আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,779 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
edited by
১) আপন চাচাতো/মামাতো/খালাতো বোনের/ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত যুক্তিসমূহ কী ঠিক?

i. নবী যুগে মুসলিম সংখ্যা কম ছিল, তাই সে যুগে এমন বিয়ে যায়েজ থাকলেও বর্তমানে জায়েজ নয়

ii. নবীর জন্য যেমন ১১ টা বিয়ে জায়েজ ছিল, কিন্তু আমাদের জন্য না, সেরকম আলী রা. - ফাতেমা রা. এর জন্য এমন বিয়ে জায়েজ হলেও আমাদেএ জন্য জায়েজ নয়

iii. তালাক যেমন নিকৃষ্ট জায়েজ, এমন বিয়েও সেরকম নিকৃষ্ট

২) দ্বীনদারিতার কারনে এরকম কাউকে বিয়ে করতে চাইলে সেটা কি আমার নিকৃষ্ট রূচির পরিচয়? (তার দ্বীনদারিতা ঠিক না থাকলে রাকে বিয়ে করতে চাইব না, এমন মানসিকতা আছে)

1 Answer

+1 vote
by (57,120 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

সুরা নিসার ২৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿ۙ۲۳

তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজীদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র করা(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,

, قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

নিজ ভাইয়ের মেয়ে, নিজ বোনের মেয়ে মাহরাম।তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ নেই।তবে চাচাতো ভাই/বোনের মেয়ে,খালাতো ভাই/বোনের মেয়ে,ফুফাতো ভাই/বোনের মেয়ে,মামাতো ভাই/বোনের মেয়ে মাহরাম নয়।তাদের সাথে পর্দা করতে হবে।তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ আছে।

এমনকি আপন চাচাতো বোন,আপন মামাতো বোন,আপন খালাতো বোন,আপন ফুফাতো বোনকেও বিবাহ করা জায়েজ আছে।আলি রাঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ এর চাচাতো ভাই ছিলেন।সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মেয়ে আলি রাঃ এর চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে ছিলো।যাকে বিবাহ করতে শরীয়তে কোনো সমস্যা নেই।এমন বিবাহের বিধান রহিত হয়নি।সুতরাং ইসলাম যেই বিবাহ সম্পর্ককে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে ব্যক্তিগত যুক্তি উপস্থাপন করতঃ উক্ত বিধানকে তুচছ মনে করা বা  এড়িয়ে যাওয়া নিছক মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই না।আল্লাহ তায়ালা এমন মানুষদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন । আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (1 point)
reshown by
আমাদের সমাজে এমন বিয়ের প্রচলন কম (অবশ্য, এরকম ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যের কারনে সুযোগও কম)। আবার আমরা জানি, আমাদের সামাজিকতাও (যেসব রীতি শরীয়ত বিরোধী নয়) মেনে চলা উচিৎ।

কিন্তু,
i. এমন বিয়ে না হওয়াটাই আমাদের সমাজের সামাজিকতা (অথচ শরীয়তকে রহিত করার কারনে এটি বৈধ সামাজিকতা নয়)
ii. তাকে বিয়ে করা আমার জন্য আবশ্যক কাজ না

আবার,
i. নিজেরা পরস্পরকে পছন্দ করা (দ্বীন)
ii. অভিভাবকদের কাছে উভয়ই সাধারণভাবে পছন্দনীয়
iii. উভয়ের পরিবার তাদের নিজেদের সন্তানদের জন্য দ্বীনদার সঙ্গী খঁজছে

এক্ষেত্রে, 'তথাকথিত সামজিকতা'র কারনে, অভিভাবক/সমাজ ভুল বুঝবে কিনা/মেনে নিবে কিনা, এমন কারনে পরিবারের কাছে এই চাওয়া প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ? নাকি দ্বীন ইসলামের বিধানের অকাট্যতা-স্বাতন্ত্র্য-শ্রেষ্ঠত্ব (এতে যে কোন ভুল নেই, হীনমন্যতার সুযোগ নেই) বুঝিয়ে 'তথাকথিত সামাজিকতার' ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করে নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করা উচিৎ?
by (2 points)
reshown by
আমাদের সমাজে এমন বিয়ের প্রচলন কম (অবশ্য, এরকম ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যের কারনে সুযোগও কম)। আবার আমরা জানি, আমাদের সামাজিকতাও (যেসব রীতি শরীয়ত বিরোধী নয়) মেনে চলা উচিৎ।

কিন্তু,
i. এমন বিয়ে না হওয়াটাই আমাদের সমাজের সামাজিকতা (অথচ শরীয়তকে রহিত করার কারনে এটি বৈধ সামাজিকতা নয়)
ii. তাকে বিয়ে করা আমার জন্য আবশ্যক কাজ না

আবার,
i. নিজেরা পরস্পরকে পছন্দ করা (দ্বীন)
ii. অভিভাবকদের কাছে উভয়ই সাধারণভাবে পছন্দনীয়
iii. উভয়ের পরিবার তাদের নিজেদের সন্তানদের জন্য দ্বীনদার সঙ্গী খঁজছে

এক্ষেত্রে, 'তথাকথিত সামজিকতা'র কারনে, অভিভাবক/সমাজ ভুল বুঝবে কিনা/মেনে নিবে কিনা, এমন কারনে পরিবারের কাছে এই চাওয়া প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ? নাকি দ্বীন ইসলামের বিধানের অকাট্যতা-স্বাতন্ত্র্য-শ্রেষ্ঠত্ব (এতে যে কোন ভুল নেই, হীনমন্যতার সুযোগ নেই) বুঝিয়ে 'তথাকথিত সামাজিকতার' ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করে নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করা উচিৎ?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...