আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in সাওম (Fasting) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১/আমি ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। আমি গতবছর রমযানে একদিন সেহেরি খাওয়ার পরে ফযরের ওযু করার সময় কুলি করতে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে পানি গিলে ফেলেছি,এমনকি রোযা ভংগ হবে জেনেও।আমার মনে হয়, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙেছি।জানি না ওই সময় কি হয়েছিল।আমার উপর কাফফারা ওয়াজিব,খুব সম্ভবত। আমার তো ৬০টি রোযা একটানা রাখতে হবে।আমার শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে তবে সমস্যাটি হলো আম্মু আমাকে কখনো একটানা রাখতে দিবে না। একদিন কাযা রোযা রাখতে গিয়ে আমার রোযা ভাঙিয়ে দিয়েছিল।এখন আমার কি করণীয়? আমি কি ফিতরার টাকা একসাথে একটি গরিব ভিখারিকে দিতে পারব যে পংগু?যদি না হয়, তাহলে কি করা যেতে পারে?

২/আমার আম্মুর মোবাইলটি হারাম টাকার অধিকাংশই।২মাস আগে মোবাইলটা কেনা হয়েছে।আমি মোবাইলটা ব্যবহার করেছি।এখন আমার কি মোবাইলের সম্পূর্ণ টাকা কি সাদাকা করতে হবে?আমি তো বেশিদিন ব্যবহার করিনি।ব্যবহার অনুপাতে টাকা সাদাকা করলে কি হবে?

৩/আমার যে সালামি পেয়েছি তা দিয়ে আমি আকিদাতুত তহাবি বইটি কিনতে চাচ্ছি।কিন্তু আমার তো কাফফারা আছে।কেনা কি উচিত হবে?যেহেতু সালামি টাকা জমিয়ে আমি কাফফারা আদায় করতে চাই।

৪/কাফফারা আদায়ে কি অন্যের থেকে ধার নিয়ে করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»

অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}

★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ 

আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া । 
 যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনি যদি ফজরের ওয়াক্ত আসার আগেই অযুর মধ্যে এভাবে পানি পান করে থাকেন,সেক্ষেত্রে তো আপনার সেই রোযা ভেঙ্গে যায়নি।

সুতরাং কাফফারাও আবশ্যক হয়নি।

রোযাটি ভেঙ্গে না ফেলে থাকলে সেটির কাজা আদায় করতে হবেনা।

রোযাটি ভেঙ্গে ফেলে থাকলে সেটির কাজা আদায় করতে হবে।

★আর যদি ফজরের ওয়াক্ত আসার পর আপনি এভাবে পানি পান করে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনার উপর রোযার কাজা ও কাফফারা আবশ্যক। 

প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাকে লাগাতার ৬০ টি রোযাই রাখতে হবে।

আপনার আম্মু রাখতে না দিলে এমতাবস্থায় প্রয়োজনে বিবাহের পর স্বামীর অধিনে থেকে কাফফারার ৬০ টি রোযা আদায় করবেন।

(০২)
এমতাবস্থায় মোবাইলের টাকা আপনাকে সদকাহ করতে হবেনা।
ব্যবহারের দরুন অল্প কিছু টাকা (১০০/২০০) সদকাহ করতে পারেন।

(০৩)
আপনি উক্ত বইটি কিনতে পারেন।
কোনো সমস্যা নেই।

(০৪)
হ্যাঁ, যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...