আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তাদ।

আশা করি আল্লাহের রহমতে আপ্ন্রারা ভালো আছেন। উস্তাদ নিচের বিষয়গুলোর উপর একটু আলোকপাত করবেন অনুগ্রহ করে ইন শা আল্লাহ।

১। চলমান বিশ্বকাপ আয়োজন, এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন হারাম কাজের দরুন উলামায়ে কিরামের মতামত থেকে দেখা গেছে যে কেউই এটার বৈধতার কথা বলেন না। এ খেলার মাধ্যমে জুয়া, অশ্লীলতার প্রচার, কাফির খেলোয়াড়দের প্রতি অস্বাভাবিক ভালোবাসা এবং এর জন্য খুন খারাবি পর্যন্ত করা ইত্যাদি নিয়ে সম্মানিত আলিমগণের অনেক লেখালেখি, বয়ানও প্রচার হচ্ছে। তো এর মধ্যে ইউটিউব, ফেসবুকের একজন নামকরা কন্টেন্ট মেকার এই বিবৃতিটি দিয়েছেঃ https://www.facebook.com/100038616262932/videos/476465191143549

ভিডিওয়ের শুরুতে সে কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মকভাবে যারা তার ওয়ার্ল্ড কাপের ব্যাপারে হারাম হওয়া নিয়ে সতর্ক করছে তাদের মোকাবেলা করেছে আর তার বিশ্বাস যে কাতার মুসলিম বিশ্বের জন্য ভালো করেছে বিশ্বকাপ আয়োজন করে যা বোঝার "দূরদর্শিতা" অনেকেরই নেই।
অনুগ্রহ করে উস্তাদ তার এই কথাগুলো শরিয়াহের আলোকে কিভাবে বিচার হবে তা একটু বলবেন। ওয়ার্ল্ড কাপ ভিত্তিক উন্মাদনার বিরুদ্ধে দ্বীনের দায়ীরা যখন সাধারণ মানুষদের বুঝাতে যাচ্ছে তখন এরকম লোকদের কথা বার্তা সামনে নিয়ে এসে দায়ীদের বিরুদ্ধেই কথা তোলার সম্ভাবনাও বিরাজ করছে কারণ অনেকের কাছেই খুবই পছন্দনীয় এই লোক আর তার থেকে যখন নিজেদের নফসের সাথে মিল হয় এমন কথা পাবে তাদের প্রতি তখন দাওয়াতি কাজ অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আর এই খেলা, এর সাথে আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি হারামের কথা শোনার ব্যাপারে তার যেরকম উদ্ধতপূর্ণ আচরণ প্রকাশ পেল তার মাধ্যমে কি ঈমান ভেঙে যাওয়ার মত আলামত প্রকাশ পাচ্ছে কিনা? ভালো হবে যদি উস্তাদ উপরের লিঙ্কটা থেকে একটু তার মুখ থেকেই কথাগুলো শুনে নেন।
২। বিভিন্ন খবর মাধ্যম থেকে পাওয়া এই খেলা ভিত্তিক মানুষের লেখা লেখি, কথা বার্তাঃ https://postimg.cc/gallery/FLrchyf

সৌদি বনাম আর্জেন্টিনা খেলায় সৌদি জেতার পরে এভাবে আয়তুল কুরসি, বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ইত্যাদি নিয়ে রং-তামাশা করার মাধ্যমে নাওয়াকিদুল ঈমানের পর্যায়ে যাচ্ছে কিনা?
by (11 points)
উস্তাদ প্রশ্নে কাউকে সরাসরি মুরতাদ বলা ইত্যাদি এটি প্রসঙ্গ নয়, শুধু এই ধরণের কথা বার্তা, চিন্তা কি ঈমানের বিধ্বংসী কিনা সেটা জানতে চাওয়া। কারণ কুফরি করার মাধ্যমেই তো সাথে সাথে ইসলাম থেকে বের করে দেওয়া যায় না, মাওয়ানে তাকফির বা তাকফিরের প্রতিবন্ধকতা যদি পাওয়া যায় যদি যেমন অজ্ঞতা, অসহায়ত্ব ইত্যাদি।  
by (671,200 points)
জী,এটি ঈমান বিধ্বংসী  কথার অন্তর্ভুক্ত। 

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/61450/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান মতে জুয়া স্পষ্ট আকারে হারাম।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا  [٢:٢١٩]

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]

হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]

★শরীয়তের বিধান হলো হারাম কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,হারাম কাজে কাউকে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত খেলায় জুয়া,সতর খোলা,বেপর্দা নারী পুরুষ এর অবাধ বিচরন সহ অসংখ্য হারাম কাজ বিদ্যমান। 
এহেন হারাম কাজ অনুষ্ঠিত করার দরুন প্রশ্নে উল্লেখিত দেশ হারাম কাজ নিজেও করছে,হারাম কাজে সহযোগিতাও করছে।

উক্ত হারাম কাজে এভাবে ইসলামকে প্রমোট করা,ইসলামের প্রচার প্রসারের জন্য প্রশ্নে উল্লেখিত  যাবতীয় কাজ, এগুলোর কোনোটিই দাওয়াতের শরীয়ত সমর্থিত পন্থা নয়।
এটি দাওয়াত দেয়ার নববী পদ্ধতি নয়।
এই পদ্ধতি বৈধ পদ্ধতি নয়।
,
হারাম কাজের মাঝে ইসলাম প্রচার এটি শরীয়াহ সমর্থিত নিয়ম নয়।
এভাবে ইসলামকে সামনের এগোনোর চেষ্টার দ্বারা ইসলামের ফায়দা হবেনা।
,
অনেকে তাদের এরকম ইসলামী কাজ গুলি করার কারনে খেলা দেখা সহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেক হারাম কিছু দেখার গুনাহে লিপ্ত হবে।

আল্লাহ না করুন, অনেক দ্বীনদারদের অবস্থাও এমন হতে পারে।
ফিতনার এই যুগে এটিকে শয়তানের একটি ফাঁদও বলা যেতে পারে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
জী,তার কথা গুলি শুনেছি।
বিজ্ঞ ইসলামী স্কলার,মুফতী সাহেবদের ফতোয়াকে পাশ কাটিয়ে এভাবে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ প্রকাশ কোনোভাবেই শরীয়ত সমর্থিত হতে পারেনা।

সবকিছুকে বাদ দিলেও এখানে যে সতর দেখা যাচ্ছে,এই ব্যাপারে তিনি কি বলবেন?

মোটকথা এসব খেলা দেখা কোনোভাবেই জায়েজ নয়।

তবে এতে তার ঈমান চলে যায়নি।

(০২)
এখানে বিসমিল্লাহ, আল্লাহর নাম,কোনো আয়াত পড়ার ক্ষেত্রে যেহেতু বিসমিল্লাহ, আল্লাহর নাম,কোনো আয়াত এর প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য, ঠাট্রা,অবমাননা করা উদ্দেশ্য নয়। 

সুতরাং এক্ষেত্রে ঈমান চলে যাবেনা।
তবে এধরনের কাজ নিঃসন্দেহে নাজায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
 শায়খ আমাদের স্কুলে  বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে প্রতিবেদন লিখতে বলা হয়েছে।প্রতিবেদনের জন্য ৫০ নম্বর। এখন প্রতিবেদন টা লিখা কি জায়েজ  হবে? 
by (671,200 points)
হ্যাঁ, জায়েজ আছে।
তবে সেটি অনার্থক কাজ।
স্কুলের নিয়ম মানার স্বার্থে সেটি লিখতে পারেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...