আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
y

আসসালামু আলাইকুম
১)
উপমহাদেশে তিরমিজি শরিফের যে নুসখা প্রচলিত আছে সেগুলোর শুরুতে এভাবে লেখা আছে
قال الشيخ المكرم..................... مولانا محمد اسحاق حصل لي اجازة...........
আমার প্রশ্ন হলো এটা কি মুল কিতাবের অংশ এবং এটা কিতাবের শুরুতে আনার কারন কি?
আর শুরুতে মাওলানা ইসহাক রাহঃ এর নাম এনে মুলত কি বুঝাতে চাইছেন আর কিতাবের শুরতে এটা কে লিখে দিয়েছে?
বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি
মুল কিতাবতো বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু হইছে আমার জানার বিষয় হলো আমাদের সামনে যে কিতাবটি আছে এটার লেখক মানে কাতেব কে?

২)

ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে আপনারা বেশির ভাগ উত্তর এভাবে দেন যে,আমাদের জানা মতে ইসলামী ব্যাংক সহ বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকই শরীয়তের রুলস পূর্ণ ভাবে  মানেনা।
আমি বিস্তারিত শরিয়তের রুলগুলো জানতে চাচ্ছি যেগুলো তারা মানে না।
যদি কেউ টাকা জমানোর উদ্দেশ্যে ইসলামী ব্যাংক অথবা অন্য কোনো ব্যাংক গুলোতে ৫-১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস করে নেয়,তাহলে সে কি মেয়াদ শেষে শুধু মুল টাকা নিতে পারবে নাকি এখানেও কোনো সমস্যা আছে??

1 Answer

0 votes
by (686,800 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
উপমহাদেশে তিরমিজি শরীফের যে নুসখা আমরা পড়ি,তার শুরুতে বিসমিল্লাহ এর পূর্বেই লেখা আছেঃ-

 قال الشيخ المكرم المفخم المشتهر بين الآفاق المرحوم المغفور مولانا محمد إسحاق حصل لي الاجازة والقراءة والسماعة من شيخ الأجل
.................. 

পূর্ণ অনুবাদঃ-
বিখ্যাত বুযুর্গ শায়েখ মরহুম মাগফুর মাওলানা ইসহাক রহঃ বলেছেন, আমি ইজাযত,কেরাত ও শ্রবন লাভ করেছি মহান শায়েখ বুযুর্গ মহাজ্ঞানি সমকালীনদের মাঝে অন্যতম ব্যাক্তিত্ব অর্থাৎ শায়েখ আব্দুল আজীজ রহঃ থেকে, এবং তিনি অনুমতি কেরাত ও শ্রবন লাভ করেছেন তার পিতা শায়েখ ওয়ালি উল্লাহ ইবনে আব্দুর রহিম দেহলবি রহঃ থেকে, শায়েখ ওয়ালি উল্লাহ রহঃ বলেন, আমাকে এর খবর দিয়েছেন শায়েখ আবু তাহের আল মাদানী রহঃ তার পিতা শায়েখ ইবরাহিম ইবনে আল কুরদী রহঃ থেকে, তিনি শায়েখ আল মাজজাহি রহঃ থেকে, তিনি শিহাব আহমদ আস সুবকি রহঃ থেকে, তিনি শায়েখ আন নাজমুল গাইতি রহঃ থেকে, তিনি শায়খ জায়ন জাকারিয়া রহঃ থেকে, তিনি শায়েখ ইজজ আব্দুর রহিম রহঃ থেকে, তিনি শায়খ ওমর আল মারাগি রহঃ থেকে, তিনি ফখর ইবনুল বুখারী রহঃ থেকে, তিনি ওমর ইবনে তাবারজাদ আল বাগদাদী রহঃ থেকে,,,,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এটা মুল কিতাবের অংশ নয়। 

আমাদের সামনে যার হাতে/নির্দেশে লেখা কিতাবটি আমাদের নিকট পৌছে এসেছে,তিনি বা তার উস্তাদ থেকে ইমাম তিরমিজি রহঃ পর্যন্ত উক্ত গ্রন্থের হাদিসের সনদ এর সিলসিলা বর্ণনা করার জন্য এটি নিয়ে আসা হয়েছে। 

(০২)
কোনো ব্যাংকই শরীয়তের রুলস মানেনা।

রুলস গুলো হলোঃ-
আলমুরাবাহা লিল আমির বিশশিরা অর্থাৎ ব্যাংগুলোতে প্রচলিত মুরাবাহা জায়েয হওয়ার শর্তাবলি নিম্নরূপ :

১. ব্যাংকের মালিকানায় ও দখলে পণ্য আসার পূর্বে তা বিক্রি করতে পারবে না। অর্থাৎ বিনিয়োগগ্রহীতা ব্যাংকের নিকট পণ্য চাওয়ার পর প্রথমে ব্যাংককে তা খরিদ করতে হবে এবং হস্তগত করতে হবে। এরপর সে ক্লায়েন্ট-এর নিকট তা বিক্রি করতে পারবে।

২. কোনো না জায়েয-হারাম পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।

৩. ব্যাংক যে পণ্য গ্রাহকের নিকট বিক্রি করবে তা যদি এমন হয় যে, গ্রাহক নিজেই এর মালিক এবং সে ব্যাংকের নিকট তা নগদে কম মূল্যে বিক্রয় করে পরে আবার বাকিতে  বেশি মূল্যে তা ক্রয় করে নিচ্ছে তবে কারবারটি হারাম হবে এবং সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে। অর্থাৎ যার নিকট বিক্রি করবে তার থেকেই এ মুহূর্তে পণ্যটি খরিদ করেছে এমন হওয়া চলবে না।

৪.বাস্তবভিত্তিক ক্রয়-বিক্রয় হতে হবে। এমন হওয়া চলবে না যে, কোনো দোকানে আগে থেকেই ব্যাংকের এমন চুক্তি রয়েছে যে, আমরা তোমার কাছ থেকে কোনো পণ্য খরিদ করে গ্রাহকের নিকট বিক্রি করলে সে আবার তোমার নিকট কম মূল্যে তা বিক্রি করে দিবে। অর্থাৎ বাস্তবভিত্তিক ক্রয়-বিক্রয় হতে হবে, হীলা-বাহানা হলে চলবে না।

৫. কারবারটি এমন হতে হবে যাতে  বাস্তবেই ক্রেতার (ক্লায়েন্ট) ঐ পণ্যের জন্য অর্থায়ন দরকার। যদি এমন হয় যে, শুধু পণ্যের নাম ব্যবহার করে নগদ টাকা বিনিয়োগ নিচ্ছে পণ্য খরিদের কোনো ইচ্ছা নেই তাহলে কারবারটি হারাম হবে।

৬. ব্যাংকের নিকট বিনিয়োগপ্রার্থী (ক্লায়েন্ট) যদি এমন জিনিস খরিদের নামে টাকা নেয়, যা আগেই সে খরিদ করে ফেলেছে অথবা তা কাজেও লাগিয়ে ফেলেছে এখন সে সব পণ্যের বকেয়া মূল্য পরিশোধের জন্য অথবা টাকার অন্য কোনো প্রয়োজন হওয়ায় ঐ পণ্যের নামে ব্যাংকের সাথে মুরাবাহা করছে তবে তা-ও হবে হারাম ও সুদী কারবার।

উল্লেখ্য যে, ৫ ও ৬ নং-এর ত্রুটিগুলো হয়ে থাকে এজন্য যে, ব্যাংক অনেক ক্ষেত্রেই নিজে পণ্য খরিদ করতে যায় না এবং তা নিজ রিস্কেও নেয় না।

৭. মুরাবাহার একটি অপরিহার্য শর্ত হল, পণ্যটি কিছুক্ষণের জন্য হলেও ব্যাংকের দায়িত্বে ও তার রিস্কে যেতে হবে। যে সময়ের মধ্যে সেটি নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্থ হলে তা ব্যাংকের ক্ষতি বলেই ধর্তব্য হবে। যদি মুরাবাহার পণ্য ক্লায়েন্ট (গ্রাহক) কে বিক্রির পূর্বে এমন কোনো ঝুঁকি (রিস্ক) ব্যাংক বহন না করে তবে কারবার হারাম হবে।

হযরত মাওলানা তকী উছমানী এবং অন্যান্য ফকীহগণের (যারা ব্যাংকের মুরাবাহার অনুমোদন দিয়েছেন) মতে এটিই একমাত্র শর্ত যা মুরাবাহাকে সুদী কারবার থেকে ভিন্ন করে। কারণ সুদী লোনের মধ্যে ব্যাংক ক্লায়েন্টকে টাকা দেওয়ার পর তার কোনো রিস্ক সে বহন করে না। এখন যদি মুরাবাহাতেও এমনটি ঘটে এবং গ্রাহক তথা ক্লায়েন্টকে পণ্য হস্তান্তরের পূর্বে ব্যাংক তার ঝুঁকি বা রিস্ক গ্রহণ না করে তবে কারবারটি হবে সুদী লেনদেনের নামান্তর।

৮. মুরাবাহার আরেকটি শর্ত হল ক্লায়েন্টের নিকট নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করে দেওয়ার পর তা আর বৃদ্ধি করা যাবে না। অর্থাৎ সনাতনী ব্যাংকগুলো যেমন বছরান্তে বা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সুদের হার বাড়িয়ে দেয়  সেভাবে মুরাবাহা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না। করলে তা সুদ হবে।
,
আমাদের জানা মতে বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখা ভাল। 

আরো জানুনঃ  

এক্ষেত্রে যদি কেউ টাকা জমানোর উদ্দেশ্যে ইসলামী ব্যাংক অথবা অন্য কোনো ব্যাংক গুলোতে ৫-১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস করে নেয়,তাহলে সে মেয়াদ শেষে মুল টাকা সহ মুনাফা উত্তোলন করবে।
এক্ষেত্রে মূল টাকা বাদ দিয়ে মুনাফা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (686,800 points)
আমাদের সামনে যে নুসখাটি আছে এটা যার হাতে লেখা মানে কাতেব সম্পর্কে জানতে পারিনি।
চেষ্টা করছি,,,

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...