আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (14 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
১।আমি এবং আমার স্বামী আমার মাসিক চলা অবস্থায় সহবাস করে ফেলেছি।। আমরা জানতাম মাসিক চলা অবস্থায় সহবাস করা পাপ তাও আমরা উত্তেজনাবসত করে ফেলেছি।।নিজেদের সংযত রাখতে পারি নি।এখন কি আমাদের কাফফরা দিতে হবে?? কাফফারা না দেয়া অবধি আমি কি আমার স্বামীর জন্য হালাল হবো না??

২। স্বামী যদি স্ত্রীর পশ্চাৎদেশে/ পশ্চাৎদ্বারে লিঙ্গ প্রবেশ করিয়ে সংগম করে তাহলে এর জন্য কাফফারা আছে?? কাফফারা থেকে থাকলে যতক্ষণ কাফফারা না  দিবে ততক্ষণ স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল হবে না?

৩। মাসিক অবস্থায় সহবাস এবং স্ত্রীর পশ্চাতদ্বারে লিঙ্গ প্রবেশ করিয়ে সংগম করলে কি ইমান নষ্ট হয়ে যাবে?? (উক্ত ২টি কাজ গুনাহ এবং হারাম জেনেও ইচ্ছাকৃত করলে)

1 Answer

0 votes
by (634,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা হারাম।

পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এ সময়ে সহবাস করতে পরিস্কার নিষেধাজ্ঞা আসছেঃ

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢]

আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও,এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না,যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে,তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [সূরা বাকারা-২২২]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ أَتَى حَائِضًا، أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا، أَوْ كَاهِنًا، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ.

 হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন ঋতুবতীর সাথে মিলিত হয় কিংবা কোন মহিলার পশ্চাৎদ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোন গণকের নিকটে যায়, নিশ্চয়ই সে মুহাম্মাদের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করে’। [তিরমিযী, হাদীস নং-১৩৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৩৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯২৯০]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وَقَعَ الرَّجُلُ بِأَهْلِهِ وَهِيَ حَائِضٌ فَلْيَتَصَدَّقْ بِنِصْفِ دِينَارٍ»

ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে ঋতুবতী অবস্থায় যৌনসঙ্গম করে, তাহলে সে যেন অর্ধেক দীনার দান করে দেয়।
(আবূ দাঊদ ২৬৬, তিরমিযী ১৩৬, ইবনু মাজাহ্ ৬৪০, নাসায়ী ২৮৯, দারিমী ১১৪৫, ১১৪৯, ১১৫১,মিশকাত ৫৫৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে খালেস দিলে তওবা আবশ্যক।  আল্লাহর কাছে ওয়াদা বদ্ধ হবেন,ভবিষ্যতে আর কোনোদিন এহেনে গুনাহ করবেননা।

এক্ষেত্রে কাফফারা আবশ্যক হবেনা।
কাফফারা আদায় না করলেও স্বামীর জন্য আপনি হালাল থাকবেন।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ أَتَى امْرَأَتَهُ فِي دُبُرِهَا فَقَدْ بَرِئَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ ﷺ 

সে তার স্ত্রীর পশ্চাদদ্বারে সংগম করে; সে যেন আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক মুহাম্মদ ﷺ -এর উপর নাযিলকৃত দীন হতে মুক্ত হয়ে গেল। (আবু দাউদ ৩৯০৪)

ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 
لَا يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى رَجُلٍ أَتَى امْرَأَةً فِي الدُّبُرِ 

যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে স্ত্রীর পায়ুপথে যৌন মিলন করে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। (তিরমিযি ১১৬৫)

 আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَلْعُونٌ مَنْ أَتَى امْرَأَتَهُ فِي دُبُرِهَ

 যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে নিতম্বে সহবাস করে সে লা’নত প্রাপ্ত। (আবু দাউদ ২১৬২)

খুযাইমা ইবন সাবিত রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 
إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ لَا تَأْتُوا النِّسَاءَ فِي أَدْبَارِهِنَّ 

 হে মানবমণ্ডলী! আল্লাহ তা’আলা সত্য কথা (প্রকাশের) ব্যাপারে লজ্জা করেন না। তোমরা স্ত্রীলোকদের পশ্চাদ্দারে সঙ্গম করো না। (ইবনু মাজাহ ১৯২৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে খালেস দিলে তওবা আবশ্যক।  আল্লাহর কাছে ওয়াদা বদ্ধ হবেন,ভবিষ্যতে আর কোনোদিন এহেনে গুনাহ করবেননা।

এক্ষেত্রে কাফফারা আবশ্যক হবেনা।
কাফফারা আদায় না করলেও স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল থাকবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...