আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমি একজন মেয়ে এবং স্টুডেন্ট।পুরোপুরি বাবা-মায়ের ওপর নির্ভরশীল।আমার বাবা ব্যাংক থেকে প্রতি মাসে মাসে যে লভ্যাংশ আসে সেটা সংসারে ব্যায় করেন।তাকে আমি বোঝানোর পরও সে বুঝতে চায়না যে এটা সুদ।সে কিছু যুক্তি দাঁড় করিয়ে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা এই লভ্যাংশ হালাল!মাকে বলেও তেমন একটা ফায়দা হয়না।বাবা চাকরিও করেন।চাকরির টাকাও সংসারে দেন।আমার মা ও চাকরি করতেন।এখন করেন না।আবার হয়তো করবেন ইনশাআল্লাহ।তিনি ব্যাপারটা বুঝলে তাকে বলতাম যে তার বেতনের টাকা দিয়েই যেন আমাদের খরচ করেন।বাবার টাকা না নেন।কিন্তু তিনি এই ব্যাপারটাকে অতটা গুরুত্ব দেন না বিধায় তার বেতনের টাকা রেখে দিয়ে বাবার টাকা দিয়েই সংসার চলে।আমি মনে শান্তি পাইনা বিন্দুমাত্র।মনে হয় আমার ইবাদত যদি কবুলই না হয় হারাম খাওয়ার ফলে!আবার কখনো ভুলে থাকতে চেষ্টা করি।আমি যতদূর জেনেছি যে এক্ষেত্রে মাসয়ালা হচ্ছে যে একদম জীবন বাঁচার জন্য যতটুকু লাগে ততটুকু আমি তাদের কাছ থেকে নিতে পারব।কিন্তু এটা পুরোপুরি পালন করা সম্ভব হয়না।মা-বাবা প্রায় আমাকে কিছু না কিছু কিনে দেন/খাওয়ান।তাদেরকে "না" বললেও শোনেন না।অথবা আমিই তাদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য যতটুকু লাগবে তার চাইতে বেশি নিয়ে ফেলি।এমতাবস্থায় আমি কি করব?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী  দ্বীনী বোন!
শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে।যেমন, উপার্জন অক্ষম মাতা-পিতা, নাবালিগ ছেলে,মেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।
এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলে, সেই সম্পদ থেকে খরছ না করে নিজ মাল থেকে খরছ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে।তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যে,তার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে।হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে।কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা তার একান্ত দায়িত্ব ছিলো।সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের ই হবে।(বিস্তারিত জানতে দেখুন-ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি বাবার ইনকাম গ্রহন করে চলতে পারবেন,তবে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই নিবেন,বেশি নিবেননা।
তার দোয়া ইবাদত কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ।    

এখন যে আপনি প্রয়োজন থেকেও বেশি নিচ্ছেন,এই প্রবনতা বন্ধ করে দিন।   

আপনি চাইলে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে নিজে উপার্জন করতে পারেন।
 
তবে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে উপার্জন করতে না পারলে সেটির অনুমতি নেই।
প্রয়োজনে মেয়েদের বা ছোট বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়াতে পারেন।
,
আরো জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (9 points)

আমার আগের প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে বাবার  ইনকাম  হারাম হলে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করা যাবে।
আমি এখানে প্রয়োজনে অর্থটা বুঝতে চাই। মনে করুন একটা জিনিস হলেও চলে না হলেও চলে। যেমন : আমার ক্ষুদা লেগেছে। আমি চাইলে খুব কষ্ট করে না খেয়ে থাকতে পারি। আবার কম খেয়েও কষ্ট করে থাকতে পারি।এখন আমার জন্য কি উচিত হবে যে  বাবার টাকা খাবার না পেট ভরে না খেয়ে পেটে ক্ষুধা রেখে খাওয়া।  অথবা দিনে তিনবার চারবার খাওয়ার পরিবর্তে  পরিবর্তে এক দুইবার খেয়ে থাকা। প্রয়োজন বলতে কি এটাই বোঝানো হয়েছে?? একইভাবে ঘুমানোর সময় আমি চাইলেই বালিশ, কোলবালিশ,, কাঁথা এগুলো ছাড়াই ঘুমাতে পারি।   এগুলো তো আমার হলেও চলে না হলেও চলে। একইভাবে আমি ফোন ব্যবহার করি, ফোনে বিভিন্ন রকম শিক্ষামূলক ভিডিও দেখি। এটার মধ্যে কিছু ভিডিও আমার দেখলেও চলে  আবার না দেখলেও চলে। না দেখলে হয়তো একটু অসুবিধা হবে। কিন্তু তারপরও ম্যানেজ করে চলা যায়।এখন আমি কি এগুলো দেখবো না একইভাবে ধরুন আম্মু প্রতিদিন যে খাবারগুলো রান্না করে সেগুলো আমি খেলাম। মাঝে মাঝে  আম্মু সন্ধ্যার নাস্তা বানাই, স্পেশাল কিছু খাবার বানায় যেমন: পোলাও,, মাংস বানায়। যেগুলো আমার খেলেও চলে না খেলেও চলে। আমি কি এগুলো খাবো না?? একইভাবে আবার বাবা কখনো শখ করে বাইরে থেকে আমার জন্য নানা রকমের খাবার কিনে আনে।এগুলো আমার জন্য না খেলেও চলে। আমি কি খাবো না? একইভাবে  পড়াশোনার জন্য খাতা কলম দরকার হয়,, বই দরকার হয়।  এগুলো কখনো কখনো খুব বেশি একটা জরুরি দরকার হয় না। তবে হলে ভালো হয়,, না হলেও হালকা পাতলা অসুবিধা হয়। এ সকল ক্ষেত্রে আমার কি করা উচিত?? আমি কি এগুলো সব থেকে বিরত থাকবো??? প্রয়োজন কথাটার ব্যাপক অর্থ বুঝতে চাইছি। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো দৈনন্দন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয়। এগুলো না হলে অসুবিধা হয়। তবে অসুবিধা গুলোর জন্য যে মরে যেতে হয় বিষয়টা তা না। তবে চলতে ফিরতে কষ্ট হয়। তো আমার কি উচিত হবে বাবার টাকা থেকে এগুলো ব্যয় না করে বরং কষ্ট করে থাকা? আরেকবার আমি বিষয়টি বলছি..বাবা আমার জন্য বাইরে থেকে নানা রকম খাবার কিনে আনে। এগুলো কি আমি খাবো না??
by (671,200 points)
তিন বেলা পেট ভরে খাবার খেতে পারবেন।
তিন বেলা থেকে বেশি খাবার খাবেননা।
জমা করে রাখার মতো কাপড় নিবেননা।
দৈনন্দিন পড়ছেন,শুধু ততটুকু কাপড় নিবেন।

বাবার সেই হারাম টাকা হতে ক্রয়কৃত ফোন ব্যবহার করবেননা।
কাহারো সাথে কথা বলা অধিক প্রয়োজনীয় হলে মা/বাবার ফোন দিয়ে কথা বলবেন, অল্প সময়েই কেটে দিবেন।

সাধারণ নাস্তা পানি করবেননা।
by
১.আগে থেকেই ফোন,জামাকাপড় বা অপ্রয়োজনীয় যা আছে কিনে ফেললে সেগুলো কি ব্যবহার করা যাবে?

২.পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তো কিনতে পারব তাই না?

৩.ঈদ বা যেকোনো ফেস্টিভ্যালে তো সাধারণত নতুন পোশাক কেনা হয়,সেটাও কি মানা করে দিতে হবে?

৪.কিংবা একটা জিনিস ব্যবহার করতে করতে পুরনো হয়ে গেছে,যদিও পুরনো জিনিস ব্যবহার করা যাবে তবে নতুন কিনলে ভালো হয়,সেক্ষেত্রে কি পুরনোটা একদম নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে না নতুন কেনা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...