বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
বীর্য
নাপাক। শুকনা হলে খুটিয়ে তুলে ফেলা ও ভিজা হলে কাপড়টি ধৌত করার কথা হাদীসে এসেছে।
যেমন-
عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ:
سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ [ص:56] فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الجَنَابَةُ، قَالَ:
قَالَتْ عَائِشَةُ: «كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَأَثَرُ الغَسْلِ فِيهِ»
بُقَعُ المَاءِ
অনুবাদ-
আমার বিন মাইমুন রহঃ সুলাইমান বিন ইয়াসার রাঃ কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে
জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন, “আমি রাসূল সাঃ এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম তারপর তিনি নামাযের জন্য বের হতেন
এমতাবস্থায় যে,কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকতো। {সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-২৩১, ২২৯}
অন্যান্য
হাদীসে এসেছে-
يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ
الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ
وَالْمَنِيِّ
আম্মার বিন
ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে
হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা
কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}
আরো
জানুন- https://ifatwa.info/13541/
তোষক
পাক করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/3358/
নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা
বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি) পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে
নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি সময়-সুযোগ থাকে। আরো বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/6568/
ওয়াসওয়াসা থেকে
বাঁচার আমলঃ
ইবনে হাজার
আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে
তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد
زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال
تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে
সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে
কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে
সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি
তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে
কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
এর সর্বোত্তম
প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা,
لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا
بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে
আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ
عَلَى الْوَسْوَسَة
সমস্ত প্রশংসা ওই
আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)
ইবনে হাজার
আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان
ওয়াসওয়াসার
কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে
এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন
দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
১. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে তোষক না ধুয়ে তার উপর পাক চাদর বিছিয়ে ঘুমানো যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।
অত:পর তাতে ঘুমানোর পর শরীর
ঘামলে বা ভিজা কাপড় পরিধান করে ঘুমালেও শরীর নাপাক হবে না। কারণ, সে পাক চাদরের উপর ঘুমিয়েছে। আর নাপাক হলো
তোষক যা চাদরের নিচে আছে।
২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত তোষকে নাপাক লাগার
পর তা শুকিয়ে গেলে তাতে ঘুমানো যাবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি উক্ত তোষকের
উপরেই ঘুমাবেন। তবে তার উপর একটা পবিত্র চাদর বিছিয়ে নিবেন। অত:পর তার উপর ঘুমাতে কোনো প্রকার ইতস্তবোধ
করবেন না। যদিও তার উপর ঘুমানোর পরে আপনার শরীর ঘামে বা ভিজা শরীর নিয়ে বা ভিজা
কাপড় পরিধান করে ঘুমান। সুতরাং প্রশ্নোক্ত বিছানাতে ঘুমানোর কারণে আপনার শরীর
ততক্ষণ নাপাক হবে না যতক্ষণ না বিছানা থেকে নাপাকির চিহ্ন আপনার শরীর বা কাপড়ে না
লাগে এবং স্পষ্ট ভাবে আপনি উক্ত নাপাকি দেখতে পান।
সুতরাং
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নাপাক লাগার সন্দেহের উপর ভিত্তি করে বালিশের সাইডে শোয়া, বিছানাতে পাড়া না দেওয়া বা না বসা ইত্যাদি
পরিহার করবেন এবং সর্বদা ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আর ওয়াসওয়াসার
কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে
এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন
দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)