আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
প্রেগনেন্ট অবস্থায় মৃত মানুষ দেখতে গেলে কি বাচ্চা কিংবা মায়ের উপর কোনো প্রভাব পড়ে??? খুব কাছের মানুষ মারা গেছেন এখন বলছে এই অবস্থায় উনাকে দেখতে না যেতে ,কিন্তু উনি সম্পর্কে আমার মাহরাম তাই যাওয়া কিংবা উনাকে দেখা জায়েজ ,কিন্তু অনেকে বলছেন মৃত মানুষ দেখা উচিত না এই সময় !! কি করবো

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ
শরিয়তের নির্দেশনা হলো, অনতিবিলম্বে মৃতের কাফন-দাফন-জানাজার বন্দোবস্ত করা। বিশেষ কারণ ব্যতীত বিলম্ব করা বিধি সম্মত নয়। কাফন-দাফনে বিলম্ব না হওয়ার শর্তে জানাজার পূর্বে মৃতের চেহারা দেখা জায়েজ বটে; তবে জানাজার পর মৃতের চেহারা না দেখাই বরং উত্তম। অনেক সময় জানাজার পর মৃতের চেহারায় পরিবর্তনও চলে আসে। এতে এক মুসলমানের দোষ প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ، فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُوْنَهَا إِلَيْهِ، وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ فَشَرٌّ تَضَعُوْنَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ
অর্থ: তোমরা দ্রুত জানাজার নামাজ পড়ে লাশ দাফন কর। কেননা যদি মৃত ব্যক্তি পুণ্যবান হয়, তবে তোমরা ‘ভাল’-কে দ্রুত কবরে সমর্পণ কর। আর যদি অন্যরূপ হয়, তাহ’লে ‘মন্দ’-কে দ্রুত তোমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দাও। (বুখারি ১৩১৫) (আবু দাউদ ১/১৫৮)
وقال في الہندیة: ویبادر إلی تجہیزہ ولا یوٴخر
অর্থ: জানাজায় বিলম্ব নয়; দ্রুত করা বিধেয়। (ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৫৭)
سألتُ یوسف بن محمد عمن یرفع الستر عن وجہ المیت لیراہ، قال: لا بأس بہ
ইউসুফ বিন মুহাম্মদ রাহ. কে মৃতের চোহারা দেখার ব্যাপারে জিগ্যেস করা হলে তিনি বলেন, মৃতের চেহারা দেখাতে কোন অসুবিধা নেই। (ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া,৩/৭৮)
★★জাদু-টোনা, জিন-শয়তান ও বদনজরসহ যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার ইসলামি উপায় রয়েছে। এসব থেকে আত্মরক্ষার জন্য সকাল-সন্ধ্যা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে এবং ঘুমের আগে হাদিসে বর্ণিত দোয়া ও জিকিরের আমল করা। তাহলো-
১. সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার পড়া এবং আয়াতুল কুরসি একবার পড়া।
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর উক্ত তিনটি সুরার পাশাপাশি আয়াতুল কুরসি একবার পড়া।
৩. রাতে ঘুমের আগে উক্ত তিন সুরা পড়ে দুই হাত একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিয়ে মাথা থেকে শরীরের যতটুকু পৌঁছানো সম্ভব তাতে তিনবার মাসেহ করা। সঙ্গে আয়াতুল কুরসিও পড়া।
৪. কোনো কারণে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে- ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ’ বলে ঘরতে বের হওয়া। এবং নির্ধারিত গন্তব্যে পৌছলে এ দোয়া পড়া-
أَعُوذُ بِكلِمَاتِ الله التّامّاتِ مِن شَرّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজুবি কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খলাকা।
অর্থ : ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার ওসিলায় তিনি যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর অনিষ্টা থেকে তাঁর কাছেই আমি আশ্রয় চাই।’
হজরত খাওলাহ বিনতে হাকিম রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনও স্থানে পৌঁছে পাঠ করে-
أَعُوذُ بِكلِمَاتِ الله التّامّاتِ مِن شَرّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজুবি কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খলাকা।
(এতে) কোনো কিছুই তার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না; যতক্ষণ না সে ওই স্থান থেকে (অন্য কোথাও) চলে যায়।’ (মুসলিম)
ইসলাম মানুষকে এমন সুন্দর জীবন ব্যবস্থা দিয়েছে যে, দুনিয়ার প্রতি কাজে কাজে, প্রতিটি পদক্ষেপে  অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ দিয়েছেন। যার ফলে বান্দা অনেক বিপদ-আপদ এমনকি কুসংস্কার থেকেও মুক্তি পায়।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের সব গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর উচিত, নিজের ও নিজের গর্ভের কিংবা শিশু সন্তানের অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাকতে সব সময় মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনে চলা।
এমনকি বাহির থেকে বাড়িতে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়া, ঘরে প্রবেশের সময় দোয়া ও বিসমিললাহ বলে প্রবেশ করা।, টয়েলেটে যাওয়ার সময় যেমন দোয়া পড়ে যাওয়া; তেমনি টয়লেট থেকে বে হয়েও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। খাবারের সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা, স্ত্রী সহবাসের আগে দোয়া পড়া। সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ও সুরা তাওবার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করা। বেশি বেশি তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। যা সব মানুষকেই জিন-শয়তানের অনিষ্টতা, জাদু-টোনা থেকে রক্ষা করবে। ইনশাআল্লাহ।
 
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/ বোন!
  যদি পূর্ণাঙ্গ পর্দার সাথে স্বাস্থগত ঝুঁকিমুক্ত থেকে আপনি আপনার সেই মৃত মাহরাম কে দেখতে যান তাহলে কোন গুনাহ হবে না। তবে সাধারণত এসমস্ত স্থানে মানুষের অধিক সমাগম ঘটে এবং কখনো আবার বদ নজরেরও আশংকা থাকে এবং পর্দার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু ত্রুটি বা শিথিলতা চোখে পড়ে, বিধায় এমতবস্থায় না যাওয়াই উত্তম। কিন্তু গেলে গুনাহ হবে না। 
  উল্লেখ্য যে, গর্ভাবস্থায় উপরে উল্লিখিত আমলগুলি করার চেষ্টা করুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...