আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
377 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ শায়েখ,

আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।  আমি যে হলে থাকি সেই হলের প্রভোষ্ট ম্যাম আমাকে প্রশ্ন করে বসেন যে,

ইসলামে যদি ফ্রি মিক্সিং জায়েজ না হয়,তাহলে হজ্বের সময় কেন ফ্রি মিক্সিং হয়?

তার আগে পর্দা নিয়ে কথাবার্তা চলেছিল।ম্যাম বললেন যে, ইসলাম তো বলে মেয়েদের যদি জ্ঞান অর্জন করতে হয় তাহলে সুদূর চীনে যেতে হলেও যাও।তখন আমি বললাম যে সেটা তো ইলমে দ্বীনের জ্ঞান মাহরাম সহ। জেনারেল লেখপড়ার জন্য মাহরাম ছাড়া তো ভ্রমণ করা জায়েজ নেই। আরো বলেছিলাম যে, ইসলামে তো ফ্রি মিক্সিং জায়েজ নেই। তখব ম্যাম হজ্বের প্রশ্ন করেন।

আমি বলেছিলাম, ম্যাম কা'বা শরীফ তো পবিত্র। আর জায়গা টাও তো পবিত্র। সেখানে আল্লাহর ইবাদাতের জন্যই তো যাওয়া হয়। এমন কিছু কথা বলেছিলাম।তখন ম্যাম বললেন যে, তাহলে তুমি কেন বিশ্ববিদ্যালয়কে পবিত্র ভাব না? তাহলে এখানে ফ্রি মিক্সিং এ কেন সমস্যা হবে যদি হজ্বে না হয়?

ম্যামকে পরে জেনে জানাতে চেয়েছি,ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

+2 votes
by (671,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই দুটি মাসয়ালা জেনে নেইঃ

এক,
মাহরাম না থাকলে মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। 
হজ্জ উমরাহতে মাহরাম সহ থাকতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছে

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
 
 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।

দুই,
হজ্বের ইহরামে থাকা অবস্থায় কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা নিষেধ।
তবে যেহেতু পর পুরুষ থেকে পর্দা করা সব সময়ের বিধান। হজ্বের সময়টা এর ব্যতিক্রম নয়।
তাই হজ্বের সময়ও মহিলাদের জন্য মুখ খোলা রাখা বৈধ নয়।

এ কারণে হাজী মহিলাদের উচিত এমনভাবে চেহারা আবৃত রাখা, যাতে মুখমণ্ডলের সঙ্গে কাপড় লেগে না থাকে। বর্তমানে এক ধরনের ক্যাপ পাওয়া যায়,যা পরিধান করে সহজেই চেহারার পর্দা করা যায়।
হজ্বের মত একটি মহান পবিত্র ইবাদতের সময় শরীয়তের পর্দার বিধান লঙ্ঘণ করে বেপর্দা হওয়ার গোনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা জরুরী।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْرِمَاتٌ، فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا عَلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ»

উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হজ্বের ইহরাম অবস্থায় ছিলাম। হাজ্বীদের কাফেলা যখন আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তখন আমরা মাথা থেকে চেহারার উপর চাদর ঝুলিয়ে দিতাম। যখন তারা আমাদেরকে অতিক্রম করে যেত তখন চাদর সরিয়ে ফেলতাম। [সুনানে আবু দাউদ ১/২৫৪, হাদীস নং-১৮৩৩]

أَنَّ عَلِيًّا «كَانَ يَنْهَى النِّسَاءَ عَنِ النِّقَابِ، وَهُنَّ حَرَمٌ، وَلَكِنْ يُسْدِلْنَ الثَّوْبَ عَنْ وُجُوهِهِنَّ سَدْلًا»

হযরত আলী রা. মহিলাদেরকে নিষেধ করতেন তারা যেন ইহরাম অবস্থায় নেকাব ব্যবহার না করে। তবে চেহারার উপর দিয়ে কাপড় ঝুলিয়ে দিবে। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ১৪৫৩৯; ]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
হজ্জে সকল মহিলাগনকে তাদের মাহরামদের সাথেই থাকতে হয়।
এবং সেখানেও পূর্ণ ভাবে পর্দা পালন করতে হয়। 

আমাদের সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানেও যদি এই নিয়ম করা হয় যে প্রত্যেক মহিলার সাথে ক্লাশে পাশেই তার প্রাপ্ত বয়স্ক মাহরাম পুরুষ বসে থাকবে,এবং উক্ত মহিলা পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে ক্লাশ করবে।  
অপ্রয়োজনীয় কথা বলবেনা।
দৃষ্টি নত রাখবে। 
তাহলে এতে শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে কোনো সমস্যা হবেনা।
কেননা উক্ত পদ্ধতিতে ফিতনার আশংকা থাকেনা।

হজ্জে উক্ত নিয়ম মানার কারনেই ফিতনার কোনো নজির নেই।
আর ফ্রি মিক্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে  এই নিয়ম না মানার কারনে হাজারো লক্ষ ফিতনার নজির আমাদের সামনে দৃশ্যমান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...