আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার এক পরিচিত বোন একজন এর সাথে হারাম রিলেশন এ জরিয়ে গিয়েছিল। তারপর সে তার পরিবার কে জানায়। কিন্তু পরিবার রাজি না।
১. ছেলে বংশের দিক থেকে এবং সম্পদের দিক থেকেও মেয়ের থেকে অনেক নিচু। এই ছেলে কে বিয়ে করলে মেয়ের বাবা কে সমাজে ছোট হতে হবে। কিন্তু ছেলে দ্বীনদার এবং একটি জব করে। আর মেয়েও অনেক ভালোবাসে ছেলেকে। তাই যখন পরিবার রাজি হচ্ছিলো না তখন দুজন পালিয়ে বিয়ে করে নেয় এবং বিয়েটা গোপন রাখে। ছেলে মেয়ে উভয়ের বয়স প্রায় ২৪ বছর। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়ে গেছে বিয়ের পর। কুফু না মিলার কারণে যদি তাদের বিয়ে না হয় তবে তো দুজন ভয়ংকর গুনাহ করে ফেলেছে। এখন করনীয় কি? বাসায় বিয়ের কথা জানালে মেয়ের বাবা কিছুতেই মানবে না। মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। আর সব থেকে বড় কথা মেয়ে তার বাবা মার একমাত্র সন্তান।  অনেক অনুশোচনা তে ভুগছেন মেয়ে। মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে মেয়েটা।

২. বিয়ের কথা যদি প্রকাশ করে তবে বাবা হয়তো স্ট্রোক করে মারা যেতে পারেন কষ্টে।  এই পাশে আবার স্বামীর হক। যদি এই অবস্থায় মেয়েটা পরিবার কে বলে যে, যেহেতু সে তাদের একমাত্র সন্তান তাই সে কোনো দিন বিয়ে না করে তাদের সেবা করবে। আর এই দিকে তার হাসবেন্ড কে বলে আরেকটা বিয়ে করে সংসার করতে। তাহলে তো বাবা মাকেও কষ্ট দেওয়া হলো না আর হাসবেন্ড ও ভালো থাকলো। আর মেয়েটা বিয়ে যেহেতু করেছে তাই বিয়ের সুন্নত ও তার পালন হলো। এটা কি করা সম্ভব?

  মেয়েটা অনেক অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে ভিতর থেকে। সুইসাইড করার ও ডিশিসন নেয় মাঝে মাঝে। নামাজ কালামেও মনোযোগ দিতে পারছে না। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য জিনার গুনাহ থেকে বাচতে বিয়ে টা করেছে মেয়েটা। কিন্তু এখন যদি কুফুর কারণে বিয়েই না হয় তবে তো আরো ভয়ংকর গুনাহ করে ফেলেছে।  দয়া করে পরামর্শ দিন।

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ- https://ifatwa.info/4801/

উক্ত মাসয়ালার ক্ষেত্রে চার মাযহাবের অবস্থান দলিল সহ জানুনঃ-

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে তাদের বিবাহ হয়ে থাকলে তাদের বিবাহ শরীয়তের দৃষ্টিকোন হতে শুদ্ধ হয়েছে।

তবে যেহেতু কুফুর মিল নেই,সুতরাং এমতাবস্থায় মেয়ের বাবা চাইলে আদালতের মাধ্যমে উক্ত বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে দিতে পারে।

(০২)
মেয়েটি যদি নিজেকে গুনাহ থেকে মুক্ত রেখে স্বইচ্ছায় এমনটি মেনে নেয়,তাহলে সমস্যা নেই।

তবে এক্ষেত্রে বাবা মা অন্যত্রে বিবাহ দিতে চাইলে ছেলে হতে তালাক নেয়া ও ইদ্দত পালন আবশ্যক। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...