আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
242 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (9 points)
edited by
আস সালামু আলাইকুম!

আমরা জানি,শুক্রবার নফল রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরূহ।কিন্তু এই দিন ফ্রিতে থাকায় অনেক স্টুডেন্ট বা চাকুরীজীবী এই দিন ইবাদাত করার জন্য নির্দিষ্ট করেন। আচ্ছা তাহলে কি? রোজ ব্যতীত অন্য নফল ইবাদাত যেমন তাহাজ্জুদও কি আদায় করার জন্য শুক্রবার রাতটিকে নির্দিষ্ট করা যাবে না?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো শুধু শুক্রবার বা শুধু শনিবার রোযা রাখা মাকরূহে তানজিহী। হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী নয়। {তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৩১৫} 

মুশরিকদের বিরোধীতা করার জন্য। কারণ তারা এ দু’দিন রোযা রাখতো। হাদীসে খাস করে শুধু এ দু’দিন আলাদা আলাদা রোযা রাখতে অপছন্দ করা হয়েছে। তবে আগে বা পরের দিনের সাথে মিলিয়ে একসাথে দু’টি রোযা হলে কোন সমস্যা নেই।
,
★★উল্লেখ্য যে এই দিনে রোযা ব্যাতিত ব্যতীত অন্য নফল ইবাদাত যেমন তাহাজ্জুদ, ইত্যাদি  আদায় করার জন্য শুক্রবার রাতটিকে নির্দিষ্ট করা যাবে।
দিনের বেলাতেও অন্যান্য ইবাদত করা যাবে।
কোনো সমস্যা নেই,নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র এই এক দিনে রোযা রাখা নিয়ে,তাও সেটা সেটা মাকরুহে তানযিহি। 
হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী নয়। 

সুতরাং শুধুমাত্র এই দিনে নফল রোযা না রাখাই ভালো।

হাদীস শরীফে এসেছে   
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يصومن أحدكم يوم الجمعة إلا يوما قبله أو بعده

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ জুমআর আগে অথবা পরে একদিন মিলানো ব্যতিত শুধু জুমআর দিন রোযা রেখো না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৮৮৪}

عن جويرية بنت الحارث رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه و سلم دخل عليها يوم الجمعة وهي صائمة فقال ( أصمت أمس ) . قالت لا قال ( تريدين أن تصومي غدا ) . قالت لا قال ( فأفطري )

হযরত জুআইরিয়া বিনতে হারেস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ একদা শুক্রবার তার কাছে এলেন। সেদিন তিনি রোযা ছিলেন। রাসূল সাঃ জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি গতকাল রোযা ছিলে? তিনি বললেনঃ না। রাসূল সাঃ বললেনঃ তোমার কি আগামীকাল রোযা রাখার ইচ্ছে আছে? তিনি বললেনঃ না। রাসূল সাঃ বললেনঃ তাহলে রোযা ভেঙ্গে ফেল। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৮৮৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৪২৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৬১১, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-২১৬২}

عن عبد الله : قال كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يصوم من غرة كل شهر ثلاثة أيام وقلما كان يفطر يوم الجمعة

হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখতেন। আর তিনি খুব কমই জুমআর দিন রোজা ভাঙ্গতেন। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৭২৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৬৪৫, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৮০৭৮, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১৮১৮}

قال يزيد الصماء – أن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال « لا تصوموا يوم السبت إلا فيما افترض عليكم وإن لم يجد أحدكم إلا لحاء عنبة أو عود شجرة فليمضغه

ইয়াজিদ সাম্মা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা শনিবার দিন রোযা রেখো না আবশ্যকীয় রোযা ছাড়া। যদি তোমাদের কেউ কোন কিছু না পায় আঙ্গুরের বাকল বা গাছের কাঠ ছাড়া। তাহলে সে যেন এটাই চুষে নেয়। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৪২৩, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৭৪৯, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৭৬২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৬১৫, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-২১৬৩, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৬৮৬, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৪৩৪}
,
★প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নাত। 

রাসূল সাঃ নিজে বৃহস্পতি ও সোমবার রোজা রাখতেন। তাই এদিন রোজা রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নত।
 হাদীসে এসেছে-

عن أبى قتادة الأنصارى رضى الله عنه أن رسول الله -صلى الله عليه وسلم- سئل عن صوم الاثنين فقال « فيه ولدت وفيه أنزل على

হযরত আবু কাতাদা আনসারী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ কে সোমবার দিনে রোযা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এ দিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর [কুরআন] নাজিল হয়েছে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৮০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-২১১৭, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-২৯২৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৫৫০, সুনানে আবী দাউদ, হাদীস নং-২৪২৮}

عن ربيعة بن الغاز أنه سأل عائشة عن صيام رسول الله صلى الله عليه و سلم فقالت كان يتحرى صيام الاثنين والخميس

হযরত রাবীয়া বিন গাজ রহঃ হযরত আয়শা রাঃ এর কাছে রাসূল সাঃ এর রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জবাবে বলেনঃ রাসূল সাঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার ব্যাপারে খুবই মনোযোগী ছিলেন। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৭৩৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৬৪৩, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৪৯৬, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়া, হাদীস নং-১৬৬৫, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৪৩৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৩১৫৪}

عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال تعرض الأعمال يوم الإثنين والخميس فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয় [আল্লাহর কাছে]। আর আমার আমল উপস্থাপন করার সময় রোযারত থাকাকে পছন্দ করছি। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৭৪৭, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৬৬৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৭৫৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৬১৭, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৫৪১, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৪১৯১}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...