আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
edited by
১.

আমার নিফাস এর ৩২ তম দিন থেকে রক্ত যাচ্ছেনা দেখে আমি পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় করা শুরু করি আলহামদুলিল্লাহ্‌ ।
কিন্তু ৩৩ তম দিন থেকে আবার রক্ত যাওয়া শুরু করে। ( লালচে বাদামি এবং পরিমানে ৫/৬ ফোঁটা)
এই ৩/৪ ফোঁটা রক্ত যাওয়ার পর পরবর্তী ১০/১২ ঘন্টা,এবং সর্বোচ্চ ১দিন কোনো রক্ত যায় না। তবে হলুদাভ স্রাব যায়।

এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি?
আমি কি নামাজ কন্টিনিউ করবো? নাকি এই রক্ত নেফাস হিসেবে গন্য হবে?

২. মৃত আম্মুর ছুটে যাওয়া রমজানের  ফরজ রোজা কি সন্তান রাখতে পারবে?
৩. সমস্ত চুল ঝড়ে যাচ্ছে,চোখে ঝাপসা দেখতেসি কিন্তু চোখে সমস্যা নাই। কোন আমল আছে কি?

৪.রমজানের সময় দিনের বেলা এভাবে নাকে নরম স্থান অব্দি পানি টানলে রোজা ভঙ্গ হবে কি?

৫. অনিচ্ছাকৃত গর গড়ার সময় বা কুলির সময় পেটে পানি গেলে রোজা ভঙ্গ হবে?

৬. বিতরের নামাজ কি এভাবে পড়লে হবে যে প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আমার মৃত আম্মার জন্য সওয়াব বকশিয়ে দিন এরপর এক রাকাত বিতরের সালাত আদায় করব?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
নেফাসের সর্বোচ্চ দিন হলো চল্লিশ দিন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا شُجَاعُ بْنُ الْوَلِيدِ أَبُو بَدْرٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِي سَهْلٍ، عَنْ مُسَّةَ الأَزْدِيَّةِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ كَانَتِ النُّفَسَاءُ تَجْلِسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْبَعِينَ يَوْمًا فَكُنَّا نَطْلِي وُجُوهَنَا بِالْوَرْسِ مِنَ الْكَلَفِ .
নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী (রহঃ) .... উম্মু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে নেফাস বিশিষ্ট মহিলাগণ চল্লিশ দিন সালাত ও সিয়াম থেকে বিরত থাকতেন। চেহার ফ্যাকাশে হয়ে কৃষ্ণাভ হয়ে যেত বলে আমরা তখন চেহারায় হলুদ বর্ণের ওয়ারস পত্রের প্রলেপ ব্যবহার করতাম। - ইবনু মাজাহ ৬৪৮, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৩৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম তিরমিজি রহঃ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ-

وَقَدْ أَجْمَعَ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ عَلَى أَنَّ النُّفَسَاءَ تَدَعُ الصَّلاَةَ أَرْبَعِينَ يَوْمًا إِلاَّ أَنْ تَرَى الطُّهْرَ قَبْلَ ذَلِكَ فَإِنَّهَا تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي . فَإِذَا رَأَتِ الدَّمَ بَعْدَ الأَرْبَعِينَ فَإِنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا لاَ تَدَعُ الصَّلاَةَ بَعْدَ الأَرْبَعِينَ وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ الْفُقَهَاءِ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَيُرْوَى عَنِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ إِنَّهَا تَدَعُ الصَّلاَةَ خَمْسِينَ يَوْمًا إِذَا لَمْ تَرَ الطُّهْرَ . وَيُرْوَى عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ وَالشَّعْبِيِّ سِتِّينَ يَوْمًا .
সাহাবী, তাবিঈ ও পরবর্তী যুগের আলিমদের সকলেই একমত যে, নেফাস বিশিষ্ট মহিলাগণ সালাত থেকে চল্লিশ দিন বিরত থাকবে। তবে এর পূর্বেই যদি পাক হয়ে যায় তবে গোসল করে যথারীতি সালাত আদায় করতে থাকবে। চল্লিশ দিনের পরও যদি রক্ত নির্গত হতে দেখে তবে অধিকাংশ আলিমের মতে সে আর সালতা ত্যাগ করতে পারবে না। অধিকাংশ ফকীহের অভিমত এ-ই। ইমাম (আবূ হানীফা) সুফইয়ান, ছাওরী, ইবনু মুবারক শাফিঈ, আহমদ এবং ইসহাকও এই মত ব্যক্ত করেছেন। হাসান বসরী থেকে বর্ণিত আছে যে, যদি পাক না হয় তবে পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত সে সালাত থেকে বিরত থকবে। আতা ‘ইবনু আবী রাবাহ এবং শা'বী থেকে বর্ণিত আছে যে, ষাট দিন পর্যন্ত সে সালাত ও সিয়াম থেকে বিরত থাকবে।

(তিরমিজি ১৩৯)

حَدَّثَنَا يَزْدَادُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، ثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الْأَشَجُّ ، ثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ ، عَنْ أَشْعَثَ ، عَنِ الْحَسَنِ ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ ؛ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لِنِسَائِهِ : " لَا تَشَوَّفْنَ لِي دُونَ الْأَرْبَعِينَ ، وَلَا تُجَاوِزْنَ الْأَرْبَعِينَ " يَعْنِي : فِي النِّفَاسِ
ইয়াযদাদ ইবনে আবদুর রহমান (রহঃ) ... উসমান ইবনে আবুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তার স্ত্রীগণকে বলতেন, তোমরা চল্লিশ দিন পূর্বে আমার জন্য সাজগোজ করবে না এবং চল্লিশ দিন অতিক্রমও করবে না, অর্থাৎ নেফাস সম্পর্কে।
(সুনানে দারা কুতনি ৮২৯)



★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত রক্ত নেফাসের রক্ত। 
আপনি নামাজ কন্টিনিউ করবেননা। 
রক্ত পুরোদমে বন্ধ হলে নামাজ শুরু করবেন,আর যদি এভাবেই চলতে থাকে,তাহলে চল্লিশ দিন হয়ে গেলে নামাজ শুরু করবেন।

(০২)
উক্ত রোযা সন্তান রাখতে পারবেনা।
ফিদইয়াহ আদায় করবে।
,
প্রত্যেক রোযার ফিদইয়াহ এক সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা বা খাদ্য গরিব মিসকিনকে দান করে দিবে।

(০৩)
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পাশাপাশি আল্লাহর কাছে মনের ভাষায় দোয়া করুন।

(০৪)
হ্যাঁ এতে রোযা ভেঙ্গে যাবে।
তবে এতে শুধু কাজা আবশ্যক হবে।
কাফফারা  নয়।

(০৫)
এভাবে বিতির সালাত আদায় হবেনা।

তবে যে সমস্ত স্কলাগন এক রাকাত বিতির আদায়ের মত প্রদান করেন,তাদের অনুসারীগন এভাবে বিতর আদায় করতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 67 views
0 votes
1 answer 91 views
...