আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
edited by
আমার কিছু প্রতিবেশী সহপাঠী আছে যাদের সাথে আমি একই ফ্ল্যাটে থাকি আলাদা রুমে। তাদের সাথে কিছুক্ষণ মিশলেই মনে হয় আমার দ্বীনি কোনো উপকার হলোনা, বরং ক্ষতি হলো। তাদের মধ্যে আমি প্রকাশ্য পাপ ও দেখেছি এবং বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা শোনেনি। তাদের সাথে কিছুক্ষণ মিশলেই দ্বীনি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গীবত, অনর্থক কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তাদের সাথে সম্পর্ক থাকলে আমার দ্বীনি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি যদি তাদের সাথে সালাম দেওয়া, সাহরী তে ডেকে দেওয়া, কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ইত্যাদি ছাড়া অন্যান্য কথা বলা বন্ধ করে দেই এবং না মিশি তাহলে কি তাদের প্রতি আমার কোনো দায়ীত্ব থাকবে? অর্থাৎ তাদের প্রকাশ্য পাপগুলো আমি দেখার পরেও যদি উপদেশ না দেই, আমি কিছু দূরে একা একা আমার মতো থাকি, তাহলে কি তখন আমার পাপ হবে?

আরেকটি সমজাতীয় প্রশ্ন। আমি যে বাড়িতে থাকি সেখানে অনেককেই আমি প্রকাশ্য পাপে লিপ্ত দেখি। তারা আমার পরিবারের কেউ নয়। এখন তাদের যদি আমি উপদেশ না দিয়ে প্রথম থেকেই এড়িয়ে চলি, মাঝেমাঝে তাদের কোনো কথার জবাব দেই, তাহলে কি তাদের প্রতি আমার কোনো দায়ীত্ব থাকবে উপদেশ দেওয়ার?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم ۚ مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-১১০

 

মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، - وَهَذَا حَدِيثُ أَبِي بَكْرٍ - قَالَ أَوَّلُ مَنْ بَدَأَ بِالْخُطْبَةِ يَوْمَ الْعِيدِ قَبْلَ الصَّلاَةِ مَرْوَانُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ الصَّلاَةُ قَبْلَ الْخُطْبَةِ . فَقَالَ قَدْ تُرِكَ مَا هُنَالِكَ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ " .

তারিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ঈদের সালাতের পুর্বে মারওয়ান ইবনু হাকাম সর্বপ্রথম খুতবা প্রদান আরম্ভ করেন। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, খুতবার আগে হবে সালাত (নামায/নামাজ)। মারওয়ান বললেন, এ নিয়ম রহিত করা হয়েছে। এতে আবূ সাঈদ (রাঃ) বললেন, ‘এ ব্যাক্তি তো কর্তব্য পালন করেছে। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যদি অন্যায় কাজ দেখে, তাহলে সে যেন হাত দ্বারা এর সংশোধন করে দেয়। যদি এর ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখের দ্বারা, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তর দ্বারা (উক্ত কাজকে ঘূণা করবে), আর এটাই ঈমানের নিম্নতম স্তর। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৮৩

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. আপনি যদি তাদেরকে প্রকাশ্য পাপ থেকে সরাসরি বাঁধা দিতে সামর্থ্য রাখেন তাহলে সরাসরি বাঁধা দিবেন এবং সরাসরি বলবেন। আর যদি সরাসরি বাঁধা দিতে সামর্থ্য না রাখেন তাহলে মুখে বলবেন। আর যদি এটাও না পারেন তাহলে মনে মনে ঐ পাপ কাজকে ঘৃণা করবেন। কারণ, রাসূল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমাদের কেউ যদি অন্যায় কাজ দেখে, তাহলে সে যেন হাত দ্বারা এর সংশোধন করে দেয়। যদি এর ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখের দ্বারা, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তর দ্বারা (উক্ত কাজকে ঘূণা করবে), আর এটাই ঈমানের নিম্নতম স্তর। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৮৩

 

২. পৃথিবীতে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো। তাই তার যথাযথ হেফাজত করা চায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি দেখেন যে, তাদের সাথে মিশলে আপনার ঈমান-আমলের ক্ষতি হচ্ছে অথবা ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে তাহলে তাদের কাছে যাতায়াত কমিয়ে দিবেন এবং তাদের সাথে কথা বার্তাও কম কম বলেবেন।

 

৩. তবে সম্ভব হলে সর্বদা তাদেরকে ভালো কাজের দিকে আহবান করতে থাকবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...