আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (28 points)
হুজুর ঈমান ভাংগার কারন  ও কুফরি সমন্ধে জানার পর বিভিন্ন প্রশ্ন মনে জাগতেছে। যেমন

১.হাদিসে আছে কালোজিরা সর্বরোগের মহাঔষধ। আমার মনে হত তাহলে কালোজিরা খেলে যদি সবরোগ যদি ভালো হয়, তাহলে মানুষের এত রোগ কেন হচ্ছে, তাহলে তো কালোজিরা খেলেই ভালো হয়ে যাবে। এরকম সন্দেহ হত এর কারনে কি ঈমান ভংগ হবে?আমি ঈমান ভংগের কারন জান্তাম না।
২.এক লেকচারে শুনেছিলাম হাদিসে আছে,  বগলের চুল উপরাতে হয়, কাটতে হয় না, তখন আমি মনে মনে ভাবছিলাম বগলের  চুল উপরালে তো ব্যাথা লাগবে এক্টু মন খারাপ হয়েছিল।এর কারনে কি ঈমান ভংগ হবে? হুজুর এ রকম বিভিন্ন কথা মনে পরছে খুব পেরেশানিতে আছি হুজুর।

৩.ছোট বেলায় আমরা একটা কবিতা বলতাম -

ব্র‍্যাকের আপা বড় বড় খোপা

খোপা ধরে মারলাম টান
খ্রিস্টান খ্রিস্টান

এখন আমি আমার স্ত্রীকে মাঝে মাঝে বলতাম ঐ কবিতার মত সুর করে এমনি বলতাম  -

তোমার কোন একটা অংগ ধরে যখন আমি মারব টান
তখন তুমি হয়ে যাবে খ্রিস্টান টা টান টান।
এভাবে সুর করে বলতাম। তখন আমি ঈমান ভংগের কারন সমন্ধে জানতাম না।

হুজুর আজকে আমি ভুল করে এভাবে তাকে বলেছি-

তোমার কোন এক অংগ ধরে যখন দিব টান
খ্রিস্টান খ্রিস্টান।
এভাবে বলার পর আমি ভুল বুজতে পেরে সাথে সাথে ইস্তিগফার পরেছি।তাকে কুফরি উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি।আমার মনে এগুলো সমন্ধে তখন কিছু ছিলনা।আগে এভাবে বলার কারনে মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেছে।এখন এ কথা বলার দারা কি কোন সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يَقُولُ : " فِي الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ ، إِلَّا السَّامَ " قَالَ ابْنُ شِهَابٍ : السَّامُ : الْمَوْتُ . وَالْحَبَّةُ السَّوْدَاءُ : الشُّونِيزُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, কালিজিরায় সকল প্রকার রোগের উপশম আছে, তবে ‘আস্সাম’ ব্যতীত। আর ‘আস্সা-ম’ হলো মৃত্যু। এর ‘আল হাব্বাতুস্ সাওদা’ হলো (স্থানীয় ভাষায়) ‘শূনীয’ (অর্থাৎ কালিজিরা)। 
(বুখারী ৫৬৮৭, ৫৬৮৮; মুসলিম (২২১৫)-৮৮, ৫৬৫৯ ইবনু মাজাহ ৩৪৪৭, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৮৫৯, ১০৬৯; আল জামি‘উস্ সগীর ৭৬৯৬, সহীহুল জামি‘ ৪২৪৭, আহমাদ ৭৫৫৭, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৫৯১৮, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ১০৫, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৪৯৩।)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে
আলোচ্য হাদীসে কালোজিরার ব্যাপক ব্যবহার সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশনা দিয়েছেন। কখনও তা এককভাবে এবং কখনও অন্য কোন খাবার বা পথ্যের সাথে মিশিয়ে তা ব্যবহার করা হয়। কালোজিরার বহুমুখী ব্যবহার আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় উষ্ণভাবে ব্যবহার ও উষ্ণতায় বিপরীতভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে তা বেশ উপকারী হিসেবে পরীক্ষিত। ইমাম কিরমানীর মতে, সাধারণভাবে তা সকল রোগের মহৌষধ।  (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৬৮৮)

চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেছেনঃ কালোজিরা হচ্ছে উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির পথ্য। জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ পেটের আর্দ্রতার সমস্যায় এটি বেশ উপকারী। তা গুঁড়া করে গরম পানির সাথে সেবনে প্রস্রাবের সমস্যা দূরীভূত হয়। কালোজিরার গুঁড়া সুতি কাপড়ে নিয়ে শুকলে সর্দি ও ঠাণ্ডা কাশিতে বেশ উপকার হয়। পানির সাথে সামান্য পরিমাণ কালোজিরা খেলে হাঁপানি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। ভিনেগার (সিরকা)-এর সাথে গরম করে কুলি করলে দাঁতের ব্যথায় বেশ কার্যকর। অন্যান্য হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালোজিরাকে সাধারণভাবে মৃত্যু বতীত সকল রোগের পথ্য হিসেবে অভিহিত করেছেন।

আবূ বকর ইবনুল ‘আরাবীর মতে, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের নিকট কালোজিরার মাঝে সকল রোগের আরোগ্যের উপাদান রয়েছে। তবে বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতিতে ভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। শায়খ আবূ মুহাম্মাদ ইবনু আবূ হামযাহ্ বলেছেনঃ আলোচ্য হাদীসের ব্যাপারে কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন, তবে তা তাদের মস্তিষ্কপ্রসূত বিষয়। কিন্তু প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথাই বাস্তব সত্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অভিজ্ঞতার আলোকে বিষয়টি পরীক্ষিত। সমালোচকদের এ বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই। তারা শুধুমাত্র ধারণাপ্রসূত কথাই বলে। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২২০৮-[৭৫])


অন্য এক হাদীসে এসেছেঃ 
খালিদ ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের অভিযানে) বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন গালিব ইবনে আবজার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে গেলেন। এরপর আমরা মদিনায় ফিরলাম, তখনো তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনে আবি আতিক। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এ কালিজিরা সঙ্গে রেখো। এর থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে ফেলবে, তারপর তন্মধ্যে জয়তুনের কয়েক ফোঁটা তেল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এদিক-ওদিকের ছিদ্র দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে প্রবিষ্ট করাবে। কেননা আয়েশা (রা.) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, এই কালিজিরা ‘সাম’ ছাড়া সব রোগের ওষুধ। আমি বললাম, ‘সাম’ কী? তিনি বললেন মৃত্যু। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৮৭)

কালিজিরার বীজ থেকে একধরনের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস। এ ছাড়া কালিজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে। তাই যেকোনো রোগ নিরাময়ে, রোগ থেকে নিরাপদ থেকে অন্যান্য সতর্কতার পাশাপাশি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কালিজিরা সেবন করা যেতে পারে। আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই যারা এসব চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করে, তাদের কাছে রোগ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহারবিধি পাওয়া যাবে। কারণ একেক ধরনের রোগের জন্য কালিজিরার ব্যবহারবিধিও একেক রকম।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি উক্ত হাদীসের উপর না জানার কারনে একটি প্রশ্ন তুলেছেন মাত্র,এখানে হাদীসকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা আপনাত উদ্দেশ্য ছিলোনা,হাসি ঠাট্রা করাও উদ্দেশ্য ছিলোনা।

তাই প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
এর কারনে ঈমান ভেঙ্গে যাবেনা। 

(০৩)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
সমস্যা হবেনা।
তবে এহেন কথা না বলার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...