আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (3 points)

আমি শুনেছি, মসজিদে আয়েশা (তানইম) থেকে নাকি শুধু মক্কাবাসীরাই ইহরাম বাঁধতে পারে।
এর বাইরে যারা আসে (যেমন বাইরের হাজি বা উমরাহকারি), তারা নাকি তানইম থেকে ইহরাম বাঁধলে তাদের উমরাহ সহিহ হয় না।


এই বিষয়ে আমি জানতে চাই—

  1. প্রথম উমরাহর জন্য বাইরের হাজিদের (বিশেষ করে বাংলাদেশের) কোথা থেকে ইহরাম বাঁধতে হয়?

  2. যারা উমরাহ সম্পন্ন করে বর্তমানে মক্কায় অবস্থান করছেন, তারা কি পরবর্তী (দ্বিতীয় বা অতিরিক্ত) উমরাহর জন্য মসজিদে আয়েশা (তানইম) থেকে ইহরাম বাঁধতে পারবেন?

  3. হানাফি মাযহাব অনুযায়ী এই অবস্থায় তানইম থেকে ইহরাম বাঁধলে উমরাহ সহিহ হবে কি না?

  4. দ্বিতীয় বা অতিরিক্ত উমরাহর জন্য বাইরের হাজিরা কোথা থেকে ইহরাম বাঁধবে?

1 Answer

0 votes
by (704,100 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأَهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَهْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ وَلأَهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ وَلأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنًا فَهُنَّ لَهُنَّ وَلِمَنْ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِ أَهْلِهِنَّ مِمَّنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَمَنْ كَانَ دُونَهُنَّ فَمِنْ أَهْلِهِ حَتَّى إِنَّ أَهْلَ مَكَّةَ يُهِلُّونَ مِنْهَا

হযরত আব্বাস রাঃ বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনাবাসীদের জন্য মীকাত নির্ধারন করেন যুল-হুযায়ফাহ, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফা, ইয়ামেনবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম ও নাজদবাসীদের জন্য ক্বারণ। উল্লিখিত স্থান সমূহ হজ্জ ও ‘উমরাহ’র নিয়্যাতকারী সে স্থানের অধিবাসী ও সে সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য এলাকার অধিবাসীদের জন্য ইহ্রাম বাঁধার স্থান। আর যে মিকাতের ভিতরের অধিবাসী সে নিজ বাড়ি হতে ইহ্রাম বাঁধবে। এমনকি মক্কাবাসীগণ মক্কা হতেই ইহ্রাম বাঁধবে। (১৫২৪) (আঃপ্রঃ ১৪২৯, ইঃফাঃ ১৪৩৫)

https://www.ifatwa.info/95651/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মক্কাবাসী এবং মক্কায় অবস্থানকারীদের নারী-পুরুষ,সুস্থ অসুস্থ সবার জন্যই ওমরার ইহরাম মসজিদে আয়েশা সহ সকল হুদুদে হেরেমের শুরু সীমানা থেকে করাই যথেষ্ট।
সেই হিসেবে বিদেশি হাজিরাও কোন সফরের দ্বিতীয়-তৃতীয় ওমরার জন্য ওখান থেকে ওমরার ইহরাম বাধতে পারবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَهْلَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ، فَكُنْتُ مِمَّنْ تَمَتَّعَ، وَلَمْ يَسُقِ الْهَدْىَ، فَزَعَمَتْ أَنَّهَا حَاضَتْ، وَلَمْ تَطْهُرْ حَتَّى دَخَلَتْ لَيْلَةُ عَرَفَةَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذِهِ لَيْلَةُ عَرَفَةَ، وَإِنَّمَا كُنْتُ تَمَتَّعْتُ بِعُمْرَةٍ. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " انْقُضِي رَأْسَكِ، وَامْتَشِطِي، وَأَمْسِكِي عَنْ عُمْرَتِكِ ". فَفَعَلْتُ، فَلَمَّا قَضَيْتُ الْحَجَّ أَمَرَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ لَيْلَةَ الْحَصْبَةِ فَأَعْمَرَنِي مِنَ التَّنْعِيمِ مَكَانَ عُمْرَتِي الَّتِي نَسَكْتُ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলাম। আমিও তাদেরই একজন ছিলাম যারা তামাত্তুর নিয়্যত করেছিল এবং সঙ্গে কুরবানীর পশু নেয়নি। তিনি বলেনঃ তার হায়েয শুরু হয় আর আরাফা এর রাত পর্যন্ত তিনি পাক হননি। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আজ তো আরাফার রাত, আর আমি হজ্জের সঙ্গে উমরারও নিয়্যত করেছি। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ মাথার বেণী খুলে ফেল, চুল আঁচড়াও আর উমরা হতে বিরত থাক। আমি তাই করলাম। হজ্জ সমাধা করার পর আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুর (রহঃ) কে ‘হাসবায়’ অবস্থানের রাতে (আমাকে উমরা করানোর) নির্দেশ দিলেন। তিনি তানঈম হতে আমাকে ‘উমরা করালেন, যেখান হতে আমি ‘উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। (বুখারী শরীফ ৩১৬.২৯৪) (আ.প্র. ৩০৫, ই.ফা. ৩১০)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★যদি কোনো ব্যাক্তি বাহিরের দেশ থেকে মক্কায় ওমরাহ পালনের জন্য যায়,এবং মিকাত থেকে ইহরাম না বাধে,বরং মক্কায় গিয়ে মসজিদে আয়েশায় পৌছে ইহরাম বেধে থাকে।
তাহলে যতক্ষন পর্যন্ত সে ওমরাহ এর কাজ সম্পন্ন না করবে,তার উপর জরুরি হলো মদিনা মুনাওয়ারা অথবা তায়েফের মিকাতে গিয়ে সেখানে ইহরামের নিয়ত করে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে ফিরে আসবে।

যদি সে এমনটি না করে,আর ওমরাহ এর কাজ সম্পাদন করে,তাহলে তার উপর একটি দম আবশ্যক হবে।

آفاقي مسلم بالغ یرید الحج ولو نفلاً أو العمرة …… وجاوز وقتہ …ثم أحرم لزمہ دم کما إذا لم یحرم فإن عاد إلی میقات ما ثم أحرم ……سقط دمہ الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الحج، باب الجنایات، ۳:۶۲۰- ۶۲۲)، 
সারমর্মঃ 
বহিরাগত মুসলিম বালেগ ব্যাক্তি যদি হজ্জ অথবা ওমরাহ ইচ্ছা করে,এবং মিকাত অতিক্রম করার পর ইহরাম বাধে,তাহলে দম আবশ্যক হবে।
যদি সে কোনো এক মিকাতে ফিরে যায়,অতঃপর ইহরাম বাধে,তাহলে দম রহিত হয়ে যাবে।
দম আর দিতে হবেনা।

★যদি কোনো ব্যাক্তি আগে থেকেই মক্কায় হারাম এলাকায় অবস্থান করে,অথবা হিল এলাকার সীমানার মধ্যে অবস্থান করে,তাহলে সে ইহরাম বাধার জন্য মসজিদে আয়েশায় যাবে।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
বাহিরের হাজীদের জন্য মিকাত থেকে ইহরাম বেধে যেতে হবে।

(হজ বা উমরা পালনকারীকে ইহরামের নিয়ত ব্যতীত এ সব স্থান অতিক্রম করা হারাম।)

মিকাত পাঁচটি:
ক- যুলহুলাইফা: 
খ- আল-জুহফা: 
গ- ইয়ালামলাম: (এটা হল,বাংলাদেশ থেকে হজ্ব উমরাহ কারীর মিকাত)
ঘ- কারনুল মানাযিল: 
ঙ- যাতু ইরক: 

এসব মিকাত উপরোক্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ও যারা এ দিক থেকে হজ ও উমরা আদায় করার জন্য অতিক্রম করবে তাদের মিকাত।
যাদের বাড়ি উপরোক্ত মিকাতের অভ্যন্তরে মক্কার দিকে, তাদের হজ ও উমরার মিকাত নিজের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। 
হ্যা, নিজের বাড়ি বা ইয়ারফোর্ট থেকেও ইমরাম বেধে যাওয়া যায়।

(০২) 
যারা উমরাহ সম্পন্ন করে বর্তমানে মক্কায় অবস্থান করছেন, তারা পরবর্তী (দ্বিতীয় বা অতিরিক্ত) উমরাহর জন্য মসজিদে আয়েশা (তানইম) থেকে ইহরাম বাঁধতে পারবেন।

(০৩)
হানাফি মাযহাব অনুযায়ী এই অবস্থায় ২য় বা অতিরিক্ত উমরাহ এর জন্য তানইম (মসজিদে আঈশা) থেকে ইহরাম বাঁধলে উমরাহ সহিহ হবে। 

(০৪)
বাইরের হাজিরা একই সফরে দ্বিতীয় বা পরবর্তি উমরার জন্য মসজিদে আয়েশা থেকে ইহরাম বাঁধতে পারবে।

আর যদি সে ওমরা শেষ করে হারাম এলাকা ত্যাগ করে বাইরে চলে যায়।

আবার যদি উমরাহ করার জন্য আসে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত কোন একটি মিকাত থেকে তাকে ইহরাম বেধে আসতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...