আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,509 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১.হস্তমৈথুন কারী কি যিনাকারী/ব্যাভিচারীর অন্তর্ভুক্ত? হস্তমৈথুন কারীর পরকালীন শাস্তি কিরূপ হবে?এর কোন কি দুনিয়াবি ক্ষতি আছে?আর এ থেকে তাওবাহ করবে কিভাবে?

২.ছবি তোলা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।প্রয়োজনীয় বিষয়ে(এনআইডি,জন্মনিবন্ধন,ভার্সিটি এর কাজে) কি ছবি তোলা যাবে?আর সাধারণভাবে ছবি তোলা সম্পর্কেও জানতে চাচ্ছি যেমনঃ(ঘুরতে গিয়ে ছবি তোলা/কোন দর্শনীয় স্থানের ছবি তোলা/এমনি সেলফিতে ছবি তোলা/রেস্টুরেন্টে গিয়ে ছবি তোলা/ছবিতে কোন স্মৃতি আবদ্ধ করে রাখা) এগুলো কি করা যাবে?সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম(ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম) এ কি নিজের ছবি আপলোড করা যাবে?আর আগে যেগুলো ছবি তোলা হয়েছে ওগুলো কি ডিলিট করতে হবে নাকি রেখে দিবে?বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
যেনা অনেক উঁচু স্তরের গুনাহ।
হস্তমৈথুন করা যদিও বড় গুনাহ,তবে যেনা থেকে নিম্নস্তরের গুনাহ।
এই জন্যই কিছু ইসলামি স্কলারগন যেনায় লিপ্ত হওয়ার প্রবল আশংকা হলে হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত করার অনুমতি প্রদান করে থাকেন।
হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্তমৈথুন
করা কোরআন সুন্নাহ ও সুস্থ বিবেকের নির্দেশ মতে হারাম ও কবিরা গুনাহ।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ لِفُرُوۡجِهِمۡ حٰفِظُوۡنَ ۙ﴿۵﴾
আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী।
(সুরা মুমিনুন ০৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عبد الله بن عمرو بن العاص عن النبي صلى الله عليه وسلم سبعة لا ينظر الله عز وجل إليهم يوم القيامة ولا يزكيهم ويقول : ادخلوا النار مع الداخلين : الفاعل والمفعول به ، والناكح يده ، وناكح البهيمة ، وناكح المرأة في دبرها ، وناكح المرأة وابنتها ، والزاني بحليلة جاره ،والمؤذي لجاره حتى يلعنه
“সাত শ্রেণীর লোকের উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষণ করেন, কিয়ামতের দিন এদের দিকে তাকাবেন না এবং এদেরকে জাহান্নামে প্রবেশের আদেশ দিবেন। এরা হল–সমকামী, হস্তমৈথুনকারী, জীবজন্তুর সাথে সঙ্গমকারী, স্ত্রীর সঙ্গে পুংমৈথুনকারী, কোন মহিলা ও তার কন্যাকে একসাথে বিবাহকারী, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারকারী এবং প্রতিবেশীকে এমন কষ্টদানকারী যে, যার কারণে সে তাকে অভিশাপ দেয় । তবে এরা যদি তাওবা করে তাহলে তারা সবাই হয়ত ক্ষমা পেতে পারে।” (বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান৭/৩২৯)

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: يَجِيءُ النَّاكِحُ يَدَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَدُهُ حُبْلَى 
হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ বলেন, কিয়ামতের ময়দানে হস্তমৈথুনকারী এমনভাবে উঠবে যে, তার হাত গর্ভবতী থাকবে। [শুয়াবুল ঈমান, বর্ণনা নং-৫০৮৭]

أخبرنا أحمد بن محمد الصوفي، أخبرنا أبو أحمد بن عدي، حدثنا عمر بن عبد الرحمن أبو حفص السلمي، حدثنا محمد بن المنهال، حدثنا عبد الله بن بكر السهمي، حدثنا عباد بن منصور، عن عكرمة، عن ابن عباس عن النبي - صلى الله عليه وسلم - في الذي يعمل عمل قوم لوط، وفي الذي يؤتى في نفسه، وفي الذي يقع على ذات محرم، وفي الذي يأتي البهيمة، قال: "يقتل".
(শুয়াবুল ঈমান।)

★সুতরাং সকলের জন্য উচিত যে আগে  এই জঘন্য কাজ ছেড়ে দিতে হবে।
শুধু রোযা রাখা হলো,কিন্তু হস্তমৈথুন চালিয়ে যাওয়া হলো,এটি ঠিক নয়।
এটি একটি মারাত্মক রোগ, যেটি পুরোপুরি ছাড়া অনেকের কাছে খুবই মুশকিল।

★নিচের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। 

নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে। 

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)

একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলল, অমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, সে কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই বলল, হ্যাঁ, পড়ে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)
,
হস্তমৈথুনের বিধান সম্পর্কে জানুনঃ 
,
হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার বিস্তারিত আমল জানুনঃ
,
(০২)
ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, 
প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।  

হাদিস শরীফে এসেছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)

আরো জানুনঃ

প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সব ইমাম ও ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও সমকালীন মুফতিদের মতে হারাম। 

তবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট তৈরি বা এজাতীয় বিশেষ প্রয়োজনে ফটো তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা যায়। (ফিকহি মাকালাত; তকি উসমানী : ৪/১২৩)

অহেতুক ছবি তোলা জায়েজ নয়। কিন্তু বাধ্য হলে জায়েজ আছে। 

قَاعِدَة الضرورات تبيح الْمَحْظُورَات

তীব্র প্রয়োজন হারামকে হালাল করে দেয়। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭০] 

قَاعِدَة الضرورات تقدر بِقَدرِهَا

জরুরত তার সীমায় সীমিত থাকবে। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭১] 

ছবি তোলা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মোবাইলে এসব ছবি তোলার বিধান  সংক্রান্ত উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
কিছু উলামায়ে কেরামগন পুরোপুরি নাজায়েজ বলেছেন।
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে এটি ছবির আওতাধীন নয়,বলে জায়েজ আছে। 
,
সতর্কতামূলক ছবি না তোলাই উচিত।
সেই হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি আপলোড এর বিধান একই হবে।
,
তবে মহিলাদের ছবি আপলোড কোনো ছুরতেই জায়েজ নেই।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...