আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,364 views
in সাওম (Fasting) by (19 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম ওস্তায,

উস্তায রোজা রেখে যদি মেডিকেল টেস্ট করি আর মেডিকেল টেস্টের জন্য যদি এক সিরিঞ্জ রক্ত দেই তাহলে কি সেই রোজা হবে?

দ্বিতীয় প্রশ্ন:রোজা রেখে জরুরি প্রয়োজনে কাওকে ব্লাড(রক্ত)দেওয়া লাগল তখন কি সেই রোজা হবে?

তৃতীয় প্রশ্ন টা হলো উস্তায রোজা রেখে যদি করোনা ভাইরাস এর টিকা নেই তাহলে কি সেই রোজা হবে?

উস্তায চতুর্থ প্রশ্ন টা হলো,রোজা রেখে কোনো কারণ বশত বমি করলে কি রোজা হবে?

পঞ্চম প্রশ্ন টা হলো উস্তায রোজা রেখে ঘুমিয়ে গেলাম আর ঘুম থেকে উঠে দেখলাম স্বপ্নদোষ হয়েছে তাহলে কি সেই রোজা হবে?

ষষ্ঠ প্রশ্ন টা হলো উস্তায,রোজা রেখে ভুল করে মনের ভুলে কিছু খেয়ে ফেললে কি সেই রোজা হবে?

সত্যম প্রশ্ন টা হলো উস্তায:রোজা রেখে কেও যদি তরকারির লবন টেস্ট করে জিব্বার আগা দিয়ে তার পরে থুতু ফেলে ও কুলি করে তাহলে কি সেই রোজা হবে?

অষ্টম প্রশ্ন টা হলো উস্তায রোজা রেখে সারাদিন নামাজ এর পাশাপাশি ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয় শীরিল খারাপ লাগার জন্য তাহলে কি রোজা হবে?

বা সমাজে একটা প্রচলিত কথা আছে উক্ত কাজ শুধু ১ নাম্বার বাদে বাকি গুলোর ক্ষেত্রে প্রায় সময় শুনি যে এই সব করলে নাকি রোজা হলকা হয় কথাটা কতটুকু সত্যি?

প্রশ্ন গুলো সব একত্রে করার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

1 Answer

0 votes
by (582,840 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)রক্ত বের হওয়ার কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে খুব দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে মাকরূহ।(জমহুরের মত- হানাফি,মালিকী,শাফে’য়ী তিনো মাযহাব মতে) (কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/৩৯০)
রক্ত গ্রহণ করলেও রোযা ভঙ্গ হবে না। শিরাপথ উপযুক্ত প্রবেশপথ নয়,তাই। 

(২)রোযা অবস্থায় ইনজেকশন গ্রহণ টিকা গ্রহণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/13998

(৩)ইচ্চাকৃত বমি করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে, তবে অনিচ্ছাকৃত হলে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে অনিচ্ছাকৃত মুখভর্তি বমি ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২০৪)

(৪) স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা স্বপ্নদোষ এমন এক বিষয় যা মানুষের কুদরত ও সামর্থ্যর বাহিরে।মানুষ ইচ্ছা করলেও স্বপ্নদোষকে আটকাতে পারবে না।আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
( لا يكلّف الله نفساً إلا وسعها )
আল্লাহ সামর্থ্যর বাহিরে কাউকে কোনো দায়িত্ব দেননা।সুতরাং স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ফাসাদ হবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/3323

(৫)
কোনো রোযাদার রোযার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে তার রোযা নষ্ট হবে না। তবে রোযা স্মরণ হওয়ামাত্রই পানাহার ছেড়ে দিতে হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ نَسِيَ وَهُوَ صَائِمٌ فَأَكَلَ أَوْ شَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ  رواه البخاري(1933) ، ومسلم (1155) .
যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম ১/২০২)

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال :  من أفطر في شهر رمضان ناسياً فلا قضاء عليه ولا كفارة أخرجه ابن حبان (8/288) ، والحاكم (1/430) وحسنه الألباني في "صحيح الجامع"(6070) .
পানাহার ও স্ত্রী সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়; যদি রোজাদারের এ কথা মনে থাকে যে; সে রোজা রেখেছে। সুতরাং কেউ যদি রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার ও সঙ্গম করে, তবে তার রোজা ভাঙবে না। অবশ্য, স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা থেকে বিরত থাকতে হব। (রদ্দুল মুহতার, ৩য়খণ্ড, ৩৬৫পৃষ্ঠা)

হাদীস শরীফে এসেছে-
-সহীহ মুসলিম ১/২০২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০২

লক্ষ্যণীয় যে
দাঁতের মধ্যভাগে কোন জিনিস ছোলা (চানাবুট) পরিমাণ কিংবা তার ছেয়ে বেশি আঁটকে থাকার পর তা খেয়ে ফেললে। কিংবা ঐ পরিমাণের চেয়ে কম; কিন্তু মুখ থেকে বের করে পুনরায় খেলে,রোজা ভেঙে যাবে। (দুররে মুখতার, ৩য় খণ্ড, ৩৯৪ পৃষ্ঠা)

দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীর নিচে নেমে গেলে এবং রক্ত যদি থুথু অপেক্ষা বেশি কিংবা সমান অথবা কম হয় এবং সেটার স্বাদ কণ্ঠে অনুভূত হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। যদি কম থাকে, আর স্বাদও কণ্ঠে অনুভূত না-হয়, তাহলে এমতাবস্থায় রোজা ভাঙ্গবে না। (দুররে মুখতার, ৩য়খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৮)

নাকের ছিদ্র দিয়ে ঔষধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙ্গে যাবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০৪) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/10689

(৬)রোজা রেখে কেও যদি তরকারির লবন টেস্ট করে জিব্বার আগা দিয়ে তার পরে থুতু ফেলে ও কুলি করে তাহলে তার রোযায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। বিনা প্রয়োজনে করা মাকরুহ। 
 তরকারির স্বাদ পরখ করতে গিয়ে কেউ যদি অনিচ্ছায় কিছু খেয়ে ফেলে , তাহলে কাফফারা আসবে না। আর রোযার কথা ভুলে গিয়ে কেউ কিছু খেয়ে পেললে,তার রোযা ভঙ্গ হবে না। 

(৭)রোজা রেখে সারাদিন নামাজ এর পাশাপাশি ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যদি অসুস্থতার জন্য হয়ে থাকে,তাহলে কোনো অুসবিধে নাই। তবে বিনা প্রয়োজনে এমনটা করা মাকরুহ।  

(৮) জ্বী বিনা প্রয়োজনে করলে রোযা হালকা হয়, অর্থাৎ মাকরুহ,তথা পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যায় না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 110 views
...