আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম

ঘটনাঃ

  • প্রথমে বলি,আমার কাছাকাছি কোন আলেম নাই, তাই বাধ্য হয়ে এই পাবলিক প্লেসে কথাগুলো বলতে হচ্ছে।

আমার আব্বু ক্যামন ইসলাম বিদ্বেষী টাইপের। আগে নামাজ শুধু বলতে ২ঈদ এই পড়ত আর মাঝেমধ্যে জুম্মা। তারপর, আল্লাহ তাকে আমার দাদি আর আম্মুর মাধ্যমে গড়ে ৪-৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তৌফিক দেয়। আলহামদুলিল্লাহ।। 

এখন, গতকাল কলিজার টুকরা বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর কটুক্তির প্রতিবাদে মিছিল এ আমি গেছিলাম। বাড়ি বলেই গেছিলাম, আম্মুকে শুধু। এখন আমার আব্বু আজ সকালে জেনে আমাকে বলে 'কেন গেলাম, ওই খানে পুলিশ এ মারধোর করতে পারত, সামনে পরীক্ষা( ssc2022), যদি কিছু হত (নিচে বিস্তারিত বুঝবেন)।' তাই, আমি সাথে সাথে তার কথার প্রতিবাদ করি ও একটু বেশি আওয়াজ এ বলি।

এখন, কিছু কিছু জন্য আব্বুর উপর আমার একটু রাগ আছে। কারন সে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাকে বিশ্বাস করে না। (একজন বাবা তার ছেলেকে বিশ্বাস করে না এর চেয়ে বড় কষ্ট কি আছে?) অথচ আল্লাহর রহমতে আমি ছোটবেলা থেকে আল্লাহকে, বর্তমান এমন পরিবারের সন্তানদের থেকে একটু বেশিই ভয় করতাম। মিথ্যা বলতাম না তেমন, খুব কম ক্ষেত্রে মিথ্যা বলতাম। পরে দ্বীনি বুঝ আল্লাহ দিছে, তো আলহামদুলিল্লাহ এখন বলি না, ভুল বশত বা ইয়ার্কির ছলে ২-১টা হয়। তারপর সে বেশ মুনাফিক টাইপের। এখন এই কথা তো পরে অন্য। তৃতীয়ত তাকে ভালো হোক খারাপ হোক যাই বলা হোক না কেন অধিকাংশ ক্জায়গায় উল্ট বোঝে ও চিল্লাচিল্লি-গ্যাঞ্জাম করে।যেমনঃ নামাজের কথা বেশি বললে বিরক্ত ও রাগারাগি করে।

তারপর, আব্বু আমাদের জন্য কষ্ট করে ইনকাম করে,কারন তার সম্মানের দরকার। অথচ সম্মানের মালিক তো আমার রব!!...আমার বড় ভাই ভালো রেসাল্ট করতে পারি নি তাই আমার উপর অনেক আশা।... এখন, আমার পড়াশোনা ভালো ছিল কিন্তু করোনার সময় খারাপের পাল্লায় পড়ে অনেক পিছিয়ে যায়।। তারপর, মহান রব তার রহমতে আমাকে দ্বীনি বুঝ দেয়, তখন শুরু হয় আরেক গল্প, শয়তান, আমি আর আল্লাহ। তাই তখন থেকে অনেক দিন পর্যন্ত পড়াশোনা করা হয়নি। তারপর, আমার আগ্রহ হয় দ্বীনি ইলমের প্রতি। ফোনে বই পড়তাম ইত্যাদি। তারপর স্কুল কলেজের নারী ফিতনার জন্য পড়াশোনা আর করতে ভালো লাগত না এবং সিদ্ধান্ত নিছিলাম যে মাদ্রাসায় ভর্তি হব। সব মিলায় পড়াশোনা ভালো হয়নি। আর প্রায় ১সপ্তাহ পরে ssc।। এখন একটু পড়ার চেষ্টা করতিছি কারন ইচ্ছা দাঈ হওয়ার ও জীবনে যা-ই হইনা কেন উম্মাহর জন্য - ইসলামের জন্য কিছু করার।তাই আব্বু সহ পরিবারের সাথে আমার চাল-চলন, আচার-আচরন মেলে না কারন তারা চায় দুনিয়া আর আমি চায় আখিরাত। এতে আবার আব্বু কষ্ট পায়।

চেষ্টা করি ইসলাম পরিপূর্ণ মানার জন্য। তাই পরীক্ষার হলে দেখে-শুনে না লেখার চেষ্টা করি।। একটা জিনিষ ভাবুন আমি যদি না দেখে-শুনে লিখি। আর অন্যেরা দেখে, লাস্টে উত্তর মিলাই,,যা আমার সুযোগ নেই। তাই আমার রেসাল্ট খারাপ হওয়াটা অস্বাভাবিক না।। এখন আমার পরিবার আমার কাছে ssc তে অনেক ভালো রেসাল্ট চায় এবং আমার ইসলামের জন্য কিছু করার আশা। পাশাপাশি, ফতোয়ে দেখে আমি আমার ভুল বুঝে এখন একটু পড়া চেষ্টা করতেছি। কিন্তু আমার অনেক গ্যাপ থেকে গেছে যা এই কয়দিনে পূরন করা অসম্ভব। 

যাই হোক,,আব্বু আমাকে অনেক ইসলামিক কাজে বাধা দেয়। সে সহ আমার ভাই, দ্বীনি ভাইদের সাথে মিশতে আপত্তি জানায়। কারন, আমার দ্বীনি  ভাইরা যাদের সাথে মিশি তারা আমার চেয়ে বেশ বড়। 

সব মিলায়, আব্বুর আচরন গত কিছু কারনে আমার রাগ থাকায় আমাকে দ্বীনের ব্যপারে বাধা দিলে আমি তর্ক ও একটু জোরে কথা বলি।। উল্লেখ্যঃ নফল-সুন্নাহ এ বাধা দিলে চুপ করে শুনি, ধৈর্য ধরি। তাছাড়া দ্বীন বাদে অন্যান্য ৯৮% বিষয়েক ধৈর্য ধরি। কিন্তু ফরজ ওয়াজিব বা কিছু কিছু যায়গায় আমার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যায়। কিছুটা জোরে কথা বলা ও তর্ক করে ফেলি। "যেমনঃ উপরে উল্লেখিত মিছিলে যাওয়া নিয়ে, আমি কেন যাবনা যেখানে আমার আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছে? কেন যাবনা সেই মানুষের জন্য যে এই আমার জন্য তায়েফের ময়দানে রক্ত দিয়েছে!! তাও আমার জন্মের হাজার বছরের ও আগে!"

এই ঘটনা,, এখন নিচে কিছু প্রশ্ন ও অনুরোধ করছি। মেহেরবানি করে উত্তর ও অনুরোধ শুনবেন।

প্রশ্নঃ

  • আমার এমন তর্ক ও জোরে কথা বলায় কি গুনাহ হবে?।। হোক দ্বীনি ব্যাপারে বা অন্য সামান্য ক্ষেত্রে।।
  • এই পরিস্থিতিতে কি আমার রেসাল্ট ভালোর জন্য কি এক্সাম হলে দেখে লেখা জায়েজ হবে? যদি আমি সামনে একেবারে ভালোভাবে পড়া ও কষ্ট করার দৃঢ় সপথ নিই?

অনুরোধঃ

উক্ত ঘটনার উপর আপমাদের ইসলাহী পরামর্শ একান্ত কাম্য!! তাদেরকে বোঝানো দরকার হলে কোন পথ-উপায় অবলম্বন করে বোঝাবো?

এবং আপনাদের কাছে দোয়া প্রার্থী।

[জাঝাকুমুল্লাহ খাইরান]

by (31 points)
একটু সংযোজন করা হয়েছে তাজ পুনরায় পড়ার অনুরোধ রইল।

1 Answer

0 votes
by (684,040 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

অর্থঃ “আর তোমার প্রতিপালক ফয়সালা করেছেন যে, তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদত করবে এবং পিতামাতার সাথে ভালব্যাবহার করবে। তোমার বর্তমানে তাদের একজন বা উভয়েই বার্ধ্যকে পৌছে যায় তাহলে তাদের সামনে উফ শব্দটুকুও করবে না এবং তাদেরকে ধুমুক দিবে না । তাদের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে। সূরা আল-ইসরা, আয়াত,২৩।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ وَلَدٍ بَارٍّ يَنْظُرُ نَظْرَةَ رَحْمَةٍ إِلَّا كَتَبَ اللهُ بِكُلِّ نَظْرَةٍ حَجَّةً مَبْرُورَةً “، قَالُوا: وَإِنْ نَظَرَ كُلَّ يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ؟ قَالَ: ” نَعَمْ، اللهُ أَكْبَرُ وَأَطْيَبُ “

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন কোন পিতা মাতার ভক্ত সন্তান নিজের পিতা মাতার প্রতি অনুগ্রহের দৃষ্টিতে দেখে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বদৌলতে তার জন্য [আমলনামায়] একটি হজ্জ্বে মাবরূর [কবুল হজ্ব] এর সওয়াব দান করেন। সাহাবারা আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি দৈনিক একশবার দৃষ্টি করে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তারও। আল্লাহ মহান ও পবিত্র। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৭৪৭২, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৪৫৫৩৫, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-৪৯৪৪}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
বাবার সাথে এমন তর্ক ও জোড়ে কথা বলার কারনে গুনাহ হবে।

(০২)
না,এক্সাম হলে দেখে লেখা কোনো ভাবেই জায়েজ হবেনা।

★আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে বাবার সাথে কোনোভাবেই তর্কে না জড়াতে।
কিছু কষ্ট দেয়ার মতো কথা বললে আপনি দাঁতে দাঁত  চেপে সহ্য করে যাবেন,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম জাযা দিবেন,ইনশাআল্লাহ। 

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য আপনার বাবা আপনাকে যে চাপ দিচ্ছে,এটিকে মনে প্রানে মেনে নিয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া করুন। 

আপনি জেনারেল লাইনে লেখাপড়া করার পরেও দ্বীনের দায়ী হওয়ার চেষ্টা করলে হতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ।  

তাই জেনারেল লাইনের লেখাপড়াকে গুরুত্ব দিবেন আশা করি।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (31 points)
যেহেতু গুনাহ হয়েছে তাই কি আব্বুর কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে নাকি আল্লাহর কাছে তাওবা করলে তা যথেষ্ঠ? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...