আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
323 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
closed by

1) উস্তাদ দুই এর জায়গায়  তিনটা সাহু সিজদাহ দিলে কি হবে? নাকি আবার তাশাহহুদ পড়ে সাহু সিজদাহ দিতে হবে?

2)https://ifatwa.info/6/?show=6#q6
এইখানে বলেছিলেন সিজদাহ্ তে কুরানের আয়াত পড়লে সমস্যা নেই।
কিন্তু উস্তাদ ক্লাসে বলেছিলেন যে এইখানে যেহেতু সিস্টেম এর বিপরীত হচ্ছে।(মানে তাসবিহ পড়ার জায়গায় আয়াত পড়া হয়েছে)তাই সাহু সিজদাহ লাগবে।
ব্যাপারটি একটু ক্লিয়ার করলে ভালো হয় যে সাহু সিজদাহ লাগবে নাকি এইটা ইখতিলাফি মাসালা?

3)আল ফিকহুল মুয়াসসার বইয়ে সাহু সিজদাহ রহিত হয়ে যাওয়ার পয়েন্ট এ একটা ছিল এমনঃ
সাহু সিজদাহ দিতে ভুলে গিয়ে নামায শেষ করে নামায পরিপন্থী কোন কাজ (যেমনঃ কথা বলা) করলে সাহু সিজদাহ রহিত হয়ে যায়।
এবং এক্ষেত্রে আর তার নামায আদায় করা ওয়াজিব নয়।
কিন্তু আমি জানতাম ওয়াক্ত এর মধ্যে মনে পড়লে আবার আদায় করা ওয়াজিব।
একটু বুঝিয়ে বলবেন।  

4)এসো ফিকহ শিখি বইয়ের ৯০ পৃষ্ঠায় লেখা
"ফরয বা ওয়াজিব তরক হলে নামাযের ভিতরে থাকা অবস্থায় যথাসম্ভব তা কাযা আদায় করতে হবে। "
কথাটা বুঝলাম না।
ফরয এর কাযা আদায় করতে হবে জানতাম।তারপর সাহু সিজদাহ লাগবে।
আর ওয়াজিব এর তো কাযা লাগার কথা না। সাহু সিজদাহ ই তো যথেষ্ট জানতাম। কিভাবে ওয়াজিব এর কাযা আদায় করব?

5) দখলদার জমিতে প্লট বানিয়ে তাতে মসজিদ বানালে তাতে নামায পড়া মাকরুহ।
কিন্তু এতে তো মসজিদ আবাদ করা বা নামায পড়া হলো না। মসজিদ টা তো ভাংগাও যাবে না। তবে কি ফাঁকা পড়ে থাকবে?

6)4রাকাত ফরয নামাযে শেষ রাকাতে তাশাহহুদ না পড়ে পঞ্চম রাকাত এর সিজদাহ্ দিয়ে দিলে আরেক রাকাত মিলিয়ে নফল বানাই আমরা। এতে কি ছয় রাকাতের সওয়াব  পাবো? নাকি শুধু শেষ দুই রাকাতের.. কারন নফল নামাযে তো দুই দুই রাকাত পর পর তাশাহহুদ পড়া ফরয.. কিন্তু এইখানে তো আমরা 4নম্বর রাকাতের তাশাহহুদ পড়িনাই।  তাহলে তো তিন ও চার নম্বর রাকাত এর নামায হলো না। নাকি প্রথম দুই ও শেষ দুই রাকাতের সওয়াব পাবো?

closed

1 Answer

+1 vote
by (675,120 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) এতে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা,নামাজ  হয়ে যাবে।
সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
,
(০২)    
শরীয়তের বিধান হলো রুকু সেজদায় কুরআন তেলাওয়াত করা জায়েজ নয়,উহা সুন্নাতের খেলাফ, মাকরুহ।
তবে কেহ এমনটি করলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। 
,
 হাদীসে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে।
 তিনি বলেন,
نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَقْرَأَ رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا»
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নিষেধ করেছেন, রুকূ এবং সিজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ করতে।” (নাসাঈ, হা/১১১৯-সহীহ)

ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন,
أَلَا إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَقْرَأَ رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا، فَأَمَّا الرُّكُوعُ فَعَظِّمُوا فِيهِ الرَّبَّ، وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي الدُّعَاءِ قَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ
“তোমরা শুনে রেখ ! আমাকে নিষেধ করা হয়েছে রুকু অবস্থায় কিরাআত থেকে এবং সিজদা অবস্থায়। রুকুতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা বর্ণনা কর। আর সিজদায় তোমরা দোয়া করতে চেষ্টা কর। তোমাদের জন্য দোয়া কবুল হওয়ার উপযুক্ত সময় এটাই।” (সুনান নাসাঈ হ/১১২০-সহীহ)

উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে জানা যায় যে, রুকু সিজদা অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নেই।
তাই রুকু ও সেজদাহ অবস্থায় অধিক পরিমানে রুকু-সেজদার তাসবীহগুলো পাঠ করতে হবে।

"ویکره أن يقرأ في غير حال القيام؛ لأنه صلى الله عليه وسلم نهى عن القراءة في الركوع والسجود... " (بدائع الصنائع، 1/218 ط: سعيد) 
দাড়ানো অবস্থা ব্যাতিত অন্য হালতে কিরাআত পড়া মাকরুহ।
কেননা রাসুল সাঃ রুকু সেজদায় কুরআন পড়া থেকে নিষেধ করেছেন 

البحر الرائق شرح كنز الدقائق (3 / 258):
"( قوله: وسبح فيه ثلاثاً ) أي في ركوعه بأن يقول: " سبحان ربي العظيم " ثلاثاً؛ لحديث ابن ماجه: { إذا ركع أحدكم فليقل: سبحان ربي العظيم ثلاثاً، وذلك أدناه، وإذا سجد فليقل: سبحان ربي الأعلى ثلاثاً، وذلك أدناه}. وفي صحيح مسلم:" أنه صلى الله عليه وسلم: كان يقول في ركوعه: سبحان ربي العظيم، وفي سجوده: سبحان ربي الأعلى". وفي سنن أبي داود: { لما نزلت: { فسبح باسم ربك العظيم} قال:اجعلوها في ركوعكم، فلما نزلت: {سبح اسم ربك الأعلى} قال: اجعلوها في سجودكم}. وظاهر هذا الأمر الوجوب، روي عن أبي مطيع البلخي: أن التسبيحات ركن لو تركه لاتجوز صلاته كما في الذخيرة، والذي في البدائع عنه : أن من نقصمن الثلاث في تسبيحات الركوع والسجود لاتجوز صلاته، قال: وهذا فاسد ؛ لأن الأمر تعلق بفعل الركوع والسجود مطلقاً عن شرط التسبيح فلايجوز نسخ الكتاب بخبر الواحد، فقلنا بالجواز مع كون التسبيح سنة عملاً بالدليلين بقدر الإمكان 
ولا بأس للمتطوع المنفرد أن یتعوذ من النار، ویسأل الرحمة عند آیة الرحمة وإن کان في الفرض یکرہ، وأما الإمام والمقتدي فلا یفعل ذلک في الفرض ولا في النفل (ہندیة: ۱/۱۶۷، ط: اتحاد) ۔
যার সারমর্ম হলো রুকু সেজদায় তাসবিহ গুলোই বেশি পড়তে হবে।  
,
(★তবে কিছু উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।)      

(০৩)
সেজদায়ে সাহু যদি ভুলে যায়,তাহলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব। 
     
ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেলে পুনরায়  পড়তে হয় না এমন একটি কওল রয়েছে। তবে রাজেহ তথা প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য হল, পুনরায় পড়তে হবে। ওয়াক্ত থাকুক বা না থাকুক। সতর্কতা এর মাঝেই।

وقد علمت ايضا ترجيح القول بالوجوب فيكون المرجح وجوب الإعادة فى الوقت وبعده (رد المحتار-3/532
ওয়াক্ত মাঝেই হোক বা পরেই হোক,রাজেহ কওল হলো উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।   

(০৪)
এসো ফিকহ শিখি বইয়ের ৯০ পৃষ্ঠায় যে লেখা আচগে যে "ফরয বা ওয়াজিব তরক হলে নামাযের ভিতরে থাকা অবস্থায় যথাসম্ভব তা কাযা আদায় করতে হবে। "
ফরজ যে আবার আদায় করতে হবে,বিষয়টি তো স্পষ্ট। 
ওয়াজিব যদি তরক হয়ে যায়,তাহলে সেই ওয়াজিব যদি কাযা করার মহল থাকে,তাহলে তার কাযা আদায় করতে হবে।
যেমন প্রথম ২ রাকাতে যদি অন্য সুরা মিলানো ভুলে যায়,তাহলে পড়ের রাকাত গুলোত্র যেহেতু সেগুলো আদায় করার সুযোগ আছে,তাই সেটার কাযা আদায় করতে হবে।
তবে প্রথম বৈঠক ছুটে গেলে সেটা কাযা করার যেহেতু কোনো মহল নেই,তাই তার আর কাযা আদায় করতে হবেনা।
 
তবে উভয় ছুরতেই  সেজদায়ে সাহু অবশ্যই  আদায় করতে হবে।

(০৫) দখলদার জমিতে প্লট বানিয়ে তাতে মসজিদ বানালে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মসজিদই হয়না।
তাই সেটা ভেঙ্গে ফেলতে হবে।
এতে কোনো গুনাহ হবেনা।  
সেই মসজিদ আবাদ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
সেখানে নামাজ পড়লে মাকরুহ তথা গুনাহ হবে।

(০৬)
4রাকাত ফরয নামাযে শেষ রাকাতে তাশাহহুদ না পড়ে পঞ্চম রাকাতের জন্য দাড়াইলে তার ফরজ বাতিল হয়ে যায়।
৬ রাকাত পড়ার পর এটা পুরোটাই নফল হয়ে যায়।
কারন শেষ বৈঠক হলো ফরজ,সেটা যেহেতু আদায় হয়নি, তাই ফরজ বাতিল।  

عن القعود اللاول من الفرض ولو عملیا اما نفل فیعود مالم یقید بالسجدۃ ثم تذکر عادالیہ …مالم فیستقم قائما فی ظاہر الروایۃ وھو الا صح والا ای وان استقاما قائمالا یعود لا شتغا لہ بفرض القیام وسجد للسہو… ولو سھأ عن القعود الا خیز قیدھا سجدۃ عامدا او نا سیا ٔ أوسا ھیا اوخطأ تحول فرضہ نفلا یرفعہ الجبھۃ عند محمد وبہ یفتی درمختار علی ہامش شامی ج۱ ص ۶۹۷۔۶۹۹ باب سجود السہو
যার শেষে বলা হয়েছে যে যদি শেষ বৈঠক ছেড়ে দেয়,পরের রাকাতে সেজদাহ করে ফেলে,তাহলে তার ফরজ নফলের হুকুমে পরিবর্তিত হয়ে  যাবে।
,
হ্যাঁ যদি তাশাহুদ পরিমান বসার পর উঠে যায়,তাহলে তার চার রাকাত ফরজ আদায় হবে,আর বাকি ২ রাকাত নফল হবে।  



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...