আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,003 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
কোনো মেয়ে যদি ভীষণভাবে স্বামী কাছে জুলুম, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় প্রায় ৩ বছর ধরে,অনেক বার পারিবারিক ভাবে মিমাংসা করেও সমাধান হয়নি।


বরং স্বামীর নির্যাতন আরো বেড়েছে,এখন সমস্যা হচ্ছে এই লোক সারাদিন নিজের জব নিয়ে ব্যস্ত,স্ত্রীকে তার চাহিদা মেটানো ছাড়া আর কোনো কাজেই লাগে না,আর সে এই স্ত্রী তালাক দিতে ও রাজি না,আবার দূরে থাকতে দিতে ও রাজি না,সে চায় তার বউ তার কাছে থেকে তার সব চাহিদা মেটাবে আর সে অমানুষের মত ব্যবহার করবে।


এখন এই স্ত্রীর জন্য আপাতত তালাক না দিয়ে স্বামীর বিনা অনুমতিতে দূরে থাকা যাবে কিনা কয়েক মাস যাতে স্বামী তার স্ত্রীর ভালোবাসা বোঝে, যাতে একটু  তার বউয়ের সাথে ভালো ব্যবহার করে,যাতে আর মানসিক নির্যাতন না করে

( উল্লেখ্য মেয়েটিও তার বরকে ভালোবাসে, কিন্তু তার জঘন্য ব্যবহারে মেয়েটি মানসিক ভাবে অসুস্থ এখন)?

এই মেয়েটির জন্য তালাক ছাড়া কি স্বামীর বিনা অনুমতিতে আলাদা থাকার আসলেই ব্যবস্হা আছে কোনো??

1 Answer

0 votes
by (697,400 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

https://www.ifatwa.info/990 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে, 

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!

আল্লাহ তা'আলা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বিশেষকরে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,আপন স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার করতে(সূরা নিসা-১৯)।স্ত্রীর সকল হাজত পূর্ণ করা এই সদ্ব্যবহারের আওতাধীন।

সুতরাং যেভাবে স্বামীর আহবানে সাড়া দেয়া স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব।ঠিকতেমনি স্ত্রীর আহবানেও সাড়া দেয়া স্বামীর জন্য উচিৎ ও তার নৈতিক দায়িত্বের আওতাধীন।যদিও সাধারণ পরিস্থিতিতে ওয়াজিবের হুকুম আরোপিত হয় না।কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্বামী সাড়া না দিলে, স্ত্রী গোনাহে পতিত হতে পারে,এমন সম্ভাবনা রয়েছে অনদিকে স্বামীর শরয়ী কোনো উযরও নেই,তাহলে এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্যও সাড়া দেয়া দিয়ানাতান তথা নৈতিকভাবে ওয়াজিব হবে।(দিয়ানাতান এর অর্থ হল, এমন হক যে হকের ইস্যু তৈরী করে কোর্টে বিচার দায়ের করা যায় না)


হযরত উমর রাযি নিজ মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে,একজন স্ত্রী তার স্বামীর সঙ্গহীন ভাবে কতদিন ধর্য্য ধরতে পারে?উত্তরে উম্মুল মু'মিনিন হযরত হাফসা রাযি চার মাসের কথা বলেছিলেন।

সুতরাং এত্থেকে বুঝা গেল যে,স্ত্রীর ধর্য্যহীন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্য স্ত্রীর ডাকে সাড়া দেয়া স্বামীর উপর নৈতিক ওয়াজিব।স্বামী পাশে থাকাবস্থায় সহবাসহীন থাকা স্ত্রীর হয়তো এক দিন/সাপ্তাহও অসম্ভব হতে পারে?তাই স্বামীর শারীরিক সক্ষমতা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে সঙ্গ দিয়ে স্ত্রীর প্রয়োজনকে পূর্ণ করা নৈতিকভাবে স্বামীর উপর ওয়াজিব হবে।


মোটকথাঃ

জিহাদ বা এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ শরয়ী উযরের কারণের স্বামী তার স্ত্রী থেকে সর্বোচ্ছ চার মাস পর্যন্ত দূরে থাকতে পারবে।কিন্তু বিশেষ কোনো উযর না থাকলে স্বামীর শারিরিক সক্ষমতা এবং শারিরিকভাবে উদ্যোমী ও উৎফল্ল থাকাবস্থায় স্ত্রীকে পরিতৃপ্ত করা পর্যন্ত স্ত্রীকে সঙ্গ দেয়া স্বামীর উপর নৈতিকভাবে ওয়াজিব। প্রশ্ন হতে পারে?যেভাবে স্বামীর ডাকে স্ত্রীকে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয় সেভাবে কেন স্ত্রীর ডাকে স্বামীকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয় না? কেনইবা দিয়ানাতান ওয়াজিব বলা হয়?উত্তরে বলা হবে যে,

স্ত্রীকে আল্লাহ এমনভাবে তৈরী করেছেন যে,সে যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বামীর ডাকে সাড়া দিতে পারে।এক্ষেত্রে সে শরীরিকভাবে উদ্যোমী থাকুক বা নাই থাকুক,সে পারে।কিন্তু স্বামীকে আল্লাহ তা'আলা এমনভাবে তৈরী করেছেন যে,তার শারীরিক উদ্যোমতা ও মনে প্রফুল্লতা না থাকলে সে স্ত্রীর ডাকে সাড়া দিতে পারে না।এজন্যই মূলত এই পার্থক্য।তাছাড়া তার অন্য স্ত্রীও থাকতে পারে বা জিহাদ ইত্যাদির মত গুরুত্বপূর্ণ কাজও তার হাতে থাকতে পারে।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন! 

আপনি স্বামীকে স্ত্রীর মূল্যায়ন বুঝাতে এবং তাকে হেদায়তের রাস্তায় নিয়ে আসতে কিছূদিন স্বামী থেকে দূরে থাকতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (697,400 points)
–1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...