আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
240 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমার মনে প্রায় অদ্ভুত প্রশ্ন আসে, যার আমি কোনো উত্তর পাই না, ফলে আমি মানুসিক অশান্তি তে ভুগি। ইবাদাত করার ইচ্ছা চলে যায়।  যেমন এখন যে প্রশ্নটি - আমরা ❝বিসমিল্লাহ❞ বলে কাজ শুরু করি, এতে আল্লাহ আমাদের কাজে বরকত বা রহমত দেয়। তো সাহাবীরা ও বিসমিল্লাহ বলে কাজ করেছে, তাহলে কি আমরা ও সাহাবীরা সমান রহমত পেয়েছি আল্লাহর কাছ থেকে, তখনি মনে খারাপ লাগা কাজ করে যে আমি কি বেয়াদবি করছি!, আমি নিজেকে সাহাবী দের সাথে তুলনা করছি! আবার যদি এমন ভাবি যে, আল্লাহ সাহাবিদের বেশি রহমত দিয়েছে, আমারা যে কোনো আমল করলে তাদের চেয়ে কম রহমত পাই।  তখনও খারাপ লাগা কাজ করে যে আমি আল্লাহর রহমত কে ছোট করে দেখছি বা আল্লাহর রহমত কে ভাগ করছি। তো এর উত্তর কি হবে?
এমন জাতীয় প্রশ্ন এর ফলে আমি দীর্ঘ দিন যাবত মানসিক অশান্তি তে ভুগছি, এইসব কি শয়তানের ওয়াস ওয়াসা?? এইসব থেকে কিভাবে বের হয়ে আসবো?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মহান আল্লাহ সম্মানিত এই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য সম্মানিত সাহাবায়ে কেরামকে মনোনীত করেন। তাঁরা তাঁকে এবং আল্লাহ্র দ্বীনকে সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতা করেন। তাঁরা ছিলেন ভূ-পৃষ্ঠের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তির শ্রেষ্ঠতম সহচর। তাঁরা ছিলেন তাঁর সঙ্গী, মহৎ সহকর্মী এবং শক্তিশালী সাহায্যকারী। আল্লাহ্র দ্বীনের প্রচার ও প্রসারে তাঁরা সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করেন।

তাঁরা কতই না নিবেদিতপ্রাণ এবং মহৎ ছিলেন! কতই না সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন তাঁরা! আল্লাহ্র দ্বীনের সহযোগিতার জন্য তাঁরা কি অসাধারণ প্রচেষ্টাই না করেছেন!

মহান আল্লাহ বিশেষ তাৎপর্যকে সামনে রেখেই তাঁর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য উত্তম ও ন্যায়পরায়ণ এসকল সাহাবিকে মনোনীত করেন। স্বয়ং আল্লাহ এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাক্ষ্যানুযায়ী নবি ও রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাম)-এর পরে তাঁরাই ছিলেন সর্বোত্তম মানুষ। মহান আল্লাহ বলেন,

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে’ (আলে-ইমরান ১১০)।

অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে এবং শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবিগণই প্রথম মহান আল্লাহ্র এই দ্ব্যর্থহীন ঘোষণার আওতাভুক্ত হবেন। সহিহ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

আমার যুগের মানুষই সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ, অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ’।

বুঝা গেল, সাহাবিগণের শ্রেষ্ঠত্বের সাক্ষ্য দিলেন স্বয়ং আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সত্যিই তাঁরা ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ, বিশ্বস্ত এবং সুদৃঢ় দিক-নির্দেশক।সুতরাং সাহাবায়ে কেরামের সাথে উম্মতের সাধারণ কোন মানুষের তুলনা করা নিছক মূর্খতা ও বোকমী ছাড়া কিছুই না।

*আমরা https://ifatwa.info/29990/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করেছি যে, প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়গুলি ওয়াসওয়াসার  অন্তর্ভুক্ত। আপনি এহেন প্রশ্নকে মনে আসতেই দিবেননা। আসলে সাথে সাথে এহেন চিন্তা থেকে ফিরে আসতে হবে।

لا حول ولا قوة الا بالله العلي العظيم

বেশি বেশি পাঠ করবেন।এহেন চিন্তা আলেই নামাজে দাড়ানোর চেষ্টা করবেন। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الدُّؤَلِيِّ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَخِي، حُذَيْفَةَ عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ صَلَّى .

হুযাইফাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে সলাত আদায় করতেন।

(আবু দাউদ ১৩১৯.আহমাদ (৫/৩৮৮)

এ রোগের উত্তম চিকিৎসা হল- ১. আল্লাহর যিকির করা ২. কোরআন তেলাওয়াত করা ৩. নামাযের পাবন্দি করা।

১. কেননা, যিকির সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)

২. কোরআন সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,

نُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إَلاَّ خَسَارًا

আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়। (সূরা বনু ইস্রাঈল ৮২)

৩. নামায সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا إِلَّا الْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ

মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে। যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়। তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায়কারী। যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে। ( সুরা মা’য়ারিজ ১৮-২৩ )

ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্তির আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/6027

সুতরাং আপনি উক্ত বিষয়ের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে উল্লেখিত আমল গুলো চালিয়ে যাবেন।  

 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 83 views
...