আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
291 views
in পবিত্রতা (Purity) by (48 points)
আমার তীব্র ওয়াসওয়াসা, টয়লেটে গেলে বেশি হয়৷ দেখা যায়, শুধু প্রসাব করতে গেলেই ১০-১২ বদনা পানি নষ্ট করি৷ প্রচুর পানি নষ্ট করে ফেলি, এজন্য নিরুপায় হয়ে পানি কম খাওয়া আর টয়লেট দিনে ৩-৪ বারের বেশি যায় না৷
১৷ আমি প্রসাব করে টিস্যু ব্যবহার করে, প্যানের উপর পানি দিয়ে টিস্যুসহ যা থাকে দূর করি৷ এরপরে পানি দিয়ে আমার গোপনাংগ যত সাবধানে সম্ভব ধুয়ে দি৷ এখানে সমস্যা হল, যত সাবধানেই করি না কেন, একফোটা বা তার কম পানি ছিটে এসে পশ্চাৎপদে লাগে৷ এটা এক দিরহাম থেকে কম হবে নিশ্চিত৷ এখন এটা কি নাপাক কিনা জানিনা৷ কারণ অনেকে টিস্যু ব্যবহার করে আর গোপনাংগ পরিস্কার ও করেনা৷ আমি অধিক পবিত্রতার জন্য সেটা ধুতে যেয়ে তার পানি ছিটে এসে শরীরে সামান্য লাগে, তবে তা কি অপবিত্রতা ধরবো৷ দেখা যায়, এই একফোটা পরিমাণ পরিস্কার করতে গেলেই ৪-৫ বদনা পানি নষ্ট হয়৷ শর্তঅনুযায়ী, যদি সম্ভব হয়, এক দিরহাম থেকে কম নাপাকও দূর করবার কথা ছিল৷ কিন্তু আমার মত তীব্র শুচিবায়ু মানুষের জন্য এটা দূর করতে অনেক পানি নষ্ট হয়৷ পানি খরচের জন্য পরিবারের চোখে ছোট হয়ে যায়। তাই এটা কি এড়িয়ে যাবো?

২৷ এরপরে হাত ধুতে গেলেও দেখা যায় ২ বদনা পরিমাণ পানি ব্যবহার করে ফেলি৷ মনে হয়, তাও পরিস্কার হল না৷ এরপরে ধুতে যেয়ে নিচের ভেজা ফ্লোর থেকে যদি এক ফোটার মত পানি ছিটে লাগে, তবে তা দূর করতে গেলেও অনেক পানি নষ্ট করে ফেলি, কম করে হলেও ৬-৭ বদনা৷ আবার টয়লেট করে সাবান দিয়ে হাত ধোবার সময় পানি ছিটা আসে, পরিস্কার করা কষ্টকর৷ কারণ পায়ের এত লোমের মধ্যে কোথায় এক ফোটা পানি লেগেছে তা তো বোঝা যায় না৷ আসলে এ ভেজা ফ্লোরে যেহেতু স্যান্ডেল পরে প্যানের উপর বসা হয়, আবার নিচে আসা হয়৷ আবার ফর‍য গোসল করি,  তাই সন্দেহ হয়, স্যান্ডেলের তলায় পানি নাপাক হয়ে অন্য পানি নাপাক হয় কিনা৷ এটা দূর করতে গেলে অন্য পায়েও পানি ছিটে যায়, অনেক পানি খরচ যায়৷ এক্ষেত্রেও এক দিরহামের কম নাপাক বা সন্দেহজাত নাপাক দূর করা আমার জন্য কষ্টকর ও পানি অপচয়ের কারণ৷ দয়া করে জানাবেন, এক দুই ফোটা পানি ছিটে লাগলেও (যা সিওর নাপাক কিনা অনিশ্চিত) ধোয়া কি জরুরি?
৩৷ আমাদের টয়লেটের ফ্লোর ভেজা থাকে, আর আগেই বললাম স্যান্ডেল পরে টয়লেটে বসা হয়৷ সেই স্যান্ডেল রাখা ফ্লোরে খালি পা রাখলে কি পা ধোবার দরকার নেই? মানে পায়ে তো নাপাক লাগবার কথা৷ দেখা যায়, আব্বু আম্মু খালি পায়ে ফ্লোরে পা দিলেও আর পা না ধুয়ে বের হয়ে আসে৷ এটা কি ঠিক আছে?

তারা আলাদা পা ধোয় না, স্যান্ডেলে পা রাখে৷ তাই আমি সন্দেহ দূর করতে  কয়েকবার পা ধুয়ে নি৷ আমারো পা ধোবার প্রয়োজন নেই?
৪৷ উপরের প্রশ্নগুলো থেকে জানাবেন, এটা কি সব আমার শুচিবায়ুজনিত অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা? টয়লেটে যে কোন জায়গা থেকেই এক ফোটার মত পানি ছিটে লাগলে কি আর ধোব না? এটা নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তা হয়৷ অনেক পানি নষ্ট করে ফেলি বলে টয়লেট যাঈয়ায় কমায় দিছি৷ দয়া করে জানাবেন

1 Answer

0 votes
by (711,080 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...
অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।
আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।
(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)

এরকম শয়তানি প্ররোচনা থেকে বাচতে হলে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বিধিনিষেধকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে হবে।সাথে সাথে ঐ চিন্তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে।এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া সহ আল্লাহর যিকিরে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখতে পারলেই তবে এরকম শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।(আল-মিনহাজ-২/১৫৫-১৫৬)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
প্রস্রাবের চিটা পড়ার সন্দেহ হলে,কাপড় নাপাক হবে না।হ্যা, যদি প্যান্টে প্রস্রাবের চিটা পড়ে, এবং তা এক দিরহাম থেকে কম হয়, তাহলে উক্ত কাপড় নাপাক হকে না,এবং সেই কাপড় দ্বারা নামায পড়া যাবে।কিন্তু যদি এক দিরহাম থেকে বেশী পরিমাণের হয়, তাহলে উক্ত কাপড় দ্বারা নামায পড়া যাবে না।

(২)
নাপাকির চিটা এক দুই ফোটা লাগলেও ধৌত করতে হবে, তবে এ পরিমাণ নাজাসত নামাযকে বাধাগ্রস্ত করবে না।

(৩)
সতর্কতামূলক পাকে ধৌত করতে হবে।

(৪)
জ্বী, এগুলো অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা।এরকম চিন্তা শয়তান থেকে আসো।সুতরাং এরকম চিন্তা আসলে, সাথে সাথেই আউযুবিল্লাহ পড়ে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (711,080 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 162 views
...