আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম

১) কারো গিবত করা হলে মাফ পাবার উপায় কি?

২) আমি একটি আলোচনা তে শুনেছিলাম যে , যার নামে গিবত করা হয়েছে সে যদি না জানে যে তার নামে গিবত করা হয়েছে এইটা সে জানেনা তার নামে গিবত করা হয়েছে, তাহলে শুধু আল্লাহর কাছেই মাফ চাইলে হবে। আর যদি সে জানে যে তার গিবত করা হয়েছে  তাহলে যার গিবত করা হয়েছে তার কাছেও মাফ চাইতে হবে। এই কথাটা কি ঠিক?
৩) যদি কারোর গিবত হয়ে যায়, তার কাছে মাফ চাওয়ার জন্য যদি তাকে খুজে না পাই, তাহলে কিভাবে গিবতের জন্য মাফ চাইতে হবে?
৪) আমি যেখানে চাকরি করি, সেখানকার একজন উধবস্তন কর্মকর্তা তিনি অনেক দ্রুত দ্রুত কাজ করেন। যেমন এখন দেখলাম যে ২য় তলায়, হঠাত ই আবার ৩/৪ তলাইয় চলে যায়, সেই প্রসঙ্গে একবার বলেছিলাম যে , ফাস্ট হতে হবে অমুকের মতো, উনি দেখি হঠাত ই এইখানে আছে, আবার হঠাত করেই ওখানে চলে যায়। অন্যান্যদের কোথাও ডেকে  নিজেই আগে সেখানে চলে আসে। এইভাবে কি গিবত হয়?
৫) আমি যেই অফিসে কাজ করি সেখানে সালাতের জন্য নির্দিষ্ট টাইম নেই। এম ডি স্যার না আসলে আর সালাতের জামাত শুরু হয়না। তার যে পিয়ন উনি আজানের পরে এসেই সালাতের জায়গায় জায়নামাজ বিছিয়ে রাখেন। তো এই কথাগুলো আমি বাসায় আর অফিসের আরেকজনের সাথে আলোচনা করছিলাম যে অমুক এই এই করে। এইভাবে কি গিবত হবে? গিবত হলে মাফ পাওয়ার উপায় কি?

1 Answer

0 votes
by (677,640 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/35428/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ".

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গীবতের কাফফারাহ্ হলো, গীবতকারী যার গীবত করেছে, তার জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করবে এবং এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।
(আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৪৭৮,মেশকাত ৪৮৭৭)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় এসেছেঃ

(إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ) গীবতের কাফফারার মধ্য হতে এটি একটি। অর্থাৎ যথাযথভাবে তাওবাহ্ করার পর গীবতের কাফফারার মধ্যে একটি হচ্ছে :

(أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ) তুমি যার গীবত করেছ তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

(تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ) এ কথা বলে, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ও তাকে ক্ষমা করে দাও। (এখানে বহুবচন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যদি গীবতকারী দলবদ্ধ জামা‘আত হয়, সেদিকে লক্ষ্য করে অথবা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি লক্ষ্য করে)

হাদীসের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, এ ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা তখন হবে যখন গীবত তার নিকট না পৌঁছে। যদি গীবত তার কাছে পৌঁছে থাকে তাহলে অবশ্যই তার নিকট থেকে ক্ষমা চেয়ে মুক্তি নিতে হবে এভাবে : তার নিকট গিয়ে উক্ত কথা উল্লেখ করে ক্ষমা চাইবে। যদি তা করা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রতিজ্ঞা করবে যে, যখনই তাকে পাবে তার নিকট গিয়ে ক্ষমা চাইবে। যদি সে ক্ষমা করে দেয় তাহলেই তার ওপর থেকে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যদি এ সমস্ত কাজ করতে অপারগ হয় গীবতকৃত ব্যক্তির মারা যাওয়ার কারণে বা তার অনুপস্থিতির কারণে সেক্ষেত্রে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং তার অনুগ্রহ ও দয়া কামনা করবে এবং প্রতিপক্ষকে নিজ দয়ায় যেন সন্তুষ্ট করে দেন সেই প্রার্থনা করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
কারো গিবত করা হলে মাফ পাওয়ার উপায় হলো সেই ব্যাক্তির কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।

এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অপরাধের কথা উল্লেখ না করলেও মাফ চেয়ে নিতে হবে।

তবে যদি তার কাছে গিয়ে মাফ চাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে তার জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করবে। 
এভাবে বলবে যে,আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।

(০২)
কথাটি ঠিক নয়।

সহীহ মাসয়ালা যাহা উপরে উল্লেখ রয়েছে।

(০৩)
সেক্ষেত্রে তার জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করবে। 
এভাবে বলবেন যে,আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।

(০৪)
এটা গিবত নয়।

(০৫)
এমনটি বলা নাজায়েজ হবেনা।

তবে বিষয়ট দোষ আকারে বলে থাকলে গীবত হবে।

বাসার যেহেতু কেহই আপনার এমডি স্যারকে চেনেনা,নাম ঠিকানা কিছুই জানেনা,তাই বাসায় বললে তাহা নাজায়েজ হবেনা।

তবে অফিসের লোকের সাথে আলোচনার দরুন গিবত হবে।

তবে অফিসের সেই লোকটি যদি এম ডি স্যারের সাথে আলোচনা করে জামাতের এই বিষয়টি সমাধান করতে পারেন,সেক্ষেত্রে তাকে এটি বলা নাজায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...