আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,131 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)

بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ

মুহতারাম আসসালামু'আলাইকুম,

সালাত বিষয়ক কিছু জরুরি প্রশ্নের উত্তর জানার ছিল। 

১. মাগরিবের সালাতের ওয়াক্ত শেষ হয় কখন? 

২. একাকী সালাত আদায়ের সময়ে কি ইকামত দেওয়ার নিয়ম আছে? যদি নিয়ম না থাকে, কেও যদি একাকী সালাত আদায়ের সময়ে ইকামত দেয় এটা কি বিদ'আত হবে? 

৩. মাথায় টুপি না দিয়ে সালাত আদায় করলে কি সালাত হবে? 

৪. কেও যদি শরীরে গামছা জড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার কি সালাত হবে (যদিও তার অনেক জামাকাপড় থাকে)? 

1 Answer

0 votes
by (708,320 points)
বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
(১)সূর্যোদয়ের পর পশ্চিমাকাশ লালবর্ণের হয়ে যায়।এই লালবর্ণ দূর হওয়ার পর আকাশ আবার সাদা হয়ে যায়।এই সময়ের সাদা আকাশকে শাফাক্ব বলা হয়।এই শাফাক্ব যতক্ষণ না ডুবছে,ততক্ষণ পর্যন্ত মাগরিবের ওয়াক্ত বাকী থাকবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-১৭৯৬

(২)
জামাত হয়ে যাওয়ার পর মুনফারিদের জন্য মসজিদে আযান ইকামত দ্বারা নামায পড়া মাকরুহ।জামাতের পূর্বে উচ্ছস্বরে মাকরুহ।(আহসানুল ফাতাওয়া২/২৭৯)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-১৭২৫

(৩/৪)
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাধারণ নিয়ম ছিলো,মাথা ঢেকে নামায পড়া।এজন্য ইবনুল কাইয়্যিম রাহ বলেন,হুজুর সাঃ 'মাওয়াব' নামী পাগড়ীকে কখনো টুপির উপর পরিধান করতেন।আবার কখনো শুধুমাত্র টুপি পড়তেন।পাগড়ী পড়তেন না।(যাদুল মা'আদ-১/১৩৫)এজন্য ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,টুপি থাকা সত্তেও অলসতা করে টুপি ছাড়া নামায পড়লে নামায মাকরুহ হবে।ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وتكره الصلاة حاسرا رأسه إذا كان يجد العمامة وقد فعل ذلك تكاسلا أو تهاونا بالصلاة
পাগড়ী থাকাবস্থায় মাথা খোলা রেখে অলসতা ও পাগড়ীকে তুচ্ছ জ্ঞান রেখে নামায পড়া মাকরুহ।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০৬)

তবে যদি টুপি খুজতে গিয়ে জামাত হারানোর ভয় হয়,তাহলে এমন পরিস্থিতে টুপি ছাড়াও নামায পড়ার রুখসত থাকবে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে শুধুমাত্র একটি কাপড় পরিধান করে নামায পড়া প্রমাণিত রয়েছে।

হযরত আবু সালমাহ রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে
عن عمر بن أبي سلمة، «أن النبي صلى الله عليه وسلم صلى في ثوب واحد قد خالف بين طرفيه»
রাসূলুল্লাহ সাঃ একটি কাপড় দ্বারা শরীরকে লেপ্টিয়ে তথা কাপড়ের এক অংশ দ্বারা লুঙি বানিয়ে এবং অপর অংশ দ্বারা চাদর বানিয়ে নামায পড়েছেন।(সহীহ বোখারী-৩৫৪)উক্ত হাদীসের অন্য এক ব্যখ্যায় বলা হয়,যে এক কাপড় বলতে রাসূলুল্লাহ সাঃ শুধুমাত্র লুঙ্গি পড়েই নামায পড়েছেন।

কিন্তু মনে রাখতে হবে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর উক্ত আ'মল ঘটনাচক্রে একবারই ছিলো।নতুবা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাধারণ আ'মল মাথা ঢেকেই নামায পড়া ছিলো।এ জন্য মাথা খুলা রেখে নামায পড়ার অভ্যাস করা যাবে না।

রাসূলুল্লাহ সাঃ জীবনে শুধুমাত্র একবারই এক কাপড় দ্বারা নামায পড়েছেন।প্রকাশ থাকে যে,এক কাপড় বলতে শুধুমাত্র লুঙ্গি পড়েই হয়তো নামায পড়েছেন।যা নিম্নোক্ত হাদীস থেকেই বুঝা যায়।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أبي هريرة رض ان رجلا قال ; يارسول اللّٰه! يصلي الرجل في الثوب الواحد؟ فقال النبي ص أو لكلكم ثوبان؟
এক সাহাবি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করল,হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! মানুষ কি একটি কাপড়ে নামায পড়তে পারবে? তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ জবাবে বললেন,তোমাদের সবার কি দু'টি কাপড় রয়েছে?(কানযুল উম্মাল-২১৭০৯)

রাসূলুল্লাহ সাঃ এর উক্ত আ'মল এ কথার প্রতিই ইঙ্গিত করে যে,টুপি ছাড়াও নামায আদায় হবে।যদি কারো কাছে মাথা ঢাকার মত কিছু না থাকে, তাহলে সে নামাযকে ছাড়বে না।বরং সে নামাযকে যেকোনো হালতে পড়ে নিবে।মাথা খুলা রেখে নামায পড়া উত্তম সেটা ঐ হাদীস প্রমাণ করবে না।রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাধারণ আ'মল টুপি বা পাগড়ি পরিধান করে নামায পড়াই ছিলো।

মোটকথাঃ
নামাযের সুন্নত তরিক্বা সেটাই যা রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে সর্বদা প্রমাণিত রয়েছে।অর্থাৎ শরীর কাপড় দ্বারা ঢেকে এবং টুপি বা পাগড়ি দ্বারা মাথা ঢেকে নামায পড়া।(কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/২২৩)
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 248 views
...