আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
378 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম,
স্ত্রী দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়।এই সময় তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন, রোগ থেকে সুস্থ হলে তিনি আল্লাহর অপছন্দজনক কোনো কাজ করবেন না এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার সবকিছু মেনে চলবেন যথাসাধ্য, জীবনেও তালাক্ব শব্দ মুখে আনবেন না সাথে এই জিনিসে নিজেকে জড়াবেন না। তালাক্ব শব্দ মুখে আনবেন না বলার কারণ স্ত্রী আগে না বুঝেই রাগের বশে স্বামীকে বলতেন, আমাকে ছেড়ে দাও।

স্ত্রী সুস্থ হওয়ার পর, স্বামী পূর্বের অহেতুক কথাকে কেন্দ্র করে তালাক্বনামায় সই চাইছে এবং দ্বিতীয় বিয়ের জন্য মেয়ে দেখে ফেলেছে। স্ত্রী এমতাবস্থায় আপোষ করতে চাইছে এবং বলেছে, তুমি দ্বিতীয় বিয়ে করে নাও কিন্তু আমি সাইন করতে পারবো না। স্ত্রী সুস্থ হওয়ার পর নিজেকে পুরোপুরি বদলে ফেলেছে আল্লাহর পথে চলার জন্য। স্ত্রী আর তালাক্ব চাইছে না কোনো ভাবেই। স্বামী, স্ত্রীকে তালাক্ব দেয়নি।

এইক্ষেত্রে মাসায়েলা কি হবে?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম এক তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে। তিন তালাকের নয়। তবে তিন তালাক দিলে পতিত হয়ে যায়।

সূরা আন নিসার ৩৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-

الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا (34)

"পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক। কারণ, আল্লাহ তাদের একের ওপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা নিজের ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা অনুগত এবং বিনম্র। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারা তাঁর অধিকার ও গোপন বিষয় রক্ষা করে। আল্লাহই গোপনীয় বিষয় গোপন রাখেন।যদি স্ত্রীদের অবাধ্যতার আশংকা কর তবে প্রথমে তাদের সৎ উপদেশ দাও। এরপর তাদের শয্যা থেকে পৃথক কর এবং তারপরও অনুগত না হলে তাদেরকে শাসন কর৷ এরপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের সাথে কর্কশ আচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমু্ন্নত-মহীয়ান।" (৪:৩৪)

★শরীয়তে বিশেষ প্রয়োজনে,যখন স্বামী স্ত্রীর মাঝে  বনিবনা কোনো ভাবেই সম্ভবপর হয়না,অথবা স্ত্রী এমন অসুস্থ, যে স্বামী তাকে নিয়ে কোনো ভাবেই ঘরসংসার করতে পারছেনা।  
তখন এক তালাক দেওয়ার বিধান এসেছে।
,
বিনা কারণে তালাক প্রদাণ করা হারাম।
এর শাস্তি  দুনিয়া ও আখেরাতে অবশ্যই পেতে হবে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «أبغض الحلال إلى الله تعالى الطلاق»

অর্থ:রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেন, “মহান আল্লাহ পাকের নিকট সর্বাপেক্ষা অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে 'তালাক'।(আবু দাউদ-২১৭৮)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী যেহেতু সুস্থ হয়েছে,তাই তাকে তালাক দেওয়া কোনোভাবেই  জায়েজ নেই।
তালাক দিলে স্বামীর গুনাহ হবে।
,
স্বামী যদি মৌখিক বা লিখিত তালাক দেয়,তাহলে তালাক হয়ে যাবে।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি স্বামী যেই তালাক্বনামায় স্ত্রীর সই চাইছে,সেই তালাক নামায় যদিও স্ত্রী সই না করে,তারপরেও উক্ত তালাকনামায়  যদি স্বামী তালাকের কথা লেখে,বা কাউকে দিয়ে লেখায়,তাহলে তাতে যে কয় তালাকের কথা লেখা আছে,সে কয় তালাক পতিত হয়ে যাবে। 
,    
এতে শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে স্ত্রীর সই এর কোনো প্রয়োজন নেই।
তার সই ছাড়াও তালাক হয়ে যাবে।
হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সেই তালাক নামায় তালাক প্রদানের কথা লেখে,তাহলে এক বা দুই তালাক হলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরে নিতে চাইলে ফিরে নিতে পারবে।
 
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
তিন তালাক হলে শরয়ী হালালাহ করা ব্যাতিত তাকে বিবাহ করা জায়েজ হবেনা। 
,  
স্বামী ফিরে নিতে না চাইলে নাও নিতে পারে।
কোনো চাপ নাই। 
,
আর যদি উক্ত তালাক নামায় তালাকের কথা না লেখা থাকে, কিছুই লেখা না থাকে,আর স্বামীও যদি মৌখিক তালাক না দেয়, তাহলে কোনো তালাক হবেনা।
,
এমতাবস্থায় স্ত্রী যে আপোষ করতে চাচ্ছে,সেটাও ছহীহ আছে।
চাইলে স্বামী স্ত্রীকে তালাক না দিয়েও অন্য মহিলাকে বিবাহ করতে পারে।
স্বামী তো মোট চারটি বিবাহ করার অধিকার রাখে।
,
তবে এই ১ম স্ত্রীরও পূর্ণ হক আদায় করতে হবে।
উভয় স্ত্রীর মাঝে সমতা বজায় রাখতে হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
স্ত্রী আপোষ করলে, স্বামী কি তালাক্ব দিতে পারবে জোরপূর্বক? 
by (657,800 points)
জোরপূর্বক তালাক নামায় সাইন নেওয়া জায়েয হবেনা।  
by (657,800 points)
জোর করার দ্বারা উদ্দেশ্য যদি এটি হয় যে তালাক না দিলে হত্যা করবে,তাহলে শুধু জোরপূর্বক  লিখিত তালাকে সাইন করলে সেটি তালাক হবেনা।
,
আর যদি এমনিতেই ধমকা ধমকা করে,হত্যার হুমকী ধামকী না থাকে,তাহলে লিখিত সাইনে তালাক হয়। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...