আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
265 views
in পবিত্রতা (Purity) by (1 point)
retagged by
১. ইসলামে নারী খাতনার গুরুত্ব আছে কি? থাকলে বিধান কি? ব্যাখ্যা দিবেন।
২. আমার হবু শাশুড়ীর মতে বিয়ের আগে তিনি আমাকে খাতনা করাতে চান, তার মতে এতে মেয়েরা পবিত্র থাকবে , আমি কি এটি অসম্মতি জানাতে পারি? আমার শাশুড়ী মা আমার বাবা মার সম্মতি নিয়ে বিয়ের আগে আমাকে পবিত্র করতে খাতনা করে দিতে চান। আমি কি ইসলামের দৃষ্টিতে অসম্মতি জানাতে পারি?

1 Answer

–1 vote
by (63,240 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

এক হাদীসে এসেছে যে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ :« الْخِتَانُ سُنَّةٌ لِلرِّجَالِ مَكْرُمَةٌ لِلنِّسَاءِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ খৎনা পুরুষের জন্য সুন্নত আর মহিলাদের জন্য ইজ্জত।{সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৭৩৪৪, মুসনাদে আহমাদ-৫/৭৫,কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৪৫৩০৫}

প্রকৃতপক্ষে মহিলাদের খৎনা করা কোন আবশ্যকীয় বিষয় নয়। ইসলামে এর কোন বিশেষ মর্যাদাও নেই। এটি সুন্নতও নয়। বরং সর্বোচ্চ এটিকে জায়েজ বলা হয়েছে। তাই এটা নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করা কিছুতেই কাম্য নয়। পুরুষদের খৎনা করা সুন্নত। কিন্তু মহিলাদের খৎনা করা সুন্নত নয়। বরং জায়েজ। বিজ্ঞজনদের মতে তৎকালিন আরবে এটি প্রচলিত ছিল। আরবের পরিবেশ শুস্ক হওয়ার কারনে সেখানকার মহিলাদের জরায়ুর উপরিভাগ হতো খুবই রুক্ষ ও মোটা। সতি পর্দা ছিন্ন না হলে সন্তান না হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই তৎকালিন আরবের লোকেরা সতি পর্দা ছিন্ন করার জন্য মহিলাদের খৎনা করার প্রথা চালু করে। রাসূল সাঃ যখন জানলেন যে, এটি করার দ্বারা মহিলাদের উপকার হয়, সেই সাথে পুরুষদের উপকার হয়, তাই তিনি এ বিষয়ে অতিরঞ্জন না করার আদেশ দিয়েছেন। যেমন হাদীসে এসেছে যে,

عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ الأَنْصَارِيَّةِ : أَنَّ امْرَأَةً كَانَتْ تَخْتِنُ بِالْمَدِينَةِ فَقَالَ لَهَا النَّبِىُّ -صلى الله عليه وسلم- :« لاَ تَنْهَكِى فَإِنَّ ذَلِكَ أَحْظَى لِلْمَرْأَةِ وَأَحَبُّ إِلَى الْبَعْلِ ».

قَالَ أَبُو دَاوُدَ : مُحَمَّدُ بْنُ حَسَّانَ مَجْهُولٌ وَهَذَا الْحَدِيثُ ضَعِيفٌ. (سنن ابى داود، كتاب الأدب، باب ما جاء في الختان، رقم الحديث-5271

হযরত উম্মে আতিয়্যাহ আনসারী রাঃ থেকে বর্ণিত। মদীনার এক মহিলা খৎনা করাতো। তখন তাকে রাসূল সাঃ বললেনঃ তুমি অতিরঞ্জন করো না। তবে এটি পুরুষের জন্য অধিক উপকারী আর মহিলাদের প্রিয় হয়ে থাকে।

ইমাম আবু দাউদ রহঃ বলেনঃএ হাদীসের একজন রাবী মুহাম্মদ বিন হাসসান মাজহূল। আর এ হাদীসটি জঈফ। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫২৭১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৭৩৩৮}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

এ সকল হাদীস একথাই প্রমাণ করে যে, প্রয়োজনে মহিলাদের খৎনা করা উত্তম। তবে এটি সুন্নত বা জরুরী কিছু নয়। এ কারণেই ফুক্বাহায়ে কেরাম এবং হাদীস ব্যাখ্যাকারগণ মহিলাদের খৎনাকে সুন্নত বা জরুরী সাব্যস্ত করেননি। তাই মহিলাদের শারিরিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে করা, মহিলাদের খৎনা করতে বাধ্য করা জায়েজ হবে না।

مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٥:٦

আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর। {সূরা মায়িদা-৬}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...