আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by
এক নারীর সাথে আমার হারাম সম্পর্ক ছিল। আমি প্রথম থেকে তাকে বিয়ে করতে চেয়েছি। কোর্ট ম্যারেজ করতে চেয়েছিলো। আমি স্বাক্ষীও জোগাড় করেছিলাম।  সে বলেছিলো ওমুক চাকরি হলে সে আমাকে বিয়ে করবে। কিন্তু যখন চাকরি হলো সে জানালো এস্তেখারাতে সে পজিটিভ কিছু পায়নি। কিন্তু সে সবসময় আমার জন্য ব্যাকুল থাকত। সে যেদিন জানালো পজিটিভ কিছু পায়নি এর আগেই তার কাছে এক ধনী পাত্রের প্রস্তাব আসে। সে আমার সাথে সম্পর্কে থাকার সময়ই ওই ছেলেকে গ্রহনের ইচ্ছাপোষণ করে এরপর নাকি এস্তেখারা করে পজিটিভ পেয়েছে। সে আমাকে সবধরনের আশা দিয়েছিলো। এই ধনী ছেলে আসার পর সে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে চলে যায়। এরপর সেই ছেলেকে বিয়ে করে। আমি আমার জীবন দিয়ে তার জন্য চেষ্টা করতাম। সে এটা জানত তাই দরিদ্র হওয়ার পরও সে আমাকে ভালবাসত। সবশেষে সে আমাকে ঠকিয়েছে। ওয়াদাভঙ্গ করেছে। সে শেষে বলেছিলো আমি নাকি তার রিজিকে নাই। তাকদীর এর দোহাই দিয়ে কি মানুষ যা খুশি করতে পারে? সে কি ওয়াদাভঙ্গ করে নি? সে কি এর ফল পাবে না? সে অনেকবার মাফ চেয়েছে কিন্তু আমি মন থেকে মাফ করতে পারিনি। আমি তার প্রতারনার জবাব দিতে গেলে সে আমাকে হিংসুক বলেছে কারন সে নেয়ামতপ্রাপ্ত। তীব্র কষ্টে এখন আমার দুনিয়া আখেরাত হুমকির মুখে। অনেক কষ্টে কাউকে বিশ্বাস করেছিলাম। এমন হবে কল্পনা করিনি। সব ধরনের আমল করার চেষ্টা করছি কিন্তু এই মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পাচ্ছি না। আমাকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন।

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


শরীয়তের বিধান হলো কোন গোনাহের কাজের প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করা জায়েজ নয়। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিবাহ পূর্ব প্রেম ভালোবাসায় কৃত কোনো ওয়াদা পালন করাই জরুরি নয়।  শরীয়ত বলে যে গোনাহের কর্মের কোন প্রতিশ্রুতিই পূর্ণ করা আবশ্যক নয়।

এমন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে কোনো গুনাহ হবেনা। 
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই নারীর প্রতারণার গুনাহ হবেনা।     

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

সুরা বাকারার ১৬৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕوَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ্র ভালবাসার মতই পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে । আর যারা যুলুম করেছে যদি তারা আযাব দেখতে পেত, (তবে তারা নিশ্চিত হত যে,) সমস্ত শক্তি আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।

অর্থাৎ কাফেররা আল্লাহকে যেমন ভালবাসে তাদের (মিথ্যা) মা’বুদদেরও তেমন ভালবাসে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলার ভালবাসা কাফেরদের মনেও ছিল, কিন্তু তা ছিল শির্কযুক্ত। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নয়।

★অবৈধ প্রেম ভালোবাসাও মানুষকে অন্ধ বানায়,অনেক সময় শিরকের নিকটতম করে দেয়। 

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
যেই আল্লাহ সৃষ্টি করলেন,খাওয়ালেন,থাকার জায়গা দিলেন,চলার শক্তি দিলেন,কথা বলার শক্তি দিলেন,লক্ষ কোটি নিয়ামতে রাখলেন,সেই আল্লাহর অবাধ্যতা করে সেই আল্লাহকে মুহাব্বত না করে এই দুনিয়ার নারীর লোভে পড়ে অবৈধ প্রেমে জড়ানো কোনোক্রমেই উচিত নয়।
মহান আল্লাহর নিকটতম হওয়ার চেষ্টা করতে হবে,তাকে মুহাব্বত করতে হবে।
,  
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হবে,পূর্বের সেই অবৈধ প্রেম ভালোবাসা থেকে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা।
ভবিষ্যতে এহেন কাজ না করার প্রতি ওয়াদা বদ্ধ হওয়া।    

আপনি ঐ নারীকে পূর্ণ ভাবে ভুলে যান,যেখানে গেলে তার কথা মনে হবে,যেকাজ করলে তাকে মনে পড়বে,এহেন সমস্ত কাজ থেকে দূরে থাকুন।

প্রয়োজনে দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হোন।
বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে যান।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...