আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
closed by
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
১)মৃত ব্যাক্তির জন্য নিয়মিত সূরা মূলক পড়লে নাকি নিজেও সমান সওয়াব পাওয়া যাবে ,তাহলে প্রতিদিন রাতে কি আমি শুধু একবার সূরা মূলক পরবো !? নাকি মৃত ব্যক্তির জন্য একবার, আর আমার জন্য একবার ,,আর আমি কি আল্লাহ কে বলবো যে আমার এই নেকি টা তুমি অমুক ব্যক্তিকে দিয়ে দাও !? কিভাবে মৃত ব্যক্তিকে সূরা মূলক পরে পাঠাবো !? যতজন মৃত আছেন সবার জন্য আলাদা আলাদা করে মূলক পড়বো  নাকি একবার  !?
২)হুজুর ফরজ সালাতের ৩ য়  রাকাতে ভুলে সূরা ইখলাস অর্ধেক পরে ফেলেছি,তারপর মনে পড়েছে, তখন থেমে গিয়ে রুকুতে চলে যাই ,সালাত কি ভঙ্গ হয়েছে !?
৩)বিতির সালাত আদায়ের সময় আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তায়ীনুকা ,,,এই দুয়াটা মাইয়াফ জুরুকা পর্যন্ত ঠিক হয় ,কিন্তু তারপরের লাইনগুলোতে সব সময় ওলোট পালট হয়ে যায়, এজন্য ভয়ে মাইযাফযুরুকা পর্যন্ত পড়ি,সালাত কি আদায় হবে !?
৪)হুজুর আমার মাসিক শেষ হবার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই ,তাই কখন শেষ হয়েছে ,,কখন থেকে সালাত আদায় শুরু করবো ,বুঝে উঠতে পারিনা , কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি শেষ,, তারপর জোহরের সালাত আদায় করি এবং ফজরের কাযা সালাতও আদায় করি,, মাসিক ঠিক ফজরের আগে শেষ হয়েছে নাকি পরে শেষ হয়েছে কিছুই বুঝিনা,, তারপর জোহরের সালাত আদায়ের পরে আবারো মাসিক দেখা দেয় ,, তারপর সারারাত আর দেখিনি, তাই সকালে উঠে ফরজ গোসুল করে ফজরের কাযা  সালাত আদায় করেছি।  হুজুর এভাবে মাসিক ঠিক কখন শেষ হচ্ছে এটা বুঝতে না পাড়ার কারণে তো আমার অজান্তেই আমার সালাত কাযা  হয়ে যাচ্ছে ! হুজুর আল্লাহ কি আমাকে এর জন্য ক্ষমা করবেন না !? তাহলেকি আজীবন আমি এই ভুলের মধ্যেই থাকবো হুজুর ,প্লিজ আমাকে একটা সঠিক সমাধান দিন হুজুর,, যেন কাযা  সালাতের শাস্তি থেকে বাঁচতে পারি!

৫)হুজুর, আমার নতুন বাবার ইনকাম হারাম, আমি এতদিন যা খেয়েছি আমার মা আমার ৫ বছরের ছোট ভাই যা খাচ্ছে এগুলোতো হারাম ,,হুজুর আমরা এই শাস্তি থেকে বাঁচবো কিভাবে !? আর আমরা যদি খাবার টা  হালাল টাকা দিয়ে খাই,,আর বাসা ভাড়া ,জামাকাপড় ,এগুলো নতুন বাবার টাকা  নেওয়া হয় ,,তাহলেওকি বাঁচার কোনো উপায় নেই হুজুর !? আমার কি তাহলে কোনো দুআ কবুল হচ্ছেনা হুজুর !? মৃত্যুর পরে এর শাস্তি থেকে কিভাবে বাঁচবো হুজুর !?
৬)অনেক সময় অনেকেই খাবার দেয় , অনেক আত্মীয় পিঠা বা অন্য কিছু দেয় ,এখন সেটা হারাম নাকি হালাল এগুলো যাচাই করে এতদিন কোনোকিছু খাইনি, কখনো ভাবিনি যে এটা হালাল নাকি হারাম ,একটু করে দ্বীনের বুঝ আসার পর মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগলো,, হুজুর এভাবে অজান্তে যদি কারো খাবারে হারাম কিছু থাকে আর আমরা তা খেয়ে থাকি না জেনেই ,,তাহলেওকি এর শাস্তি পেতে হবে !? তবেকি অন্যের দেওয়া খাবার খাবোনা !? ,,হারাম নাকি হালাল উপার্জনের খাবার এটা যাচাই করার তো কোনো উপায় নেই !

৭)হুজুর ছোটবেলা থেকে জেনে না জেনে অজান্তে অথবা ইচ্ছে করে কখনো যদি কারো গীবত করে থাকি ,আর তাদের কাছে যদি ক্ষমা চাওয়ার উপায় না থাকে,,তবে মৃত্যুর পরে এর শাস্তি থেকে কিভাবে বাঁচবো হুজুর !? শুধু আল্লাহর কাছে তওবা করলে কি হবেনা !?
৮) মা সালাত আদায় না করলে / পর্দা না করলে ,অথবা আল্লাহ নারাজ হন এমন কাজ করলে , আমি যদি রাগ করে কথা না বলি ,,,অথবা অস্বাভাবিক আচরণ করি (কথার উত্তর না দেই ,ভালোভাবে কথা না বলি )তবেওকি আমার গুনাহ হবে !?
closed

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

کنز العمال: (رقم الحدیث: 42595، 655/15، ط: مؤسسة الرسالة)
“من مر علی المقابر فقرأ فیھا احدی عشرة مرة قل ھو الله احد ثم وھب اجرہ للأموات اعطی من اجر بعددالأموات۔” (الرافعی، عن علی)

যে ব্যাক্তি কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলো,এবং কবরস্থানে ১১ বার সুরা ইখলাস পড়ে মৃত ব্যাক্তিদের ঈসালে ছওয়াব করলো,তাহলে মুর্দাদের সংখ্যা অনুপাতে ছওয়াব তাদেরকে দেয়া হবে।

مجمع الزوائد (رقم الحدیث: 4769، ط: دارالفکر)
وعن عبد اللہ بن عمرو قال: قال رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم إذا تصدق بصدقة تطوعاً أن یجعلها عن أبویه فیکون لهما أجرہها ولا ینتقص من أجرہ شیئاً" رواہ الطبرانی فی الأوسط وفیہ خارجۃ بن مصعب الضبي وہو ضعیف۔

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখনই কোনো মুসলমান নফল সদকাহ করে,এবং তার ছওয়াব নিজ মাতাপিতাকে পৌছায়,তো ঐ দুইজন সেই ছওয়াব পায়,এবং ঐ সদকা দাতার ছওয়াব হতে কোনো কমতি করা হয়না।

رد المحتار: (243/2، ط: دار الفکر)
صرح علماؤنا في باب الحج عن الغیر بأنّ للإنسان أن یجعل ثواب عمله لغیره صلاةً أو صومًا أو صدقةً أو غیرها، كذا في الهدایة. بل في زكاة التتارخانیة عن المحیط: الأفضل لمن یتصدّق نفلًا أن ینوي لجمیع المؤمنین و المؤمنات؛ لأنّها تصل إلیهم، ولاینقص من أجره شيءٍ اه هو مذهب أهل السنة والجماعة.
সারমর্মঃ-
উত্তম হলো যে ব্যাক্তি নফল সদকাহ করবে,সে সমস্ত মু'মিন মু'মিনাত দের জন্য নিয়ত করবে।কেননা এতে তাদের নিকট ছওয়াব পৌছে৷ এবং সদকাহ দাতার ছওয়াব হতে কোনো কমতি করা হয়না। এটাই হলো আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মাযহাব।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত ব্যাক্তির জন্য নিয়মিত সূরা মূলক পড়লে নিজেও সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
একাধিক মৃত ব্যাক্তির জন্য একবার সুরা মূলক পড়াই যথেষ্ট।  সকলের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে পড়তে হবেনা।

এক্ষেত্রে ঈসালে ছওয়াবের লক্ষ্যে প্রতিদিন রাতে আপনি শুধু একবার সূরা মূলক পড়তে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে,  আপনি নিজের আমলের নিয়তে একবার সুরা মূলক পড়বেন,আর মাইয়্যিতদের ঈসালে ছওয়াবের নিয়তে ২য় বার সুরা মূলক পড়বেন।
এটাই উত্তম হবে।

যতজন মৃত ব্যাক্তিকে ছওয়াব পাঠাতে চাচ্ছেন,তাদের কবরে ছওয়াব পাঠানোর নিয়তে সুরা মূলক পড়া মাত্র তাদের কবরে অটোমেটিক ছওয়াব পৌছে যাবে।
নতুন করে দোয়া করা আবশ্যক নয়। 
এক্ষেত্রে শুধু নিয়তই যথেষ্ট। 

তদুপরি দোয়া করলে দোয়ার মধ্যে বলবেন,হে আল্লাহ এর ছওয়াব রাসুলুল্লাহ সাঃ নিকট পৌছে দিবেন।
হযরত আদম আঃ থেকে নিয়ে শুরু করে যত নবি রাসুল, মু'মিন মু'মিনাত মারা গিয়েছেন,সকলের কবরে ছওয়াব পৌছে দিন।
নিজের সমস্ত আত্মীয় স্বজনের কবরে ছওয়াব পৌছে দিন।

(০২)
আপনার সালাত ভঙ্গ হয়নি।
সালাত আদায় হয়ে গিয়েছে। 

(০৩)
আপনার সালাত আদায় হবে। 
তবে সময় সুযোগ মোতাবেক পুরাটা শুদ্ধ করে শিখে নিবেন।

(০৪)
কোন ওয়াক্তে আপনার হায়েজ বন্ধ হয়েছে,প্রবল ধারণার ভিত্তিতে সেই টাইমটি নির্দিষ্ট করে সেই ওয়াক্ত হতে অনাদায়ী নামাজের কাজা আদায় করবেন।

যদি প্রবল ধারণা হয় যে হায়েজ ফজরের ওয়াক্ত আসার আগেই বন্ধ হয়েছে,সেক্ষেত্রে ফজর সহ ঈশার নামাজের কাজাও আদায় করতে হবে।

হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর ১০ দিনের মধ্যে  আবারো হায়েজ আসলে সেক্ষেত্রে হায়েজ শেষ হওয়া পর্যন্ত নামাজ পুনরায় বন্ধ রাখবেন। এক্ষেত্রে হায়েজ যদি ১০ দিনের আগেই বন্ধ হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে হায়েজ বন্ধ হওয়া পর্যন্ত পুরাটা সময় হায়েজ হিসেবে ধরবেন,নামাজ বন্ধ রাখবেন।

আর যদি ১০ দিন অতিক্রম হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে পূর্বের মাস গুলোর আদত (অভ্যাস) অনুযায়ী হায়েজ ধরবেন। এর পরবর্তী দিন গুলোর নামাজ কাজা করবেন।
এক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত এসব নামাজ যে কাজা আদায় করতে হচ্ছে,এর দরুন আল্লাহ তায়ালা আপনাকে শাস্তি দিবেননা।
আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দিবেন।

(০৫)
আপনার জন্য বাবার ইনকাম হতে খাবার খাওয়া,পোশাক নেয়া,প্রয়োজনীয় খরচ নেয়া সবই বৈধ। 
দুশ্চিন্তা করবেননা।

(০৬)
শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে এসব খাবারকে হারাম বলার সুযোগ নেই।

এখন থেকে কাহারো খাবার নেয়ার আগে চিন্তা করবেন যে তার ইনকাম হালাল নাকি হারাম?

(০৭)
এক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে নিজের জন্য ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি যাদের যাদের গীবত করেছেন,তাদের মাগফিরাত এর দোয়া করবেন।

(০৮)
এক্ষেত্রে ধমক দেয়া যাবেনা।
রাগান্বিত হয়ে জোড়ে কথা বলা যাবেনা।
হিকমতের সাথে বুঝানো অব্যাহত রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে মাকে গালি গালাজ করলে বা মা কষ্ট পাবে,এমন ভাবে ধমক দিলে/এমন ভাবে মায়ের উপর দিয়ে রাগান্বিত হয়ে জোড়ে কথা বললে গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...