ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)রক্ত বের হওয়ার কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে খুব দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে মাকরূহ।(জমহুরের মত- হানাফি,মালিকী,শাফে’য়ী তিনো মাযহাব মতে) (কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/৩৯০)
রক্ত গ্রহণ করলেও রোযা ভঙ্গ হবে না। শিরাপথ উপযুক্ত প্রবেশপথ নয়,তাই।
(৩)ইচ্চাকৃত বমি করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে, তবে অনিচ্ছাকৃত হলে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে অনিচ্ছাকৃত মুখভর্তি বমি ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২০৪)
(৪) স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা স্বপ্নদোষ এমন এক বিষয় যা মানুষের কুদরত ও সামর্থ্যর বাহিরে।মানুষ ইচ্ছা করলেও স্বপ্নদোষকে আটকাতে পারবে না।আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
( لا يكلّف الله نفساً إلا وسعها )
আল্লাহ সামর্থ্যর বাহিরে কাউকে কোনো দায়িত্ব দেননা।সুতরাং স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ফাসাদ হবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3323
(৫)
কোনো রোযাদার রোযার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে তার রোযা নষ্ট হবে না। তবে রোযা স্মরণ হওয়ামাত্রই পানাহার ছেড়ে দিতে হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ نَسِيَ وَهُوَ صَائِمٌ فَأَكَلَ أَوْ شَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ رواه البخاري(1933) ، ومسلم (1155) .
যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম ১/২০২)
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : من أفطر في شهر رمضان ناسياً فلا قضاء عليه ولا كفارة أخرجه ابن حبان (8/288) ، والحاكم (1/430) وحسنه الألباني في "صحيح الجامع"(6070) .
পানাহার ও স্ত্রী সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়; যদি রোজাদারের এ কথা মনে থাকে যে; সে রোজা রেখেছে। সুতরাং কেউ যদি রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার ও সঙ্গম করে, তবে তার রোজা ভাঙবে না। অবশ্য, স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা থেকে বিরত থাকতে হব। (রদ্দুল মুহতার, ৩য়খণ্ড, ৩৬৫পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফে এসেছে-
-সহীহ মুসলিম ১/২০২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০২
লক্ষ্যণীয় যে
দাঁতের মধ্যভাগে কোন জিনিস ছোলা (চানাবুট) পরিমাণ কিংবা তার ছেয়ে বেশি আঁটকে থাকার পর তা খেয়ে ফেললে। কিংবা ঐ পরিমাণের চেয়ে কম; কিন্তু মুখ থেকে বের করে পুনরায় খেলে,রোজা ভেঙে যাবে। (দুররে মুখতার, ৩য় খণ্ড, ৩৯৪ পৃষ্ঠা)
দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীর নিচে নেমে গেলে এবং রক্ত যদি থুথু অপেক্ষা বেশি কিংবা সমান অথবা কম হয় এবং সেটার স্বাদ কণ্ঠে অনুভূত হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। যদি কম থাকে, আর স্বাদও কণ্ঠে অনুভূত না-হয়, তাহলে এমতাবস্থায় রোজা ভাঙ্গবে না। (দুররে মুখতার, ৩য়খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৮)
(৬)রোজা রেখে কেও যদি তরকারির লবন টেস্ট করে জিব্বার আগা দিয়ে তার পরে থুতু ফেলে ও কুলি করে তাহলে তার রোযায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। বিনা প্রয়োজনে করা মাকরুহ।
তরকারির স্বাদ পরখ করতে গিয়ে কেউ যদি অনিচ্ছায় কিছু খেয়ে ফেলে , তাহলে কাফফারা আসবে না। আর রোযার কথা ভুলে গিয়ে কেউ কিছু খেয়ে পেললে,তার রোযা ভঙ্গ হবে না।
(৭)রোজা রেখে সারাদিন নামাজ এর পাশাপাশি ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যদি অসুস্থতার জন্য হয়ে থাকে,তাহলে কোনো অুসবিধে নাই। তবে বিনা প্রয়োজনে এমনটা করা মাকরুহ।
(৮) জ্বী বিনা প্রয়োজনে করলে রোযা হালকা হয়, অর্থাৎ মাকরুহ,তথা পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যায় না।