আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
117 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু'আলাইকুম। আমার প্রশ্ন হচ্ছে-
স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে কিন্তু সে যদি মিথ্যা বলে যে, আমি রাগের মাথায়, আর ভয় দেখানোর জন্য বলেছি যে 'তালাক দেবো' কিন্তু 'তালাক দিলাম' উচ্চারণ করিনি। তাহলে নাকি আল্লাহর কাছে স্বামী মিথ্যা বলার জন্য গুনাহগার হবে ঠিকই, কিন্তু তালাক নাকি কার্যকর হবেনা ( সত্যিকার অর্থে তালাক দেওয়ার পরেও)। আর স্ত্রী যদি মানুষের সামনে বলে যে স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে, তাহলে ৩ জন সাক্ষী ( পুরুষ) / ৬ জন সাক্ষী ( মহিলা) এর সামনে যদি স্বামী স্বীকার করে যে হ্যাঁ আমি রাগের মাথায়, ভয় দেখানোর জন্য দিয়েছিলাম, এখন মেনে নিয়েছি কেবল তখনই নাকি তালাক কার্যকর হবে। আর মিথ্যা বললে অথবা অস্বীকার করলে নাকি তালাক হবেনা, বউ নিয়ে সংসার করা যাবে।
১) স্বামী তালাক দিয়ে তা অস্বীকার করলে কি তালাক কার্যকর হয়না?

২) তালাক দিতে বা কার্যকর হতে কি কোনো সাক্ষীর প্রয়োজন আছে?
৩) সাক্ষীর ক্ষেত্রে ১ জন পুরুষ এর স্থলে ২ জন নারীকে গণনা করা হয়, অর্থাৎ যেখানে ৩ জন পুরুষ সাক্ষী হলেই চলে, ওখানে নারী বিবেচনায় ৬ জন নারী সাক্ষী লাগবে।  এটা কতটুকু সত্য আর তালাক এর ব্যাপারে এর প্রভাব কি?

[ বিঃদ্রঃ-  তিন মাসের গর্ভবতী স্ত্রীকে ফোনের মাধ্যমে স্বামী স্বাভাবিক কন্ঠে বলেছিলো, "তোমাকে আমি 'তালাক' দিলাম। এখন ফোনটা তোমার মায়ের কাছে দাও।" শাশুড়ীর কাছে সে বলেছে- "আপনার মেয়েকে আমি 'বাইন তালাক' দিলাম ( বাইন বলতে সাধারণত পরিপূর্ণ তালাক বলাই উদ্দেশ্য থাকে বাংলাদেশি যুবকদের মধ্যে, উল্লেখ্য, স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে তার খবর দেওয়ার জন্য শাশুড়ীর কাছে ঐটা বলেনি।) আর এটা নিশ্চিতই যে সে তালাক দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তালাক দিয়েছে ভেবেচিন্তে, কোনো রাগের মাথায়ও না, ভয় দেখানোর জন্যও না। কারণ, সে ঐদিন এর পর থেকে ৩ মাস ( ১১ দিন কম) কোনো যোগাযোগ ও ভরনপোষণ করেনি। নিশ্চয়ই কেউ ভয় দেখানোর জন্য বা স্ত্রীকে সাময়িক শায়েস্তা করার জন্য গর্ভাবস্থায় সেই স্পর্শকাতর মুহূর্তে তার স্ত্রীকে এভাবে একা ছেড়ে দেওয়ার কথা নয়। ]

1 Answer

0 votes
by (685,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]
,
সুতরাং তালাকের পর স্বামী তালাকের কথা অস্বীকার করলে, আদালতে স্বামীর কথাই গ্রহণযোগ্য হবে। সে হিসেবে বিয়ে বহাল থাকবে।
তালাকের ফায়সালা দেয়া হবেনা।
,
তবে স্ত্রী যদি স্বামীর তালাক প্রদানের বিষয়ে নিশ্চিত হয়,তাহলে তার জন্য করণীয় হল, স্বামীর কাছ থেকে খোলা তালাক নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। যদি এতেও স্বামী রাজি না হয় এবং বাধ্য হয়ে স্ত্রী তার সাথে থাকতে হয়, তাহলে স্ত্রী গুনাহগার না হলেও স্বামী যিনার গুনাহে গুনাহগার হবে।
(রদ্দুল মুহতার ৪/৪৬৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এই প্রশ্ন ও এ সংক্রান্ত আগের প্রশ্ন গুলোর বিবরণ মতে উক্ত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে।এখন তারা আর একত্রে বসবাস করতে পারবেন না।
,
স্ত্রী যখন তালাক শব্দ শুনে নিয়েছে, তাই স্ত্রীর উপর ওয়াজিব স্বামীর সাথে সহবাসে লিপ্ত না হওয়া। স্বামী যদি অস্বীকার করে, তাহলে স্ত্রীকে প্রমাণ উপস্থাপন করতে বলা হবে।যদি স্ত্রী ব্যর্থ হয়, তাহলে স্বামীকে কসম খাইতে বলা হবে।যদি স্বামী কসম করে নেয়, তাহলে স্ত্রী খোলা তালাক চাইবে,তাতেও কাজ না হয়ে  ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবে। স্বামী মিথ্যা বললে, গোনাহ কিন্তু স্বামীরই হবে।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
সাক্ষীর প্রয়োজনীয়তা নেই।
তবে স্বামী তালাক প্রদানের বিষয় নিয়ে অস্বীকার করলে সাক্ষীর প্রয়োজনীয়তা আছে।

(০৩)
এখানে দুইজন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা বা চার জন মহিলা সাক্ষী দিতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...