আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in সালাত(Prayer) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,
(১)মসজিদে নামাজের সময় ইমাম সাহেব( ফজর,মাগরিব,এশা)এই নামাজ গুলোর সময় প্রথম দুই রাকাতে সুন্দরভাবে তিলাওয়াত করেন।কিন্ত (যোহর আসরের) নামাজে মনে হয় প্রথম দুই রাকায়াতে তিনি খুবই তারাতারি সুরা কিরায়াত পড়ে রুকু তে যান।আবার প্রত্যেক নামাজের মধ্যবর্তি এবং শেষ বৈঠকে আমি কখনোই তাশাহহুদ,দরুদ,এবং দোয়ায়ে মা সূরা পুরাটা পড়তে পারিনা।কখনো অর্ধেক,বা কখনো তার সামান্য বেশি পড়া অবস্থায় সালাম ফিরিয়ে নেন।অথচ আমি শুদ্ধভাবে পড়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও তার আগে পড়া শেষ করতে পারিনা।তাই আমার মনে হয় যে এভাবে নামাজ পড়ার কোন মানে নেই।নামাজ যেহেতু পড়ছি অবশ্যই সুন্দরভাবে পড়তে হবে।ইমাম কে বুঝানোটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়,কারন উনি অনেক পুরাতন ইমাম।তাই আমি জামাতে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ আদায় করি, এতে কী আমার গুনাহ হবে?আমার কী করা উচিত?

(২)রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,শেষ জমানায় ইসলাম পালন করা "গরম কয়লা হাতের মুঠোয় নেয়ার মতো হবে" আমার ধারনা এই কারনে হয়তো তিনি (স.)এই কথাটি বলেছেন।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55375/?show=55375#q55375 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

নবী সা. সারা জীবন জামাআতের পাবন্দী করেছেন। তদ্রূপ সাহাবা কিরামের যামানা থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত উম্মত জামাআতের পাবন্দী করে এসেছে। সাহাবা কিরামের যুগে জামাআতের এতো গুরুত্ব ছিলো যে, মাযূর (একান্ত অপারগ) ও প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতেন না। জামাআত ত্যাগে অভ্যস্ত ব্যক্তি ফাসিক এবং ইসলামী বিচার ব্যবস্থায় তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। হাদীস শরীফে নামাযের বহু ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন,

صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً۔

জামাআতের নামায একা নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ উত্তম। (সহীহ্ মুসলিম, ৬৫০)

 

জামাআতে নামায পড়ার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, আমাদের যুগে গুরুতর অসুস্থ অথবা একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতো না। আর যদি অসুস্থ ব্যক্তি  দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতে সক্ষম হলে সেও জামাআতে এসে শরীক হতো। এবং বলেন, রাসূল সা. আমাদেরকে হেদায়াতের সুন্নাতগুলি শিক্ষা দিয়েছেন আর আযান হয় এমন মসজিদে নামায পড়া (অর্থাৎ, জামাআতে নামায পড়া) হেদায়াতের সুন্নাতগুলির অন্তর্ভুক্ত।  (মিরক্বাতুল মাফাতীহ্ শর্হে মিশকাতুল মাসাবীহ্, ১০৭২)

 

জামাআত কাদের উপর ওয়াজিব?

যদি শরী’আত সম্মত কোন ওযর না থাকে তাহলে ১.প্রাপ্ত বয়স্ক ও ২.স্বাধীন ৩.ও ৪. মুসলমান পুরুষের জন্য জামাআতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব।

 

যে কোন নামায জামাআত ছাড়াও আদায় হয়ে যায়। তবে জুমুআ ও দুই ঈদের জন্য জামাআত শর্ত। জামাআত ছাড়া জুমুআ ও ঈদের নামায সহীহ্ নয়। নাবালক, অসুস্থমস্তিস্ক, গোলাম ও ওযরগ্রস্ত  ব্যক্তির উপর জামাআত ওয়াজিব নয়। তবে তারা জামাআতে নামায পড়লে সওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য স্ত্রীলোকদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম। (এই ফিতনার যুগে)

 

জামাআত ওয়াজিব না হওয়ার ওযর

১.প্রচণ্ড বৃষ্টি বা ২.ঠাণ্ডা বা ৩.অন্ধকার হলে,

৪.পথে ভীষণ কাদা হলে,

৫.রাতে প্রচণ্ড ঝড় হলে,

৬.হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ বা ৭.বৃদ্ধ হলে

৮.অন্ধের সাহায্যকারী না থাকলে

৯.কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট হবে,(তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১০.সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে এবং সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১১.ইস্তিঞ্জার হাজত হলে,

১২.ক্ষুধার সময় খাবার উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!

 

১.প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ তথা অনেকটা ওয়াজিবের কাছাকাছি। বিনাকারণে জামাত ছেড়ে দিলে ব্যক্তি গুনাহগার হবে।

নবীজি (সা.) কখনও জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনও দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে জামাত ছেড়ে দেওয়ার দরকার নেই। বরং আপনি জামাতেই নামাজ পড়বেন। আর আপনার উক্ত সমস্যার কথা মসজিদ কমিটির কোনো ব্যক্তিকে বা অন্য কাউকে বলে পরামর্শও নিতে পারেন এবং কোনো ভাবে ইমামের কাছে সংবাদটা পৌছাতেও পারেন।

. উক্ত বাণী দ্বারা উদ্দেশ্য হলো শেষ জামানায় ফেতনা ফাসাদ বেড়ে যাবে। এতো বেড়ে যাবে যে, তখন ইসলাম পালন বড় কঠিন হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 497 views
0 votes
1 answer 74 views
...