আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in পবিত্রতা (Purity) by (6 points)
ফিকহ দারসে পরিয়েছিল পানির সাথে কোন কিছু মিশলে তা মিশ্রিত পানি হিসেবে গণ্য হবে। যেমন আটা-ময়দা ইত্যাদি এ পানি দিয়ে নাজাসাত দূর করা যাবে কিন্তু পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না এখন পানির সাথে যদি ফিটকিরি বা ব্লিচিং পাউডার মিশাই তাহলে কি এটা মিশ্রিত পানির অন্তর্ভুক্ত হবে? যদি না হয় তবে কোন কোন উপাদান পানির সাথে মেশালে তা মিশ্রিত পানি হিসেবে গণ্য হবে না? যদি ফিটকিরি মেশালে বা ব্লিচিং পাউডার মিশালে তা মিশ্রিত পানির পর্যায়ে পড়ে তবে পানি বিশুদ্ধ করব কিভাবে আমাদের কলের পানিতে অনেক ময়লা আসে
দ্বিতীয় তো আরেকটা জিনিস পড়িয়েছিল যে কোন জায়গায় নাপাকি লাগলে তা অল্প পানিতে তিনবার ধুয়ে ফেলতে অর্থাৎ বালতিতে পানি নিয়ে তাতে ধুয়ে কাপড় থেকে পানি ঝরলে আবার নতুন পানি নিয়ে ধুতে হবে অনুরূপ মোট তিনবার করতে হবে। সাবান ব্যবহারের কোন কথা উল্লেখ করা হয়নি। এরকম করতে গেলে প্রচুর সময়ের অপচয় হয়। তাছাড়া আগের দিনে তো সাবান ছিল না। এখন আমি যদি সাবান দিয়ে কাপড় কেচে এরপর পানিতে দুইবার ধুই আর মাঝে যদি পানি না ঝড়াই তবে কি আমার কাপড় অপবিত্র বলে গণ্য হবে? (উল্লেখ্য দ্বিতীয়বার ধোয়া দেয়ার পরে পানির রং ততটা ঘোলা হয় না পরিষ্কারই থাকে দেখা যায়। বা কাপড় দিয়ে কোন রকমের নাপাকির গন্ধ আসে না রং ও থাকে না)
মাঝে মাঝে কিছু নাপাকিযুক্ত কাপড়ে সাবান মেখে ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে ধুই এটাও কি অপরিষ্কার থাকবে? উল্লখ্য এক্ষেত্রে নাপাকের গন্ধ আসে না বা রঙ থাকে না

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/22732/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

পবিত্র কুরআন পাকের এরশাদ:

إِذْ يُغَشِّيكُمُ النُّعَاسَ أَمَنَةً مِنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِيُطَهِّرَكُمْ بِهِ وَيُذْهِبَ عَنْكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ-

যখন তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেনযাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা।  [সুরাহ আনফাল আয়াত ১১]

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:

وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً طَهُورًا-

এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।  [সুরাহ আল ফুরকান : আয়াত ৪৮]

যে পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যায় তা নিম্নরূপ

১। খালেস পানি। (সুরা : আনফালআয়াত : ১১বুখারিহাদিস : ১৪৬)

খালেস পানি বলা হয় ওই পানিকেযাতে মৌলিক গুণাবলি (রংস্বাদঘ্রাণ) বহাল থাকেকোনো নাপাকির সংমিশ্রণ না হয় এবং অন্য কোনো বস্তু তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার না করে। (ইবনে মাজাহহাদিস : ৫১৪)

খালেস পানি বলতে নিম্নের পানিগুলোকে বোঝানো হয়

১। আসমান থেকে বর্ষিত পানি ২. কূপের পানি ৩. ঝরনার পানি ৪. নদীর পানি ৫. সাগরের পানি ৬. বরফ গলা পানি .৭ কুয়াশার পানি।(আল ফিকহুল হানাফি আল মুইয়াসসার : ১/৩৩)

পবিত্রতা অর্জিত হওয়া ও না হওয়ার দিক থেকে পানি পাঁচ প্রকার১। সাধারণ পবিত্র পানি : যে পানি নিজেও পবিত্র আবার অন্যকেও পবিত্র করতে সক্ষম তা হলো খালেস পানি। (সুরা : আনফালআয়াত : ১১বুখারিহাদিস : ১৪৬)

২। মাকরুহ পানি : যে পানি নিজে পবিত্র এবং তা থেকে পবিত্রতাও অর্জন করা যায়তবে মাকরুহযেমনবিড়ালমোরগছিঁড়ে-ফেড়ে খাওয়া জন্তু বা সাপের উচ্ছিষ্ট পানি। খালেস পবিত্র পানি থাকা অবস্থায় এমন পানি দিয়ে অজু-গোসল করা মাকরুহে তানজিহি। যদি এমন পানি ছাড়া কোনো পানি না থাকেতাহলে এই পানি ব্যবহার করা মাকরুহ হবে না। (ইবনে মাজাহহাদিস : ৩৬২মুসনাদে আহমাদহাদিস : ৮৩২৪)

৩। সন্দেহযুক্ত পানি : এ ধরনের পানি পবিত্রকিন্তু তা দ্বারা পবিত্র হওয়ার বিষয়টি সন্দেহযুক্তযেমনগাধা অথবা খচ্চরের উচ্ছিষ্ট পানি। এই পানি পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেইকিন্তু এর দ্বারা অজু করা ঠিক হবে কি না তাতে সন্দেহ। তাই এমন পানি ছাড়া অন্য পানি না থাকলে তা দিয়ে অজুও করবেতায়াম্মুমও করবে। এ ব্যাপারে পরস্পর বিরোধপূর্ণ হাদিস থাকায় বিষয়টি সন্দেহযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। (সহিহ বুখারিহাদিস : ৩৮৭৭আবু দাউদহাদিস : ৩৩১৫)

৪। ব্যবহৃত পানি : হাদিসের স্পষ্ট বর্ণনার কারণে ব্যবহৃত পানি পবিত্র। তবে হাদিসের ভাষ্য মতেএই পানি দ্বারা অজু হবে না। (বুখারিহাদিস : ৫২৪৪)

ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকেযা হাদাস’ (অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহারকারীর শরীর থেকে আলাদা হওয়ার পর সেই পানি ব্যবহৃত পানি বলে গণ্য হবে।

৫. নাপাক পানি : সামান্য আবদ্ধ পানিযাতে নাপাকির মিশ্রণ ঘটেছেপানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ হোক বা না হোকএমন পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না। (বুখারিহাদিস : ২৩২)

যে পানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ পায় তা কম হোক আর বেশিভাসমান হোক বা আবদ্ধসবই নাপাক পানি হিসেবে গণ্য হবে। (ইবনে মাজাহহাদিস : ৫১৪)


اتفق الفقهاء على أن الماء إذا اختلط به شيء طاهر - ولم يتغير به لقلته - لم يمنع الطهارة به، لأن الماء باق على إطلاقه. كما اتفقوا على أن الماء إذا خالطه طاهر لا يمكن الاحتراز منه - كالطحلب والخز وسائر ما ينبت في الماء، وكذا أوراق الشجر الذي يسقط في الماء أو تحمله الريح فتلقيه فيه، وما تجذبه السيول من العيدان والتبنونحوه كالكبريت وغيره - فتغير به يجوز التطهير به، لأنه يشق التحرز منه أما الماء الذي خالطه طاهر يمكن الاحتراز عنه - كزعفران وصابون ونحوهما - فتغير به أحد أوصافه فقد اختلفوا في حكمه إلى فريقين
ফুকাহায়ে কেরাম একমত যে,যখন পানির সাথে কোনো পবিত্র জিনিষ মিলিত হয়,এবং পানিকে পবিবর্তন করেনা,সে পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।কেননা পানি তার স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।যেমন উলামায়ে কেরাম ঐ মিক্সিং পানি সম্পর্কে বৈধতার হুকুম প্রদানে একমত, যে পানিতে এমন কোনো পবিত্র জিনিষ মিলিত হয় যা থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।যেমনঃ পানিতে জন্ম নেয় উদ্ভিদ বা জল মশৃগাল সহ যাবতীয় পানীর উদ্ভিদের সাথে সংমিশ্রিত পানি।ঠিক তেমনি গাছের পাতা যা পানিতে পড়ে বা বাতাশ বয়ে নিয়ে পানিতে নিক্ষেপ করে।এবং পানি স্রোতে যেই সমস্ত কাঠ ইট বারুদ ইত্যাদি চলে আসে অতঃপর উক্ত পানিকে পরিবর্তন করে ফেলে, তারপরও এমন পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।কেননা এত্থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।তবে ঐ পানি যার সাথে এমন কোনো পবিত্র জিনিষ মিলিত হয়,যার থেকে সহসাই বেঁচে থাকা সম্ভব।যেমন জাফরান, সাবান ইত্যাদি।এর দ্বারা যদি পানির কোনো গুনাগুনে পরিবর্তিত হয়ে যায়,তাহলে তখন পবিত্রতা অর্জন নিয়ে দু'টি মাতামত পাওয়া যায়।হানাফি মাযহাব ও এক বর্ণনায় ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ এর মতে উক্ত পানি নিজেও পবিত্র এবং অন্যকে পবিত্র করতে পারবে।আর মালিকী মাযহাব ও শাফেয়ী মাযহাব এবং এক বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ এর মতে উক্ত পানি নিজে পবিত্র হলেও অন্যকে পবিত্র করতে পারবে না (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৩৯/৩৬৫)

হাশিয়াতুত তাহতাবী নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 و " أما إذا بقي على رقته وسيلانه: فإنه " لا يضر " أي لا يمنع جواز الوضوء به " تغير أوصافه كلها بجامد:" خالطه بدون طبخ " كزعفران وفاكهة وورق شجر
পানি যদি পাতলা এবং বহমানযোগ্য থাকে,তাহলে এই পানি দ্বারা অজু গোসল বৈধ হওয়া নাজায়েয  নয় যদি সেই পানির সমস্ত গুনাগুন কোনো জামিদ জিনিষ(পাক করা নয় এমন) দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যায়।যেমন জাফরান, ফলমূল এবং গাছের পাতা ইত্যাদি দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।(হাশিয়াতুত তাহতাবী-১/২৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 2198

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই/বোন,
পানির সাথে যদি ফিটকিরি বা ব্লিচিং পাউডার মিশানো হয়,সেক্ষেত্রে সেই পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে। সমস্যা হবেনা।  

(০২)
আপনি যেহেতু নাপাক কাপড় ৩ বার নতুন পানিতে ধুয়ে নেননি,এবং প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নেননি,তাই সেই নাপাক কাপড় পাক হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 200 views
0 votes
1 answer 129 views
...