আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
134 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
সম্প্রতি আমার পরিচিত এক ভাই ফেসবুকে নিম্নোক্ত পোস্ট করেছে যা হুবহু তুলে ধরছি। সেই সাথে কমেন্টের স্ক্রিনশট ও তুলে ধরছি।

সুখবর সুখবর সুখবর!!.
মেসি কাকা শেষ বয়সে এসে একটা কাপ পাইছে। কাকা জানিয়েছেন , বাংলাদেশের কিছু আ*ল দের ছাড়া এই জয় কোন দিনও সম্ভব ছিল না। তাদের সাপোর্টে খুশি হয়ে, আনন্দে আত্মহারা হয়ে কাকা ঘোষণা দিছে, বিবিএ-এমবিএ করে বা অনার্স-মাস্টার্স করে সাথে সাথেই কাকাকে সিভি সেন্ড করতে। মেসি কাকা তাদের জন্য আর্জেন্টিনা শহরে চাকরির ব্যবস্থা করবেন। (বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া)।
সো গাইজ। দেরি না করে নিচের ইমেইল এ সিভি সেন্ড করে দাও। আর লোফে নাও লোভনীয় চাকরি।।
*Emails are not allowed*

#just_for_fun

আমার প্রশ্নঃ

১. আমি সম্প্রতি একটি হাদিস থেকে জানতে পেরেছি যে উপহাসের জন্য যারা মিথ্যা বলে তাদের কে রাসুল (সা.) অভিশাপ দিয়েছেন। উক্ত অভিশাপ কি এই পোস্টকারীর উপর আপতিত হবে?


হাদিসটি হলঃ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ فَيَكْذِبُ لِيُضْحِكَ بِهِ الْقَوْمَ وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ ‏"‏ ‏.‏

বাহয ইবনু হাকীম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমার পিতা তার পিতার সূত্রে আমাকে হাদীস বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মানুষকে হাসানোর জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস।
 
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯৯০
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD


২. এই পোস্ট দেখে রাগ হওয়ায় আমি এই পোস্টের কমেন্টে রাসুল (সা.) এর অভিশাপ সম্বলিত হাদিস কমেন্ট করেছি। তা কি সঠিক হয়েছে? উল্লেখ্য রাগের কারণ ছিল মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মজা করা।


৩. হাদিস কমেন্ট করার পরেও ওই ভাই মানতে চান না। উনার কথা হল উনি মজা করে পোস্ট করেছেন। সব জায়গায় কুরান হাদিসের রেফারেন্স টেনে  আনা উনার পছন্দ না।  আমি উনার আর আমার কমেন্ট হুবহু কপি করে দিচ্ছিঃ

আমিঃ হাদিসের স্ক্রিনশট পোস্ট করলাম

ভাইঃ fun na bujhle dure thaka উছিত

আমিঃ তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন ফান করে যা খুশি বলা যায়? সব কিছুর ই একটা সীমা আছে। সীমার মধ্যে থাকা উচিত

ভাইঃ যা খুশি বলা হয় নাই কোন জাগায় ই। পোস্ট এর নিচে হ্যাশট্যাগ দেয়া হয়েছে। আর সব জাগাতেই পবিত্র কুরআন - হাদিসের রেফারেন্স দেয়া ঠিক না। আমি ব্যক্তিগত ভাবেও এটা পছন্দ করি না। ফেসবুক এ একটা ফানি পোস্ট এর মধ্যে অবশ্যই হাদিসের রেফারেন্স দেয়া ঠিক নয়।

আমিঃ আপনাকে জানানো উদ্দেশ্য ছিল। আর কুরান হাদিসের  রেফারেন্স কোথায় দেয়া যাবে আর কোথায় দেয়া যাবেনা সেইটা ঠিক করার আমরা কেউ না। আর মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একটা হিউজ পপুলেশন কে হার্ট করে ফান করাও কোন দিক দিয়ে ঠিক না

ভাইঃ মিথ্যা আর মজা করার মাঝে বড় ব্যবধান আছে। সেটা আগে বুঝতে হবে। এইটা না বুঝলে সে হার্ট হবে।  জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
উপরোক্ত কনভারসেশন এর আলোকে আমার প্রশ্নঃ

আমি কি ভুল বলেছি? ভাই কি হাদিস কে অস্বীকার বা অগ্রাহ্য করেছেন? ভাই কি হাদিস জানার পরেও যেহেতু নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন এর মাধ্যমে কি কুফরি করেছেন?
৪. মজা করে মিথ্যা বলা আমার কাছে খুবই জঘন্য আর নিকৃষ্ট কাজ মনে হয়৷ এধরণের কাজ দেখলেই আমার রাগ উঠে যায়। আমার মনোভাব কি ঠিক?

1 Answer

0 votes
by (710,920 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
https://www.ifatwa.info/1719 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেন:
«وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস!’’(তিরমিযী-২৩১৫; আবূ দাউদ-৪৯৯০)

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বর্জন করে, মস্কারা বা কৌতুক করতেও মিথ্যা বলে না, তার জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে একটি বাড়ির জন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।’’ (আবূ দাউদ হাদীস নং ৪৮০০)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
উক্ত ব্যক্তির জন্য এভাবে কটাক্ষ করা কখনো জায়েয হয়নি।আপনার দাওয়াত ও তাবলীগ তথা সৎ কাজের আদেশ প্রদান হেকমত শূণ্য হিসেবেই আপাতত দৃষ্টিগোছর হচ্ছে।
কেননা দাওয়াতের পূর্বে দাওয়াত গ্রহণের নিচ্ছয়তা এবং পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...