আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আমি কুরআন তেলাওয়াত করতে ছিলাম আমার পাশে আমার ছোট ছেলে শুয়ে ছিল  বয়স ৪ বৎসর সে শুয়ে থেকে নরাচরা করছিল। হঠাৎ করে তার পা আমার বেখেয়ালের করনে কুরআনের ওপর এসে পড়ে। এর জন্য কি রড় ধরনের গুনাহ হবে। এখন আমার করনিয় কি

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

শরীয়তে এমন শিশুর কোনো বিধান নেই,তার কোনো গুনাহ হবেনা। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এমনটি করা হলে যার কোলে সে বসতে যাচ্ছে, তার মারাত্মক গুনাহ হবে।  কুরআন আল্লাহ সম্মানিত বাণী সমষ্টি ও দুনিয়ার সবচেয়ে সম্মানিত গ্রন্থ। সুতরাং প্রতিটি মুসলিমের জন্য তার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রাখা অপরিহার্য। কোনোভাবে যেন তার মানহানি না হয় সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরি।

কিন্তু আমাদের অসতর্কতাবশত যদি তাতে কখনো পায়ের স্পর্শ লেগে যায় তাহলে করণীয় হল, এজন্য লজ্জিত অন্তরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কারণ সম্মানিত জিনিসে পায়ের স্পর্শ লাগাকে তার প্রতি অবমাননা ও বেয়াবদি হিসেবে গণ্য করা হয়।

কিন্তু অনিচ্ছা বশত: কোন ভুল বা অন্যায় আচরণ করে ফেললে দয়াময় আল্লাহ তার গুনাহ লিখেন না। সুতরাং এখানেও তিনি গুনাহ লিখবেন না বলে আশা করা যায়। তারপরও এই অনিচ্ছাবশত: ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে বিনীত ভাবে ক্ষমা চেয়ে নেয়া নি:সন্দেহে উত্তম।

মহান আল্লাহ বলেন,

 

وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُم

“ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫]

তিনি আরও বলেন,

رَبَّنا لا تُؤاخِذنا إِن نَسينا أَو أَخطَأناّ

“হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা হঠাৎ অনিচ্ছাবশত: কোন ভুল করে ফেলি তবে আমাদেরকে ধরিও না।” [সূরা বাকারা: ২৮৬]

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

«إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ ، وَالنِّسْيَانَ ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ»

“আমার উম্মতের হঠাৎ ঘটে যাওয়া ভুল, স্মরণ না থাকার কারণে ঘটে যাওয়া অন্যায় এবং জোরজবরদস্তি করে কৃত অপরাধকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।” [ইবনে মাজাহ: ২০৪৩; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭১৭৫, বায়হাকি-হাসান]

নিজের ভুল বা বেখেয়ালে শিশু বাচ্চার পা  পবিত্র কুরআন মাজিদ এর উপরে পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। কেননা, মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই ভুল করে থাকে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য প্রার্থনা করলে ক্ষমা করে দেন।

কুরআন আল্লাহ তাআলা কিতাব। আর প্রত্যেক মুসলমানই অন্তর থেকেই পবিত্র কুরআনুল কারিমকে সর্বোচ্চ সম্মান করে থাকে। কোনো ব্যক্তিই চায় না যে পবিত্র কুরআনুল কারিমের বিন্দুমাত্র অসম্মান হোক। তারপরও অনেক সময় ভূলঃবশত পা না লাগে,বা হাত থেকে হোক আর কোনো স্থান থেকে হোক কুরআন পড়ে যায়।

 কুরআনে পা লাগা বা হাত থেকে পড়ে যাওয়া সম্পর্কে এমন অনেক কথাই আমরা শুনে থাকি, তাতে করণীয় কী? এর সমাধান হলো- যদি কখনো ভুলে কুরআনে পা লাগে বা হাত থেকে কিংবা কোনো স্থান থেকে কুরআন মাজিদ নিচের দিকে পড়ে যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে তা ওঠিয়ে নেয়া এবং পবিত্র কুরআনে চুম্বন করা। এর জন্য আমাদের সমাজে অনেকে ছদকাহ করে থাকে,তবে এই বিধান শরীয়তে নেই। তবে কেহ এমনটি করলে কোনো সমস্যা নেই।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...