আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
reshown by
স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়ার পর হালালাহ ব্যতীত সেই স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করে এমন পুরুষ লোক যদি তার নিজ বালেগাহ কন্যার অভিভাবক হিসেবে বিয়েতে উপস্থিত থেকে মেয়ের পক্ষ হতে প্রস্তাব বা কবুল বলে বিবাহ সম্পাদন করেছে।মেয়ে ইজাব কবুল বলেনি তবে সে আগে থেকে মনে মনে রাজি ছিলো বিয়েতে আগ্রহ ছিলো দেখতে আসলে পাত্রকে আলহামদুলিল্লাহ বলছে ডিরেক্ট রাজি আছি বলেনি।আর বাবাও তার কাছ থেকে ঐ ভাবে জিজ্ঞেস করে সম্মতি নেয়নি যে মেয়ে বিয়েতে রাজি কিনা বা উক্ত বিয়ের আলোচনার সময় বাবার উপস্থিতিতে মেয়ে চুপ থাকা বা হেসেছিলো কিনা মেয়ের  মনে নেই (দের বছরের বেশি হয়ে গেছে বিয়ে হয়েছে)।ঐ বাবাই ওলি হিসেবে মেয়ের পক্ষ থেকে কবুল বলে বিয়ে সম্পাদন করে।বিবরন মতে বিয়ে হয়েছে কি?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।

 

ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি সত্যিই তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে থাকেন  তাহলে তার স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই এখন তার স্ত্রী তার জন্য হালাল নন। এখন তাদের সংসার করা জায়েজ নয়। এমনকি দেখা সাক্ষাত করাও জায়েজ নয়। করলে গোনাহ হবে এবং  সহবাস করলে যিনার গোনাহ হবে।

তবে যদি তার স্ত্রীর অন্য কোথাও বিয়ে হয় এবং তার সাথে দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর তাকে তালাক দিলে অথবা বিবাহের সময় স্ত্রী কর্তৃক তালাকের অধিকার নিয়ে রেখে সহবাসের পর নিজের উপর মহিলা তালাক গ্রহণ করলে ইদ্দত পূরণের পর তথা তিন ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়ার পর নতুন করে মহর ধার্য করে প্রস্তাব ও গ্রহণের মাধ্যমে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে আবার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।

২. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিয়ে সহীহ হয়েছিলো। কারণ, এখানে বিয়েতে মেয়ে রাজী ছিলো এবং তার মনোসমর্থনও ছিলো। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিয়ে সহীহ হয়েছিলো।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...