আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আস্সালামুআলাইকুম হুজুর,দয়াকরে খুবই দ্রুত উত্তর দিন,আপনার কাছে অনুরোধ রইলো,খুবই জরুরি

আমার মা আমি যখন ছোট তখন থেকেই বেপর্দা,,কল এ  /সামনা সামনি অনেক পুরুষের সাথে কথা বলতো,,(বাবার সাথে তালাকের পর) হারাম সম্পর্কে জড়িত ছিলো,,আমি ছোটবেলা থেকেই বুঝতে শিখার পর থেকে সালাত আদায় করতাম, তবে কঠোর ভাবে পর্দা করতাম না ,শুধু ঢিলে ঢালা বড় জামা,হিজাব পড়তাম ১৮ বছর হবার পর থেকে বোরকা পড়ি এবং পর্দা করি,মাহরাম মেনে চলার চেষ্টা করি ,,মাঝখানে মায়ের সাথে ছিলাম না বাবার কাছে ৫ বছর ছিলাম এবং নানুবাড়িতে ছিলাম ,,এরপরে মায়ের দ্বিতীয় সংসারে আসার পর ,,মা আমার উপর অল্পতেই খেপে যেত অনেক মানুষিক নির্যাতন করতো ,,একটু কিছু হলেই ফাঁসি লাগাতে যেত, আমাকে অভিশাপ দিতো ,আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিত ,সব সময় আমাকে ভুল বুঝতো,নিজের দ্বিতীয় স্বামীর সাথে মিলে আমাকে নিয়ে ফাজলামি করতো ,,কিন্তু আমিতো সন্তান তাই ভালোও বাসতো,,তবে ১ বছর যাবৎ তার স্বামী তার সাথে অনেক বেইমানি করার পর মা আমাকে আগের থেকে অনেক ভালো বাসেন,,আদর করেন(আমার নানী বলেন যে এখন তোর চাকরি হবে আর কয়মাসের মধ্যেই এজন্য এখন তোর সাথে ভালো বেবহার,১ ম্যাশ হলো আমার জব হয়েছে ),,মা নামাজ পড়েনা,,চলাফেরা হিন্দুদের মতো ,,ইসলামিক কোনো কিছুই মানেনা,,আজকে আমি নামাজ পড়ার সময় মা সামনে দিয়ে হেটে চলে যায়,,খুব বেশি প্রয়োজনও ছিলোনা আমার সামনে দিয়ে যাবার,,আবার আমাদের আরেকটা দরজা আছে ,উনি চাইলেই ঐটা দরজা দিয়ে যেতে পারতো ,,কিন্তু তিনি জানা সত্ত্বেও নামাজের সামনে দিয়ে যেতে একটুও দ্বিধা করেনি ,,আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো কষ্টে,,তারপর আমি আমার মায়ের রুমে গিয়ে তাঁর স্বামীর সামনে বলি যে তুমি আমার নামাজের সেজদার সামনে দিয়ে গিয়েছো এর জন্য ৪০ বছররের তোমার সব ইবাদত নষ্ট হয়ে গেলো,,তখন তার সময় হেসে হেসে আমাকে বলে তুমিতো অনেক পুণ্যবান ,,তুমি দুআ করে মাফ চেয়ে নাও আল্লাহর কাছে  হয়ে গেলো ,আমি তখন মাকে  বলেছি সব থেকে ভালো হতো আমি যদি তোমার কাছ থেকে তেজ্য হয়ে যেতে পারতাম তাহলে,,আমি জীবনের প্রথম মায়ের উপরে এতবড়ো কথা বলেছি,,এমনিতে উনি আমাকে ভুল বুঝে আজি বাজে ভাষায় গালি গালাজ করলেও কোনোদিন উত্তর দেওয়ার সাহস আমার হয়নি ,,কারণ তিন্নি অত্যন্ত রাগী,ফাঁসি লাগাতে চলে যাবে,,মা তখন আমাকে বলেন "তেজ্য করে দিবো আর কয়টাদিন ধৈর্য্য ধর,,আমি জাহান্নামে যাবো সমস্যা নাই ,আর দুনিয়াতেও জাহান্নামে জ্বলবো,তবে আজকে তুই যেটা কথা বল্লি  এর জন্য  তোর সারাজীবনের ইবাদত ধ্বংস হয়ে গেলো মনে রাখিস" ,,এভাবে উনি অভিশাপ দেন আমাকে,,উনি আমাকে আগে সহ্য করতে পারতোনা ,,কথায় কথায় ভুল ধরতো,,রাস্তার মধ্যেও ধমকায় চিল্লা চিল্লি করে আজে বাজে ভাষায় গালি দেন,,কিন্তু উনার নেশা গ্রস্ত স্বামী উনাকে অনেক বেইমানি করেন ,,অনেক কষ্ট দেন,,এখন মা আর উনার স্বামীর প্রতি অতোটা বিসসাস করেন না ,,এখন মা আমাকে বেশি ভালোবাসেন,,আমার অনেক যত্ন করেন মায়ের সাথে থেকে থেকে আমি বেদ্বীন হয়ে পড়ি মাঝে মাঝে সে ফোনে CID দেখে ,,সেটা আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করে ,,তখন আমিও দেখে ফেলি,,আবার আমি টিভি বের করে ফেলতে বলা সত্ত্বেও টিভিতে গান ,নাটক ,সিনেমা ,এগুলো চলে ,,আমার কানে সব আওয়াজ আসে এআমার তখন খুব দেখতে ইচ্ছে করে,,আল্লাহ মাফ করুক ,,তবুও বলছি হুজুর আমার মায়ের সাথে অনেক আগে থেকেই থাকতাম যখন,,এতটা মানুষিকভাবে আমাকে ভয়ে ভয়ে থাকতে হতো ,,আর মানুষিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে মনে হতো ,,এর থেকে মৃত্যুই ভালো,,উনার সাথে যেন না থাকতে হয় এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো আশা ,চাওয়ায় পরিণত হয়েছিল,,হুজুর মা আমাকে ছোট থেকে যত অভিশাপ দিয়ে এসেছে এবং আজকে যেই অভিশাপ টা  দিয়েছে "আজকে তুই যেটা কথা বলি এর জন্য  তোর সারাজীবনের ইবাদত ধ্বংস হয়ে গেলো মনে রাখিস" আল্লাহ কি সব কবুল করি নিয়েছেন!? জেনে শুনেও কি আল্লাহ কবুল করবেন ?,,

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থায় সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।

উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।

পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي الْغَنَمِ ".

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত। মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল। (বুখারী ১২০৬.২৪৮২, ৩৪৩৬, ৩৪৬৬; মুসলিম ৪৫/২, হাঃ ২৫৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৩৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত অভিশাপের দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।
আপনার ইবাদত আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

মায়ের সাথে উঁচু ব্যবহার না করার পরামর্শ থাকবে। হিকমতের সহিত দ্বীন বুঝানো অব্যাহত রাখবেন।
মা রেগে গেলে চুপ থাকবেন।

প্রয়োজনে কম কথা বলবেন।
সম্পর্ক ছিন্ন না করে দূরত্ব বজায় রাখতেও পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 124 views
...