আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in পবিত্রতা (Purity) by (48 points)
১। যেহেতু স্বপ্নদোষ হলে বিছানার চাঁদর ধুয়ে দেয়া হয়। তোশক ধোয়া হয় না, তবে তোষক আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায় ৷ আবার তার উপর নতুন চাঁদর দেয়া হয়। এভাবে কি শোয়া যাবে?

২। আমার হাত-পার তালু ঘামার সমস্যা আছে। এ কদিন খুব গরম পড়ছে, তাই রাতে শরীর ঘামে। আবার রাতে টয়লেট থেকে আসলে লুংগি এবং গোপনাংগ ভেজা থাকে। এমন অবস্থায় উপরে বর্ণিত বিছানায় শোয়া যাবে? আমার তীব্র ওয়াসওয়াসা আছে ৷ এ অবস্থায় আমি এতে অপবিত্র হব ভেবে মাথার বালিশের সাইডে শোয়া শুরু করছি ৷ বাসায় এজন্য কথা শুনতে হচ্ছে ৷ সলিউশন বলেন ৷স্বপ্নদোষ তো হবেই, আবার তোষক বাতাসে বা আইরন দিয়েও শোকানো যায় ৷তবে কেচে দেয়া তো সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় রাতে টয়লেট থেকে এসেই কি শোয়া যাবে ? আমি লুংগি শুকনা করে ঘোমানোর চেষ্টা করেছি ৷ এতে রাতে ঘুমানোর আগে অনেক সময় যায় ৷ রাতে এটোসেটো হয়ে কম জায়গা, যেখানে হয়ত কখনো নাপাক লাগেনি এমন জায়গায় চ্যাপ্টা হয়ে একসাইডে শোয়ার ট্রাই করি ৷ আবার বিছানার মাঝে কখনো বসি না, ডিংগিয়ে মাথার সাইড থেকে পায়ের দিয়ে যায়, যাতে আগে যেখানে কখনো হয়ত স্বপ্নদোষ হয়েছিল ৷সেখানে পা না পড়ে বা নাপাক না হয়, এভাবে দুঃশ্চিতায় মন ছোট হয়ে গেছে ৷এত বড় বক্স খাটে আমি একসাইডে কোনরকম শুই ৷এটা টের পেয়ে বাসার সবাই আমাকে নিয়ে চিন্তিত৷ বলতেও পারিনা কারণ ৷ সব নিয়ে হতাশ ।গরমে ঘামও হয় ,তাই চিন্তা যদি ঘামে অনেক আগের নাপাক যদি শরীরে লাগে ৷যদিও প্রতিদিন তো আর কারেন্ট যায় না, বা এতো ঘামে না ৷তবু্ও সন্দেহ হয়, যদি হালকা ঘামে নাপাক হয়ে যায় ৷ পরামর্শ দেবেন ৷পড়াশোনায়ও ক্ষতি হচ্ছে, দুঃশ্চিন্তা হয় প্রতিদিন সকালে ৷ রাতে ঘুমের মধ্যে নাপাক জায়গায় শুয়েছি, বা ভিজে নাপাক লাগলো কিনা ৷ সকালে গোসল না  করে লুংগি না পাল্টালে খাটে বসতেও সন্দেহ হয়, নাপাক ছড়িয়ে গেল নাকি। সমাধান দিয়েন
by (1 point)
ভাই পরামর্শ হল, আপনি দ্রুত কোন সাইকিয়াট্রিস্ট  এর শরাণাপন্ন হোন অথবা সম্ভব না হলে সরকারি মেডিক্যালের সাইকিয়াট্রি বিভাগ এর আউটডোর এ দেখান। ওয়াসওয়াসা একটি মানসিক রোগ, যাকে মেডিক্যালের ভাষায় ওবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার(OCD) বলে। অনেক দিনের শয়তানি ওয়াসওয়াসা মানসিক রোগে পরিণত হয়। আপনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ওয়াসওয়াসা, এটি মানসিক রোগে পরিনত হয়েছে, যা আপনাকে মানসিকভাবে অনেক কষ্ট দিতে থাকবে।
ইনশাআল্লাহ এ রোগ ৩/৪ মাস মেডিসিনে ও কাউন্সিলিং এ ভাল হয় এবং মেডিসিন কন্টিনিউ করতে হবে, সাথে আল্লাহর কাছেও এ রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করতে হয়।

1 Answer

0 votes
by (58,260 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বীর্য নাপাক। শুকনা হলে খুটিয়ে তুলে ফেলা ও ভিজা হলে কাপড়টি ধৌত করার কথা হাদীসে এসেছে। যেমন-

عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ: سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ [ص:56] فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الجَنَابَةُ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: «كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَأَثَرُ الغَسْلِ فِيهِ» بُقَعُ المَاءِ

অনুবাদ- আমার বিন মাইমুন রহঃ সুলাইমান বিন ইয়াসার রাঃ কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন, “আমি রাসূল সাঃ এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম তারপর তিনি নামাযের জন্য বের হতেন এমতাবস্থায় যে,কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকতো। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৩১, ২২৯}

 

অন্যান্য হাদীসে এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

আরো জানুন- https://ifatwa.info/13541/

তোষক পাক করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/3358/

 

নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি) পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি সময়-সুযোগ থাকে। আরো বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/6568/

 

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

 

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

 

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)

 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তোষক না ধুয়ে তার উপর পাক চাদর বিছিয়ে ঘুমানো যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। অত:পর তাতে ঘুমানোর পর শরীর ঘামলে বা ভিজা কাপড় পরিধান করে ঘুমালেও শরীর নাপাক হবে না। কারণ, সে পাক চাদরের উপর ঘুমিয়েছে। আর নাপাক হলো তোষক যা চাদরের নিচে আছে।

 

. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত তোষকে নাপাক লাগার পর তা শুকিয়ে গেলে তাতে ঘুমানো যাবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি উক্ত তোষকের উপরেই ঘুমাবেন। তবে তার উপর একটা পবিত্র চাদর বিছিয়ে নিবেন। অত:পর তার উপর ঘুমাতে কোনো প্রকার ইতস্তবোধ করবেন না। যদিও তার উপর ঘুমানোর পরে আপনার শরীর ঘামে বা ভিজা শরীর নিয়ে বা ভিজা কাপড় পরিধান করে ঘুমান। সুতরাং প্রশ্নোক্ত বিছানাতে ঘুমানোর কারণে আপনার শরীর ততক্ষণ নাপাক হবে না যতক্ষণ না বিছানা থেকে নাপাকির চিহ্ন আপনার শরীর বা কাপড়ে না লাগে এবং স্পষ্ট ভাবে আপনি উক্ত নাপাকি দেখতে পান।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নাপাক লাগার সন্দেহের উপর ভিত্তি করে বালিশের সাইডে শোয়া, বিছানাতে পাড়া না দেওয়া বা না বসা ইত্যাদি পরিহার করবেন এবং সর্বদা ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আর ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...