আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম
১.আমি এবং আমার স্ত্রী বিয়ের পর রেষ্টুরেন্টে প্রায়ই দেখা করতাম। রেষ্টুরেন্টের কেবিনে বসতাম দু'জন।এখানে অন্য কেউ আসত না।ওয়েটার মাঝে মধ্যে এসে খাবার দিয়ে যেত এর মাঝে দীর্ঘ বিরতি থাকত প্রায় ১ ঘন্টা ২ ঘন্টা পর ওয়েটার আসতো।কোন দিন ওয়েটার জিজ্ঞেস করতো আপনারা আর কতক্ষন থাকবেন?তখন আমরা বলতাম ঘন্টা খানিক।তখন ওয়েটার চলে যেত। ঘন্টা খানিক পর আসত।কিন্তু কেবিনটি ছিল তিন দিক ঘেরাও করা আর এক দিক খোলা অর্থাৎ কেবিনটি ছিল ছোট ঘরের মত কিন্তু দরজা নেই আশ-পাশ দিয়ে কেউ গেলে দেখা যায় না। কেবিনের ভিতর মাঝে মধ্যে আবছা আলো-অন্ধকার করে রাখতাম।কেনিবের দরজা নেই ওয়েটার চাইলে যখন ইচ্ছা আসতে পারবে।কিন্তু  ওয়েটার খাবার দেয়ার জন্য আসত আবার চলে যেত।আর  মধ্যে সুধু চেয়ার আর টেবিল ছিল বসার জন্য।খাট পালংক কিছুই ছিল না।এর মাঝে সহবাস করা তো সম্ভব না।কিন্তু আমাদের মধ্যে একে অপরকে স্পর্শ করা, জড়িয়ে ধরা বা বিভিন্ন গোপন অঙ্গ দেখা বা স্পর্শ করা এসব হয়েছে। আবার উত্তেজনা বসত আমার স্ত্রীর শরিরের সাথে লজ্জাস্থান ঘসে বীর্যপাত ঘটাই।তবে দুজনই কাপর পরা অবস্থায় ছিলাম।কাপরের উপর দিয়েই ওর লজ্জাস্থানের উপর আমার লজ্জাস্থান ঘসতাম।তবে আমাদের পূর্ণ সহবাস হয়নি অর্থাৎ আমার লজ্জাস্থান ওর লজ্জাস্থানে প্রবেশ করেনি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের কি খালয়াতে সহিহা হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


স্ত্রীকে তালাক দেবার জন্য শারিরীক সম্পর্ক করা জরুরী নয়। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত  মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে রাখার ইচ্ছে না থাকলে তালাক দিতে পারবে। এ ক্ষমতা স্বামীর রয়েছে।

আর এক্ষেত্রে যদি বিয়ের সময় মোহর নির্দিষ্ট করা থাকে, তাহলে নির্ধারিত মোহরের অর্ধেক উক্ত মেয়েকে প্রদান করা আবশ্যক। আর যদি মোহর নির্দিষ্ট না করেই বিবাহ করে থাকে, তাহলে এক জোড়া কাপড় তথা জামা, পায়জামা ও উড়না প্রদান করা আবশ্যক।
আর যদি স্ত্রী সেচ্ছায় তার মোহরের অধিকার ছেড়ে দেয়, তাহলে মোহর মাফ বলে গণ্য হবে। মোহর দিতে হবে না। আর যদি মাফ না করে, তাহলে দিতে হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

وَإِن طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ إِلَّا أَن يَعْفُونَ أَوْ يَعْفُوَ الَّذِي بِيَدِهِ عُقْدَةُ النِّكَاحِ ۚ وَأَن تَعْفُوا أَقْرَبُ لِلتَّقْوَىٰ ۚ وَلَا تَنسَوُا الْفَضْلَ بَيْنَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ [٢:٢٣٧]

আর যদি মোহর সাব্যস্ত করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তাহলে যে, মোহর সাব্যস্ত করা হয়েছে তার অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে। অবশ্য যদি নারীরা ক্ষমা করে দেয় কিংবা বিয়ের বন্ধন যার অধিকারে সে (অর্থাৎ, স্বামী) যদি ক্ষমা করে দেয় তবে তা স্বতন্ত্র কথা। আর তোমরা পুরুষরা যদি ক্ষমা কর, তবে তা হবে পরহেযগারীর নিকটবর্তী। আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা বিস্মৃত হয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সেসবই অত্যন্ত ভাল করে দেখেন। {সূরা বাকারা-২৩৭}

لَّا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ مَا لَمْ تَمَسُّوهُنَّ أَوْ تَفْرِضُوا لَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَمَتِّعُوهُنَّ عَلَى الْمُوسِعِ قَدَرُهُ وَعَلَى الْمُقْتِرِ قَدَرُهُ مَتَاعًا بِالْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى الْمُحْسِنِينَ [٢:٢٣٦]

স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং কোন মোহর সাব্যস্ত করার পূর্বেও যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু খরচ দেবে। আর সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং কম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী। যে খরচ প্রচলিত রয়েছে তা সৎকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব। {সূরা বাকারা-২৩৬}


https://www.ifatwa.info/44418 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,
وَكَذَا لَوْ خَلَا بِهَا فِي بَيْتٍ مِنْ دَارٍ وَلِلْبَيْتِ بَابٌ مَفْتُوحٌ فِي الدَّارِ إذَا أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ عَلَيْهِمَا غَيْرُهُمَا مِنْ الْمَحَارِمِ أَوْ الْأَجَانِبِ يَدْخُلُ؛ لَا تَصِحُّ الْخَلْوَةُ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ-
যদি নববধূ এব বর বাসা/বাড়ির এমন কোনো রুমে অবস্থান করে,যেই রুমের দরজা খুলা থাকে, যেই চাইলে তাতে প্রবেশ করতে পারবে।তাহলে এমতাবস্থায় খালওয়াতে সহীহা হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩০৬)

https://www.ifatwa.info/16465 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
وَاعْلَمْ أَنَّ أَصْحَابَنَا - رَحِمَهُمُ اللَّهُ - أَقَامُوا الْخَلْوَةَ الصَّحِيحَةَ مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ بَعْضِ الْأَحْكَامِ دُونَ الْبَعْضِ فَأَقَامُوهَا فِي حَقِّ تَأَكُّدِ الْمَهْرِ وَثُبُوتِ النَّسَبِ وَالْعِدَّةِ وَالنَّفَقَةِ وَالسُّكْنَى فِي هَذِهِ الْعِدَّةِ وَنِكَاحِ أُخْتِهَا وَأَرْبَعٍ سِوَاهَا وَحُرْمَةِ نِكَاحِ الْأَمَةِ عَلَى قِيَاسِ قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ وَمُرَاعَاةِ وَقْتِ الطَّلَاقِ فِي حَقِّهَا وَلَمْ يُقِيمُوهَا مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ الْإِحْصَانِ وَحُرْمَةِ الْبَنَاتِ وَحِلِّهَا لِلْأَوَّلِ وَالرَّجْعَةِ وَالْمِيرَاثِ، وَأَمَّا فِي حَقِّ وُقُوعِ طَلَاقٍ آخَرَ فَفِيهِ رِوَايَتَانِ وَالْأَقْرَبُ أَنْ يَقَعَ.
«تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي» (2/ 144)
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না। খালওয়াতে সহীহা হলে এক তালাকের পর আরেক তালাক কি পতিত হবে? এ সম্পর্কে দুইটি মতভেদ রয়েছে। কুরআন সুন্নাহর নিকটবর্তী মত হল, দ্বিতীয় তালাক পতিত হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাদের খালওয়াতে সহীহাহ হয়নি।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...