আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
210 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
reshown by
আসসালামুআলাইকুম ।

জনাব মুফতি সাহেব ,আমি হানাফী মাঝহাব অনু্যায়ী অনুযায়ী  ২জন মুফতি সাহেবের সাথে কথা বলছি খালওয়াত সম্পর্কে । একজন মুফতি সাহেব বললো ভিন্ন ভিন্ন শব্দে তিন  তালাকের ক্ষেত্রে -খালওয়াত হলে কোনো সমস্যা নাই এতে চিন্তা করা কিছু নাই ।অন্য কোন মাঝহাব এটি উল্লেখ নাই হানাফী মাঝহাব ছাড়া এটা না মানলে কোনো সমস্যা নাই এমন বললো ।

আরেকজন মুফতি সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলে তালাকের ক্ষেত্রে খালওয়াত হলেও একই  মাসয়ালা না হলেও একই মাসয়ালা ।
কিন্তু আপনাদের এখানে খালওয়াত বলছেন সহবাসের বিশুদ্ধরূপ ।

অখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যেহেতু এইটা বিতর্ক তাই আমি যদি খালওয়াত নিয়ে পুনরায় আমার স্ত্রী কে নিয়ে বিয়ে করি আমার জীবন টা সহজ হয়ে যায় ।

প্রশ্ন -আমি কি বিয়ে করলে আল্লাহর কাছে কোন জবাবদিহী করতে হবে ? সুস্পষ্ট হাদীস ও যেহেতু এইটা নিয়ে কিছু বলা নাই । বাকি সব মাঝহাবে এইটা নিয়েকোনো সমস্যা নাই । দয়া করে বলবেন ?

নোট: বিতর্ক যেহেতু তাই নাই যাওয়াই ভালো আমি বুঝি । কিন্তু এইটা যদি না মানি আমার জীবন টা সহজ হয়ে যায় অনেক ।আমি কি আমার জীবনকে সহজ করতে বিয়ে করতে পারি ?

যদি বিয়ে করি আমি কি আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতে হবে ?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ-


★★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কেহ যদি তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে খালওয়াতে সহীহাহ এর পরে এক বাক্যে নয়,বরং ভিন্ন ভিন্ন শব্দে তিন  তালাক দিলে (যেমন তালাক,তালাক,তালাক বা এক তালাক,দুই তালাক,তিন তালাক) বললে কত তালাক পতিত হবে,এ সংক্রান্ত মাসয়ালায় ইসলামী স্কলারদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন যে এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক তিন তালাক ধরে নিবে, সুতরাং উক্ত ব্যাক্তির জন্য সেই মহিলাকে শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত  বিবাহ করা উচিত নয়।       

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত উক্ত মহিলাকে যদি বিবাহ করতেই চান,তাহলে শরয়ী হালালাহ করে বিবাহ করতে পারেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

روى البيهقي في سننه عن سعيد بن المسيب أن عمر بن الخطاب رضى الله عنه (قضى في المرأة يتزوجها الرجل: أنه إذا أرخيت الستور فقد وجب الصداق) .
সারমর্মঃ
হযরত ওমর রাঃ এক মহিলা যাকে কোনো পুরুষ বিবাহ করেছিলো, ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছিলেন, 
যখন তুমি সতর ছেড়ে দিয়েছিলে (খুলেছিলে) তখনই মোহর ওয়াজিব হয়েছে।

وعن الأحنف بن قيس أن عمر وعليا رضى الله عنهما قالا : (إذا أغلق بابا ، وأرخى سترا: فلها الصداق كاملا ، وعليها العدة) . قال الألباني في "إرواء الغليل" (1937) : "رجاله ثقات" .
সারমর্মঃ
যখন কেহ দরজা বন্ধ করে,সতর ছেড়ে দেয় (খুলে) তার জন্য পূর্ণ মোহর দিতে হবে। 
 
وروى ابن المنذر في الأوسط (7273) عن الوليد بن أبي مالك قال: جمع عمر رضي الله عنه نفرا من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم فيهم معاذ بن جبل، فأجمع رأيهم: أنه إذا أغلق بابا، أو أرخى سترا، فقد وجب المهر.
সারমর্মঃ
যখন কেহ দরজা বন্ধ করে,সতর ছেড়ে দেয় (খুলে) তার জন্য মোহর ওয়াজিব হবে।

ফাতওয়ার কিতাব গুলোতে আছেঃ-

قوله: وكذا في وقوع طلاق بائن آخر إلخ) في البزازية: والمختار أنه يقع عليها طلاق آخر في عدة الخلوة، وقيل: لا اهـ وفي الذخيرة: وأما وقوع طلاق آخر في هذه العدة، فقدقيل: لايقع، وقيل: يقع، وهو أقرب إلى الصواب؛ لأن الأحكام لما اختلفت يجب القول بالوقوع احتياطاً، ثم هذا الطلاق يكون رجعياً أو بائناً ذكر شيخ الإسلام أنه يكون بائناً اهـ ومثله في الوهبانية وشرحها".
সারমর্মঃ
খালওয়াতে সহীহাহ এর পর ইদ্দতের মধ্যে আরেকটি তালাক প্রদান করলে সেটি পতিত হবে কিনা,সেই ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। 
কেহ কেহ বলেছেন যে এই তালাক পতিত হবেনা।
কেহ কেহ বলেছেন যে তালাক পতিত হবে।       
এটিই সঠিকতার বেশি নিকটতম মত।
কেননা শরয়ী আহকাম সংক্রান্ত যদি মতবিরোধ হয়,সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পতিত হওয়ার হুকুমই ওয়াজিব হয়। 
ফাতাওয়ায়ে শামী ৩/১১৯

قال العلامة ابن عابدين رحمة الله عليه: والحاصل:أنه إذا خلا بهاخلوة صحيحة، ثم طلقهاطلقة واحدة، فلاشبهة فی وقوعها، فإذا طلقها فی العدة طلقة أخری، فمقتضي کونها مطلقة قبل الدخول أن لاتقع عليها الثانية، لکن لما اختلفت الأحکام فی الخلوة أنها تارة تکون کالوطئ وتارة لاتکون جلعلناها کالوطئ فی هذا، فقلنابوقوع الثانية احتياطا؛ لوجودهافی العدة. (ردالمحتار: 4/248)
সারমর্মঃ
কেহ যদি স্ত্রীর সাথে খালওয়াতে সহীহাহ করে,অতঃপর এক তালাক প্রদান করে,তাহলে নিঃসন্দেহে সেই তালাক পতিত হয়ে যাবে। 
অতঃপর যদি ইদ্দতের মধ্যেই আরেকটি তালাক প্রদান  করে,তাহলে সহবাসের পূর্বে তালাক হওয়ায় এটি পতিত না হওয়ার কথা, কিন্তু খালওয়াতের ক্ষেত্রে হুকুমের মতবিরোধ তথা কখনো এটি সহবাসের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে,কখনো হচ্ছেনা,সেই হিসেবে সতর্কতা মূলক আমরা বলি যে তালাক পতিত হবে।  


قال العلامة الزيلعي رحمه الله: وتقوم (الخلوةالصحيحة) مقام الوطئ فی بعض الأحکام دون البعض...وأما فی حق وقوع طلاق آخر، ففيه روايتان، والأقرب أن يقع.(تبيين الحقائق:2/552)
সারমর্মঃ
খালওয়াতে সহীহাহ এর পরে তালাক প্রদানের পর আবার আরেকটি তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে দুটি রেওয়ায়েত আছে।
 সঠিকতার বেশি নিকটতম মত হলো তালাক পতিত হবে। 

وفی الفتاوی الهندية "و اعلم ان  أصحابنا أقاموا الخلوة الصحيحة مقام الوطئ في حق بعض الأحكام دون البعض، فأقاموها مقامه في حق تأكد المهر وثبوت النسب والعدة والنفقة والسكنى في هذه العدة وحرمة نكاح أختها وأربع سواها وحرمة نكاح الأمة على قياس قول أبي حنيفة رحمه الله تعالى ومراعاة وقت الطلاق في حقها، ولم يقيموها مقام الوطئ في حق الإحصان وحرمة البنات وحلها للأول والرجعة والميراث،
وأما في حق وقوع طلاق آخر ففيه روايتان، والأقرب أن يقع؛ كذا في التبيين". (الهندية:1/306)
সারমর্মঃ
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।
তবে আরেকটি তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে দুটি রেওয়ায়েত আছে।
সঠিকতার বেশি নিকটতম মত হলো তালাক পতিত হবে। 

قال العلامة ابن الهمام رحمه الله : واعلم أن أصحابنا أقاموا الخلوة الصحيحة مقام الوطئ في حق بعض الأحكام، تأكد المهر وثبوت النسب والعدة والنفقة والسكنى في مدة العدة ومراعاة وقت طلاقها، ولم يقيموهما مقامه في الإحصان وحلها للأول والرجعة...
وأما في حق وقوع طلاق آخر، ففيه روايتان، والأشبه وقوعه، لأن الأحكام لما اختلفت في هذا الباب وجب أن يقع احتياطا.
(فتح القدير:3/218)
সারমর্মঃ
আল্লামাহ ইবনে হুমাম রহঃ বলেন, জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।
আরেকটি তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে দুটি রেওয়ায়েত আছে।
আশবাহ মত হলো তালাক পতিত হবে। 
কেননা শরয়ী আহকাম সংক্রান্ত যদি মতবিরোধ হয়,সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পতিত হওয়ার হুকুমই ওয়াজিব হয়। 

وفي مجمع الأنهر: اعلم أن أصحابنا أقاموا الخلوة الصحيحة مقام الوطئ في بعض الأحكام، لتأكد المهر وثبوت النسب والعدة والنفقة والسكنى في مدة العدة، وحرمة نكاح أختها وأربع سواها ما دامت العدة قائمة...ولم يقيموها مقام الوطئ فی حق الإحصان وحرمةالبنات وحلها للأول والرجعة الميراث،
وأما في حق وقوع طلاق آخر، ففيه روايتان، والأقرب أن يقع.
(مجمع الأنهرفی شرح ملتقی الأبحر:1/516)
সারমর্মঃ
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।

আরেকটি তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে দুটি রেওয়ায়েত আছে।
সঠিকতার বেশি নিকটতম মত হলো তালাক পতিত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...