আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (3 points)
আস্সালামুআলাইকুম শাইখ,

২০২১ সালে বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমার মা বাসা ভাড়ার টাকা তুলেন ও নিজের কাছে জমা রাখেন | আমরা ২ ভাই বোন | বড় বোন দুলাভাই এর সাথে উপরের তলায় থাকেন | আমি আমার স্ত্রী সন্তানসহ মা এর সাথে থাকি | বাবার মৃত্যুর পর চারতলার কাজ বাবদ অনেক নগদ টাকা খরচ হয়ে যায় | আর বাকি টাকা আম্মুর ব্যাঙ্ক একাউন্ট এ স্থানান্তর করা হয় | আমাদের একটি গাড়ি আছে যেটার বাজারমূল্য এখন ৫/৬ লাখ হতে পারে এবং বাড়ির আসে পাশে বেশ কিছু কাঁঠাল গাছ আছে | বাড়ি ভাড়া বাবদ আমরা মাসে ১,১২,০০০ টাকা কম বেশি হতে পারে পেয়ে থাকি | আমার সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন হলে মা আমাকে সেই টাকা দিয়ে দেন | এ অবস্থায় আমি যাকাতের কথা বললে আম্মা বলেন সংসার খরচে সব টাকা শেষ হয়ে যায়, এটা শুনে আমি একটু অবাক হই কেননা আমি, আমার স্ত্রী এবং মা সহ দেড় বছরের শিশু সন্তান নিয়ে আমাদের সংসার ! এতো খরচ হবার কথা নয় | আবার মাঝে মধ্যে বলেন, তিনি যাকাত দিয়ে দিয়েছেন |এমতাবস্থায়, সম্পত্তি যেহেতু উত্তরাধিকারদের মধ্যে বন্টিত হয়নি, তাহলে কি আমাদের উপর বাবার রেখে যাওয়া সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হবে ? আর যদি ফরজ হয় তাহলে বাড়ি, গাড়ি, নগদ টাকা, গাছের ফল এসব থেকে কিভাবে যাকাতের টাকা হিসাব করে বের করবো ? টাকা পয়সা যেহেতু আমার মা এর কাছে থাকে সেহেতু তিনি আমাদের ভাই বোনদের কাছে হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানালে জাকাতের হিসাব কিভাবে বের করবো, আর সেক্ষেত্রে জাকাত দিতে না পারলে কি গুনাহ হবে ? কুরআন হাদিস থেকে জানালে উপকৃত হবো, জাযাকাল্লাহু খায়রান !

1 Answer

0 votes
by (684,840 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান মতে ব্যাক্তি মারা যাওয়ার পর তো সে তার সম্পত্তির মালিক থাকেনা,সুতরাং তার উপর আর যাকাত আসবেনা।
,
এই সম্পত্তি ওয়ারিশদের মাঝে ভাগ করে দিয়ে সকলের মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে।
তারপর ওয়ারিশগন নিজ নিজ অংশ আর তার অন্যান্য সম্পদ মিলে নেসাব পরিমান হলে যাকাত দিবে। 
নতুবা দিবেনা।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ওয়ারিশদের মাঝে সেই সম্পদ তো এখনো বন্টন করে দেওয়া হয়নি।
বিধায় সেখানে করজ এর মাসয়ালা প্রযোজ্য হবে।
তথা আপনার টাকা,সম্পদ আপনার মায়ের কাছে করজ হিসেবে আছে।
,
এটা যদি নেসাব পরিমান সম্পদ হয়,বা আপনার অন্যান্য সম্পদের সাথে মিলিয়ে এটি নেসাব পরিমান সম্পদ হয়,তাহলে এর উপরে আপনার পক্ষ থেকে যাকাত ফরজ হবে।
,
এটি যেদিন আপনার উসুল হবে,সেদিন বিগত বছর গুলোরও হিসেব করে যাকাত দিতে হবে।

تجب الزكاة في التركة بعد مضي سنة من وفاة المورث، لأن التركة تنتقل ملكيتها من المتوفى إلى الورثة من تاريخ الوفاة، إذا بلغ نصيب الوارث نصابا من النقود أو الحلي من الذهب والفضة، وأما ما سوى ذلك من التركة فليس فيه زكاة إلا إذا أعده الوارث للتجارة، فإنه يبتدئ فيه حول الزكاة من حين أعده لذلك، وأما العقار فلا زكاة فيه إذا كان لغير التجارة، فإذا أُجِّر وجبت الزكاة في أجرته، إذا بلغت نصابا بنفسها أو بضمها إلى ما لديه من النقود أو عروض التجارة وحال عليه الحول، أما إذا كانت التركة إبلا أو غنما أو بقرا فإن كانت للتجارة ففيها زكاة عروض التجارة، وإن كانت للقنية فليس فيها زكاة إلا بشرطين:
أحدهما: بلوغ النصاب.
والثاني : أن تكون سائمة جميع الحول أو أكثره، والسوم هو الرعي، وأما الهبة فالحكم فيها
كالحكم في التركة على ما سبق تفصيله " انتهى .
"فتاوى اللجنة الدائمة" (9/305) .
সারমর্মঃ
মাইয়্যিতের মারা যাওয়ার দিন থেকে নিয়ে এক বছর পূর্ণ হলে সেই মিরাছ সূত্রে পাওয়া সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয়।
যদি সেটি কোনো ওয়ারিশের নেসাব পরিমান হয়।,,, 

শরীয়তের বিধান হলো পাওনা উসূল হওয়ার পর ওই টাকার যাকাত আদায় করা ফরয হয়। তার আগে আদায় করা জরুরি নয়, তবে আদায় করলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩৪৭, ১০৩৫৬

উপরোক্ত ক্ষেত্রে পাওনা উসূল হতে যদি কয়েক বছর সময় অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে উসুল হওয়ার পর বিগত সকল বছরের যাকাত আদায় করা ফরয হয়। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১১৬,৭১২৯,৭১৩১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩৪৬,১০৩৫৬।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত বাড়ির উপর যাকাত আসবেনা।
এক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়ার উপর যাকাত আসবে। গাছের ফল ব্যবসার জন্য হলে তাহা বিক্রয়ের পর তার মুল্যের উপর যাকাত আসবে। নগদ টাকার উপর যাকাত আসবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ন্যায্য সম্পদ উসুল হওয়ার পর যাকাত ফরজ হবে।
সেক্ষেত্রে বিগত বছর গুলোরও যাকাত তখন দিতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...