আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
50 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমি এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে বর্তমানে একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। তো এক মেয়েকে আমার অনেক আগে থেকেই পছন্দ বিধায় ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার ঝামেলা শেষ করার পরে একদিন ইস্তেখারা করে মনে হল তার সাথে কথা বলি এই ব্যাপারে। কথা বলার পরবর্তীতে বিষয়টা সে তার পিতা-মাতার উপরে নাস্ত করে (যে, পিতা মাত যা বলবে সেটাই)
তো পরে আরেকদিন ইস্তেখারা করে, ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে ওনার মা ফিরিয়ে দিল এই বলে যে এখন বিয়ের উপযুক্ত সময় না। আগে ক্যারিয়ার গোল সেট করুন স্টাবলিশ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তারপর এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে। আরো বললেন যে, সমবয়সী কিংবা ব্যাচমেট (একই ক্লাসের মধ্যে) ছেলে-মেয়ের বিয়ে তাদের রুচিসম্মত না।
এখন এই জিনিসটা কিভাবে কি করা যায়? আমার কী করনীয়?

ইসলামী শরীয়ত কিংবা ইসলামী আইন শাস্ত্র এই ব্যাপারে কি বলে?


যদি মেহেরবানী করে আমাকে এই ব্যাপারে কিছু বলতেন?
closed

1 Answer

+1 vote
by (616,290 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মা বাবার সর্বদায় আনুগত্য করতে হবে,তাদের কথার নাফরমানী করা যাবেনা।
তাদের সাথে সর্বদা ভালো ব্যবহার করতে হবে।

মাতাপিতার দেখভাল করা ও তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক ফরয ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

أن جاهمة جاء إلى النبي صلى الله عليه وسلم، فقال: يا رسول الله، أردت أن أغزو وقد جئت أستشيرك، فقال: «هل لك من أم؟» قال: نعم، قال: «فالزمها، فإن الجنة تحت رجليها»

“হযরত জাহিমাহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছা করেছি, আপনার কাছে পরামর্শ নিতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তোমার কি মা আছেন?” সাহাবী জবাব দিলেন, “হ্যাঁ!”। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তাঁর সেবাকে নিজের উপর আবশ্যক করে নাও। নিশ্চয়ই তাঁর দুই পায়ের নিচে রয়েছে জান্নাত।” (সুনানে নাসাঈ: ৩১০৪)

হাদিস শরীফে আরও এসেছে,

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : "جاء رجلٌ إلى رسول الله -صلى الله عليه وسلم- فقال : يا رسول الله، من أحق الناس بحسن صحابتي؟، قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أبوك) متفق عليه .

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক সাহাবী এসে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে আমার সর্বাধিক মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার পিতা।”(বুখারী ও মুসলিম)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে মেয়েটির অভিভাবক যেহেতু আপনার সাথে বিবাহের প্রস্তাবে রাজী হচ্ছে না বা এখন বিবাহ দিতে চাচ্ছে না, সুতরাং এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে আপনি স্ত্রীর মোহরানা ও ভরণপোষণ দিতে সক্ষম হলে অন্যত্রে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া।

কোন ভাবেই সেই মেয়েকে বাধ্য করে বিবাহ না করারই পরামর্শ থাকবে।
কারন সেই মেয়েটির জন্য পিতা মাতার কথার অবাধ্য হয়ে বিবাহ বসা জায়েজ হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
যখন কারো সামনে দু’টি রাস্তা থাকে, সে জানেনা কোন রাস্তাটি তার জন্য মঙ্গলজনক, তাহলে এমতাবস্থায় সে ইস্তেখারা করে একটি রাস্তাকে নির্দিষ্ট করবে। 

মানুষ বিভিন্ন সময় একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটিকে গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। কারণ, কোথায় তার কল্যাণ নিহীত আছে সে ব্যাপারে কারো জ্ঞান নাই। তাই সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে কল্যান লাভের জন্য আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তার নিকট সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইস্তেখারা করতে হয় বা সাহায্য প্রার্থনা করতে হয়,যেন তিনি তার সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের উপর স্থীর করে দেন যা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী জন্য উপকারী হয়।

★ আপনি ইস্তেখারা করেছেন, আপনার কাছে সেই মেয়েটি আপনার জন্য পজেটিভ বলে মনে হয়েছে, কিন্তু সেই মেয়েটির পরিবার রাজি না হলে তো তাকে আপনি বিবাহ করতে পারবেন না।
 ইস্তেখারাতে পজেটিভ আসলে যেভাবেই হওক সে মেয়েকে বিবাহ করতেই হবে, বিষয়টা এমন নয়।

এখন যেহেতু সেই মেয়েটির পরিবার রাজি হচ্ছে না, সুতরাং আপনি স্ত্রীর মোহরানা ও ভরণপোষণ দিতে সক্ষম হলে অন্যত্রে বিবাহের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...