আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আমারা  সাধারণত অসুস্থ হলে যন্ত্রনায় "ও মা রে" কিংবা "উহ মা রে" বলে থাকি।
প্রশ্ন (১) কোন বেক্তি যদি অসুস্থর কারনে তার স্ত্রীর সাথে মোবাইলে  কথা বলার সময় যদি বলে "আমার মাজা খুব ব্যাথা করছে ওরে মা রে" (স্ত্রীকে মা সম্বন্ধ করে বলে নাই)। ব্যাথার তীব্রতার অনুভূতি বোঝাতে সাধারণত মানুষ এই শব্দটি বলে থাকে তাই। এইভাবে যদি কেও বলে তাহলে কি ঐ বেক্তির স্ত্রীর সাথে কি "যিহার" করা হয়ে যাবে?হুজুর  দয়া করে জানাবেন।
প্রশ্ন (২) নামাজে  সুরা ফাতিহা এবং যেকোন সুরা পড়ার পর ঠিক রুকুতে যাওয়ার সময় যদি মনের ভুলে (মুখ ফসকে) বিসমিল্লাহ  বলে ফেলে এবং তারপর রুকুতে গিয়ে তাসবীহ পাঠ করল এতে কি নামাজ নষট হয়ে যাবে? এতে করনীয় কী?

প্রশ্ন (৩) কোন  বাবা যদি তার চাকুরীর রিটায়ার্ড এর টাকা ব্যাংকে রেখে যে সুদের টাকা হয় সেই  টাকা সাথে তার রিটায়ার্ড এর টাকা দিয়ে  বাড়ী বানাতে চায় কিন্তু  তার এক সন্তান সুদের কারণে  এই টাকা দিয়ে বাড়ী বানাতে নিষেধ  করে অনেক করে  বোঝায় কিন্তু  বোঝে না। এখন এই বাড়ীতে ঐ সন্তান কি থাকতে পরবে? ঐ সন্তান ব্যাবসা করে।  বাবা যখন মারা যাবে তখন ঐ সন্তানের জন্য  কি জায়েজ  হবে?এখানে জানিয়ে রাখি ঐ বাবার দুই ছেলে এক মেয়ে। জাজাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (677,240 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم  


(০১)
শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

 “যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
শুধুমাত্র মা বললে যিহার হবে না।
তবে এমনটা বলা মাকরুহ হবে।
ويكره قوله أنت أمي ويا ابنتي ويا أختي ونحوه
অনুবাদঃ-
স্ত্রীকে "তুমি আমার মা" বলা অথবা স্ত্রীকে "হে আমার মেয়ে বা হে আমার বোন" বা এই জাতীয় অন্য বাক্য বলে ডাকা মাকরুহ।
(রদ্দুল মুহতার-৩/৪৭০)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যিহার হবেনা।  

(০২)
এতে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবেনা।

(০৩)
সেই বাড়ীতে ঐ সন্তানের জন্য থাকা জায়েজ হবেনা। 
বাবা মারা যাওয়ার পরেও ঐ সন্তান সেই বাসায় থাকতে পারবেনা।

যেই পরিমান সূদের টাকা দিয়ে সেই বাড়ি নির্মান করা হয়েছে,সমপরিমাণ হালাল টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

তার পর সেই বাড়িতে বসবাস করা জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...