জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের দৃষ্টিতে দাড়ি রাখা ওয়াজিব আমল। এক মুষ্টির কমে দাড়ি মুন্ডানো বা কাট-ছাট করা হারাম। এটা একটা দীর্ঘস্থায়ী কবীরা গুনাহ।
,
দাড়ি মুন্ডানো হারাম।এবং একমুষ্টি থেকে কম দাড়ি রেখে অবশিষ্ট দাড়ি ছাঁটাই করাও হারাম।
এতে কবীরা গুনাহ হবে।
(জাওয়াহিরুল ফিকহ-৭/১৬০)
عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( خالفوا المشركين وفروا اللحى وأحفوا الشوارب . وكان ابن عمر إذا حج أو اعتمر قبض على لحيته فما فضل أخذه
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।
আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}
,
বিস্তারিত জানুনঃ
,
যদি কোনো ব্যক্তি দাড়ি কেটে-ছেটে কিংবা মুন্ডিয়ে এক মুষ্টির কম রাখে, তাহলে এমন ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে ফাসিক বলে গণ্য। আর, শরীয়তের বিধান হলো, ফাসিক ব্যক্তির ইমামতি করা মাকরূহে তাহরিমী এবং তার পিছনে নামায পড়াও মাকরূহে তাহরিমী।
অতএব, যদি একটি নামাযের জামাতে সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে এমন দাড়িওয়ালা ব্যক্তি বিদ্যমান থাকেন, তাহলে উপরে বর্ণিত ব্যক্তির শরীয়তের দৃষ্টিতে ইমামতি করার অধিকার নাই। যদিও তিনি সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।
,
হ্যাঁ, ওই নামাযের জামাতে যদি কুরআন সহিহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করার কেউ না থাকে, তাহলে প্রয়োজনের তাগিদে বর্ণিত ব্যক্তির ইমামতি ও তার পিছনে নামায পড়া জায়েয হবে। তবে, দাড়ি না রাখার কারণে ওই ব্যক্তির গুণাহ হতেই থাকবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/২০৩, ইমদাদুল মুফতীন-৩২১, আযীযুল ফাতাওয়া-১৪৫, ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া-১/২৪৬।)
,
وأما الأخذ منہا وہي دون ذٰلک دون القبضۃ کما یفعلہ بعض المغاربۃ ومخنثۃ الرجال، فلم یبحہ أحد۔ (شامي، الصوم / مطلب في الأخذ من اللحیۃ ۲؍۲۱۸ کراچی، شامي ۳؍۳۹۸ زکریا، فتح القدیر، الصوم / ما یوجب القتاء والکفارۃ ۲؍۴۱۸ دار الفکر بیروت)
সারমর্মঃ এক মুষ্ঠি থেকে কম দাড়ি রাখা,যেমন কিছু পশ্চিমারা রাখে,সেটা কেহই বৈধ বলেননি।
ویحرم علی الرجل قطع لحیتہ۔ (درمختار مع الشامي ۶؍۴۰۷ کراچی، شامي ۹؍۵۸۳ زکریا)
পুরুষের জন্য দাড়ি কাটা হারাম।
ویکرہ إمامۃ … فاسق۔ (درمختار ۲؍۲۹۸ زکریا)
ফাসেকের ইমামতি মাকরুহ।
,
قولہ وفاسق: من الفسق: وہو الخروج عن الاستقامۃ، ولعل المراد من یرتکب الکبائر کشارب الخمر والزاني وآکل الربا ونحو ذلک۔ (شامي ۲؍۲۹۸ زکریا، ۱؍۵۶۰ کراچی، ہدایۃ ۱؍۱۲۲، مجمع الأنہر ۱؍۱۰۸، قاضی خاں ۱؍۹۱)
সারমর্মঃ ফাসেক বলা হয় যে কবীরা গুনাহে লিপ্ত থাকে,,,,,
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে
لأنہ فاسق وکراہۃ تقدیمہ کراہۃ تحریم کما في الغنیۃ ورد المحتار۔ (حلبي کبیر / إمامۃ الفاسق مکروہۃ تحریماً ۵۱۳، طحطاوي ۳۰۳، شامي ۲؍۲۹۹ زکریا)
সারমর্মঃ তাকে ইমাম বানানো মাকরুহে তাহরিমি।
,
بل مشی في شرح المنیۃ: علی أن کراہۃ تقدیمہ کراہۃ تحریم لما ذکرنا۔ (شامي ۱؍۵۶۰ کراچی، شامي ۲؍۲۹۹ زکریا)
وتجوز إمامۃ الأعرابي … والفاسق کذا في الخلاصۃ إلا أنہا تکرہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۸۵، شامي ۲؍۲۹۸ زکریا)
সারমর্মঃ ফাসেক ব্যাক্তিকে ইমাম বানানো মাকরুহে তাহরিমি।
إمامۃ الفاسق مکروہۃ تحریماً۔ (طحطاوي علی المراقي الفلاح ۳۰۳، شامي ۲؍۲۹۹ زکریا، حلبي کبیر ۵۱۳ لاہور، الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۸۵ کوئٹہ)
ফাসেক ব্যাক্তির ইমামতি মাকরুহে তাহরিমি।
ولو صلی خلف مبتدع أو فاسق فہو محرز ثواب الجماعۃ لکن لاینال مثل ما ینال خلف تقي۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۸۴، الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۲؍۲۵۲ رقم: ۲۳۳۵ زکریا)
সারমর্মঃ বিদআত কারী,ফাসেকের পিছনে নামাজ পড়লে সে জামাআতের সাথে নামাজ পড়ার ছওয়াব পাবে,তবে মুত্তাকি ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার ছওয়াব পাবেনা ।
দাড়ি কাটা কবীরাহ গুনাহ।
আর কবিরাহ গোনাহে লিপ্ত ব্যক্তির পিছনে নামায পড়া মাকরুহে তাহরিমী।
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৬/১০৫
কবিরা গোনাহে লিপ্ত ইমামের পিছনে নামায পড়া মাকরুহ।উক্ত ইমামকে বরখাস্ত করলে যদি ফিৎনা ফাসাদের আশঙ্কা থাকে তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত ইমামের পিছনেই নামায পড়ে নেয়া শ্রেয়।
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৪/৮০
আরো জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দাঁড়ি অন্তত এক মুষ্ঠি পরিমাণ লম্বা রাখা ওয়াজিব। এক মুষ্ঠির চেয়ে ছোট করে রাখা গুনাহ। এ ব্যাপারে চারও মাযহাব একমত। একাধিক হাদীসে দাড়ি লম্বা রাখার নির্দেশ এসেছে। তাই যে ব্যক্তি এক মুষ্ঠির চেয়ে ছোট করে দাড়ি রাখে,বা দাড়িই না রাখে, সে ইমাম হওয়ার যোগ্য নয়। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি ইমাম হওয়ার যোগ্য নয়।
এমন ব্যক্তির পিছনে ইকতিদা করা মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে কাছাকাছি কোনো মসজিদে পরহেযগার ইমাম থাকলে সেখানে গিয়ে নামায পড়তে পারেন।
ফাতাওয়ায়ে তাতারখানীয়াতে এমনটিই আছেঃ
الفاسق إذا کان یؤم القوم ویعجز القوم عن منعہ تکلموا، قال بعضہم في صلاۃ الجمعۃ یقتدي بہ، ولا یترک الجمعۃ بإمامتہ، وأما في غیر الجمعۃ من المکتوبات؛ لا بأس بأن یتحول إلی مسجد آخر ولا یصلي خلفہ، ولا یأثم بذٰلک۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۲؍۲۵۲ رقم: ۲۳۳۵ زکریا)
সারমর্মঃ এক্ষেত্রে অন্য মসজিদে চলে যাওয়া,তার পিছনে নামাজ না পড়া কোনো সমস্যাকর নেয়।
এর কারনে সে গুনাহগার হবেনা।
আপনার কাছাকাছি কোনো মসজিদ না থাকলে এই মসজিদে হলেও জামাতের সাথে নামায পড়া কর্তব্য।
,
কেননা একাকী নামায পড়ার চেয়ে এমন ব্যক্তির পিছনে হলেও জামাতে নামায পড়া উচিত।
প্রকাশ থাকে যে, পরহেযগার মুত্তাকী আলেমের পিছনে নামায পড়তে হাদীসে উৎসাহিত করা হয়েছে।
তাই ইমামের অবর্তমানেও মুত্তাকী, পরহেযগার ব্যক্তির ইমামতি করা উচিত।
তাই দ্রুত একজন পরহেযগার ইমাম নিযুক্ত করুন।
(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৫০; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৫৯, ১৬০)
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির পিছনে নামাজ পড়লে যদিও মাকরুহে তাহরিমি হবে,তবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে,এই নামাজ পুনরায় আবার আদায় করতে হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔُ ﻭَﺍﺟِﺒَﺔٌ ﺧَﻠْﻒَ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﺑَﺮًّﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻭْ ﻓَﺎﺟِﺮًﺍ ﻭَﺇِﻥْ ﻋَﻤِﻞَ ﺍﻟْﻜَﺒَﺎﺋِﺮَ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, ওয়াক্তিয়া ফরয নামায ইমামের পিছনে জামাতের সাথে পড়া ওয়াজিব।চায় ইমাম নেককার হোক বা বদকার হোক।এবং চায় উক্ত ইমাম কবিরাহ গুনাহ করে থাকুক না কেন।
সুনানে আবু-দাউদ;৫৯৪
(কেউ কেউ যেমন ইমাম আলবানী রাহ উক্ত হাদীসকে সনদের দিক দিয়ে দুর্বল বলেছেন)
,