ি করতে পারবে। সুদের টাকা দিয়ে বাড়ি করতে পারবেনা।

সুদের টাকা দিয়ে অপারেশনের খরচ বহন করা এবং ও ঔষধ বাবদ খরচ করতে পারবেনা।

এই টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে। 

এক্ষেত্রে হিলার একটি ছুরত গ্রহন করা যায়,তাহা হলো তার কোনো বোন যদি গরিব হয়,নেসাব পরিমান সম্পদের যদি মালিক না হয়,অর্থাৎ কোনো বোনের মালিকানায় নেসাব পরিমান সম্পদ যদি না থাকে,সেক্ষেত্রে তাকে উক্ত সুদের টাকা কোনো চুক্তি করা ছাড়া ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করতে পারবে।

এরপর সেই বোন উক্ত টাকা যদি তার মাকে/বোনকে বাড়ি করার জন্য হাদিয়া দেয়,অথবা সে নিজেই উক্ত টাকা দিয়ে তার মা বোনদের বাড়ি নির্মানের খাতে ব্যয় করে,বা অপারেশনের খরচ বাবদ বা ঔষধ এর খরচ বাবদ দেয়,তাহলে তাহা জায়েজ হবে। 

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার বাবা যেহেতু মাছের যাবতীয় খরচ বহন করে,তাই খরচ বাবদ টাকা/মাছ আপনার বাবাকে দিয়ে অবশিষ্ট মাছ ৭ ভাগ করতে হবে।

চার ভাই ও দুই বোনের মাঝে সেই অবশিষ্ট মাছ সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে।

এক্ষেত্রে এতোদিন বোনদের মাছ না দেয়ার দরুন তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

যদি তারা সন্তুষ্টি চিত্তে ক্ষমা না করে,তারা যদি এতোদিনের মাছ চায় বা ক্ষতিপূরন চায়,সেক্ষেত্রে তাদের সাথে বসে আলোচনা সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দিবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
সমান ভাগ বলতে বুঝিনি উস্তায।সম্পত্তি বণ্টন এ যেমন ভাইদের অর্ধেক বোনরা পায়।এটাও কি তেমন হবেনা?নাকি ভাই বোন সমান সমান ভাগ হবে?

by (676,960 points)
এটি উত্তরাধিকার সম্পত্তি নয় 
এক্ষেত্রে ভাই বোন সমান ভাগ পাবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...