আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
১. আয়েশা রা.-থেকে একটা রেওয়ায়াত আছে। তিনি যায়নাব রা.-এর প্রশংসা করে বলেছেন, ;আমি দীনের ক্ষেত্রে যায়নাবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোনো নারী দেখিনি। তিনি ছিলেন খোদাভীরু, সত্যবাদী ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। প্রচুর সদকা করতেন এবং সম্পদ উপার্জনের জন্য খুব পরিশ্রম করতেন যা তিনি সদকা করতেন এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতেন

এটা সত্যি?  সত্যি হলে কিভাবে সম্পদ উপার্জনের চেষ্টা করতেন?

২. স্বামীর জন্য কি স্ত্রীর হাত খরচ দেয়া বাধ্যতামূলক বা ফরজ কিছু.

?

৩. একজন স্ত্রীর কি হালাল ব্যবসা বা চাকরি( মাদ্রাসা/! যেকোন হালাল) করতে গেলে স্বামীর অনুমতি লাগবে?

৪. কোন নারীকে স্বামী হাত খরচ না দিলে সে কিভাবে দান সদকা করবে?
৫. স্বামী যদি স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ না দেয় ( বাবা মায়েরা বিয়ের পর খরচ বহন করতে চান না / নিজেদের পিছনে খরচ করতে গিয়ে হয়না) তবে স্ত্রী কিভাবে এই অর্থ যোগাড় করবে?
৬. অনেকে আছেন দান সদাকার কথা এভাবে বলেন যে নবিজি (সা) ইন্তেকালের আগে সব দান করে গেছেন। তাই সেও সব এভাবে দান করে যাবেন ওদিকে সন্তানকে পথে পথে ঘুরতে হবে। স্ত্রী(মৃত) হতে প্রাপ্ত জমি সে মসজিদের জন্য দান করবে বলেন যেখানে এটা করতে গেলে সবার সাথে গেঞ্জাম লেগে যাবে, বাচ্চা গুলো আর নানা বাড়ি যেতে পারবেনা।সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে। উনাকে বুঝাতে গেলে উনি বুঝতে চান না।যে বুঝায় তার হয়ত জ্ঞানের কমতি,  এখানে ইসলাম কি বলে?  দুজনের কেউ ই আল্লাহর অবাধ্য হতে চায়না,এখন যেটাই শরীয়তের দৃষ্টিতে ঠিক সেটাই মেনে নেবে। শুধু পিতা একটু শক্ত লোক।

৭. ইসলামে স্বামী চাইলেই তালাক দিয়ে দিতে পারেন।ওজর ছাড়াই। কিন্ত এটা কি আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় যে মন চাইলো আর তালাক দিয়ে দিলাম? এতে কি স্ত্রীর প্রতি জুলুম হবেনা কিংবা এর জন্য আল্লাহর সম্মুখে জবাব দিতে হবেনা?
কোন মুফতি সাহেবের কাছে এই প্রশ্নটি যদি করে তবে কি তার উত্তর শুধু এতটুক্য হওয়া উচিত যে হ্যা চাইলেই পারবে, ইচ্ছে করলেই তালাক দিতে পারবে? নাকি এমন হওয়া উচিত যে পারবে তবে সাথে অনুচিত ইত্যাদি বলা?
বিনা ওজরে স্ত্রী খোলা চাইলে হুশিয়ারী আছে,কিন্তু বিনা ওজরে তালাক দেয়া র জন্য কি কোন সাবধান করা হয়েছে?
৮. একজন নারী কুরআন মুখস্ত করতে চায়।এখন সে ভয় পায় যদি মুখস্ত করে ভুলে যায়! এজন্য সে আবার পিছিয়ে যাচ্ছে। এটা কি সঠিক?

৯. একজন স্ত্রীর স্বামীর উপর কি হক রয়েছে? স্ত্রীর অনিচ্ছায় একা ফেলে স্বামীর জন্য বিদেশে যাওয়া কি বৈধ?  সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকা এবং রাতে বাসায় ফিরে স্ত্রীকে সময় না দিয়ে বাবা মায়ের সাথে বাকি সময় টুকু দেন, এমন হয়ে যায় বাসায় মেহমান আসে আর স্বামীর সাথে দু তিন দিন কথা হয়না। এগুলো কি ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (715,680 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
এই হাদীস সত্য।হযরত যায়নাব পর্দার আড়ালে থেকে ট্যানারি কাজ করতেন।তথা চামড়ার কে লবন দ্বারা শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করতেন।

(২)
স্ত্রীর সকল প্রকার প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্ব স্বামীর।তবে স্ত্রীর বিলাসিতার দায়িত্ব স্বামীর উপর নয়। হাত খরচ বলতে যদি জরুরত বা হাজত অতিরিক্ত কিছু হয়, তাহলে সেটার দায়িত্ব স্বামীর উপর বর্তাবে না।

(৩)
জ্বী, স্বামীর অনুমতি লাগবে।

(৪)
সে নিজে ঘরে বসে সেলাই ইত্যাদির কাজ করে তারপর উপার্জিত অর্থ থেকে দান সদকাহ করবে।

(৫)
স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদ থেকেই হবে। স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদ না থাকলে তখন স্বামীর উপর স্ত্রীর চিকিৎসার দায়ভাড় পড়বে।

(৬)
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেন,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ شَكْوَى، أَشْفَيْتُ مِنْهَا عَلَى الْمَوْتِ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَلَغَ بِي مَا تَرَى مِنَ الْوَجَعِ، وَأَنَا ذُو مَالٍ، وَلاَ يَرِثُنِي إِلاَّ ابْنَةٌ لِي وَاحِدَةٌ، أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَىْ مَالِي قَالَ " لاَ ". قُلْتُ فَبِشَطْرِهِ قَالَ " الثُّلُثُ كَثِيرٌ، إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ، خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ، وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللَّهِ، إِلاَّ أُجِرْتَ، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ ". قُلْتُ أَأُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي قَالَ " إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلاً تَبْتَغِي بِهِ وَجْهَ اللَّهِ، إِلاَّ ازْدَدْتَ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ، وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُونَ، اللَّهُمَّ أَمْضِ لأَصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ، وَلاَ تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ، لَكِنِ الْبَائِسُ سَعْدُ ابْنُ خَوْلَةَ ". قَالَ سَعْدٌ رَثَى لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ.
বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমি রোগে আক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আমাকে দেখতে এলেন। তখন আমি বললাম আমি যে রোগ-ষন্ত্রনায় আক্রান্ত তাতো আপনি দেখছেন। আমি একজন ধনবান লোক। আমার একটি মেয়ে ছাড়া আর কেউ ওয়ারিস নেই। তাই আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ মাল সাদাকা করে দিতে পারি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম তবে অর্ধেক মাল? তিনি বললেনঃ না। এক তৃতীয়াংশ অনেক। তোমার ওয়ারিসদের লোকের কাছে ভিক্ষার হাত প্রসারিত করার মত অভাবী রেখে যাওয়ার চাইতে তাদের ধনবান রেখে যাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম। আর তুমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিটি লাভের জন্য যা কিছুই ব্যয় করবে নিশ্চয়ই তার প্রতিদান দেওয়া হবে। এমন কি (সে উদ্দেশ্যে) তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে লুকমাটি তুলে দিয়ে থাকো তোমাকে এর প্রতিদান দেওয়া হবে।
আমি বললাম তা হলে আমার সঙ্গীগণের পরেও কি আমি বেঁচে থাকবো? তিনি বললেন নিশ্চয়ই তুমি তাদের পরে বেঁচে থাকলে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যা কিছু নেক আমল করনা কেন, এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা ও সম্মান আরও বেড়ে যাবে। আশা করা যায় যে, তুমি আরও কিছু দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা অনেক কাওম উপকৃত হবে। আর অনেক কাওম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তারপর তিনি দুআ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার (মুহাজির) সাহাবীগণের হিজরতকে বহাল রাখুন। আর তাদের পেছনে ফিরে যেতে দিবেন না। সা’দ ইবনু খাওলাহ (রাঃ) এর দূর্ভাগ্য (কারণ তিনি বিদায় হাজ্জের সময় মক্কায় মারা যান) সা’দ (রাঃ) বলেন মক্কাতে ওফাতের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।(সহীহ বুখারী-৫৯৩৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক তৃতীয়াংশ সদকাহ করা উত্তম। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি প্রতিকুলে হলে সদকাহ না করে সন্তাদেরকে স্বাবলম্বী করে যাওয়াই উত্তম।

(৭)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/468

(৮)
ভুলে যাওয়ার ভয়ে কুরআন মুখস্থকে পরিত্যাগ করা উচিৎ। বরং ইচ্ছাকৃত কুরআন না পড়ার কারণে যদি কেউ কুরআনকে ভুলে যায়, তবেই কুরআন তার বিরুদ্ধে দাড়াবে।

(৯)
স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিত চার মাস ১০ দিনের বেশী বিদেশে সফর করা যাবে না। এবং স্ত্রীকে অবহেলা করা যাবে না। সবসময় কথা যে বলতেই হবে,এমন নয়,বরং অবহেলা করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (715,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...