ইমামের পিছনে জামাতে নামায পড়ার ক্ষেত্রে, মুসল্লির জন্য বাধ্যতামূলক যে তার তাকবীরে তাহরিমা ইমামের তাকবীরে তাহরিমার পরে হবে, অর্থাৎ, তার তাকবীর ইমামের তাকবীরের পরে শেষ হবে। যদি ইমামের তাকবীরে তাহরিমার আগে মুসল্লি তার তাকবীরে তাহরিমা সম্পন্ন করে, তাহলে সেই মুসল্লি ইমামের অনুসরণে জামাতে যোগদান করেননি। তাই ইমাম তাকবীরে তাহরিমা শেষ করার পর পুনরায় তাকবীরে তাহরিমা বলা উচিত। যদি সে আবার তাকবীরে তাহরিমা না বলে এবং এভাবে নামাজ পড়তে থাকে, তাহলে ইমামের অনুসরণে তার নামাজ আদায় করা হয়নি। অতএব, তাকে এই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ، خَشْرَمٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعَلِّمُنَا يَقُولُ " لاَ تُبَادِرُوا الإِمَامَ إِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَالَ وَلاَ الضَّالِّينَ . فَقُولُوا آمِينَ . وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ . فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ "
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও ইবনে খাশরাম (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের তালিম দিতেন এবং বলতেন যে, তোমরা ইমামের থেকে আগে বেড়ে যেও না। তিনি তাকবীর বললে তোমরা তাকবীর বলবে। তিনি وَلاَ الضَّالِّينَ বললে তোমরা آمِينَ বলবে। তিনি রুকু করলে তোমরাও রুকু করবে। তিনি سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বললে তোমরা اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ বলবে।
(মুসলিম ৮১৭)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুক্তাদী প্রত্যেকটি কাজ ইমামের পরে করবে। এ বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে সহীহ সনদে হযরত আবু মুসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রসূল স. ইরশাদ করেন: فَإِنَّ الْإِمَامَ يَرْكَعُ قَبْلَكُمْ، وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ، ইমাম তোমাদের পূর্বে রুকু করবে এবং তোমাদের পূর্বে মাথা উঠাবে। (মুসলিম-৭৮৯)
এ হাদীস থেকে আরো বুঝে আসে যে, ইমামের পূর্বে কেউ তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করে দিলে ইমামের সাথে তার ইক্তিদাও সহীহ হবেনা আর নামাযও সহীহ হবেনা। হযরত সাওরী রহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে,
إِذَا كَبَّرَ الرَّجُلُ قَبْلَ الْإِمَامِ فَلْيُعِدِ التَّكْبِيرَ، فَإِنْ لَمْ يُعِدْ حَتَّى يَقْضِيَ الصَّلَاةَ فَلْيُعِدِ الصَّلَاةَ
যদি কোন ব্যক্তি ইমামের পূর্বে তাকবীর বলে সে যেন পুনরায় তাকবীর বলে। যদি সে পুনরায় তাকবীর না বলে নামায আদায় করে ফেলে, তাহলে সে যেন নামায পুনরায় আদায় করে নেয়। (আব্দুর রাযযাক: ২৫৪৮)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করার জন্য। সুতরাং ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমরা রুকু করবে, যখন ইমাম রুকু থেকে মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে।
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتِ اشْتَكَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَدَخَلَ عَلَيْهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ يَعُودُونَهُ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسًا فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ قِيَامًا فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنِ اجْلِسُوا . فَجَلَسُوا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ " إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا " .
’আয়িশাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসুস্থ হলেন। সহাবাদের কিছু সংখ্যক লোক তাঁকে দেখতে আসলেন। রসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে বসে সলাত আদায় করলেন। তাঁরা তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করতে শুরু করলে তিনি তাদেরকে ইশারায় বললেনঃ তোমরা বসে যাও। তাঁরা বসে গেলেন। সলাত শেষ করে তিনি বললেনঃ অনুসরন করার জন্যেই ইমাম নিযুক্ত করা হয়। সে যখন রুকু ‘তে যাবে তোমরাও তখন রুকু‘তে যাবে। সে যখন মাথা উঠাবে তোমরাও তখন মাথা উঠাবে। সে যখন বসে বসে সলাত আদায় করবে তোমরাও বসে বসে সলাত আদায় করবে।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮১২